খানজাহান আলীর মাজারে ৫৫০ বছরের ঐতিহ্যবাহী মেলা শুরু

ছবি: সংগৃহীত

বাগেরহাটে হজরত খানজাহান আলী (রহ.)-এর মাজারে শুরু হয়েছে ৩ দিনব্যাপী ৫৫০ বছরের ঐতিহ্যবাহী মেলা। 

আজ বৃহস্পতিবার ফজরের নামাজের পর আনুষ্ঠানিকভাবে মেলা শুরু হয়। শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত চলবে এ মেলা।

মাজারের প্রধান খাদেম ফকির শের আলী দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, বাংলা চৈত্র মাসের পূর্ণিমা তিথিতে প্রতিবছর এ মেলার আয়োজন করা হয়। 

ছবি: সংগৃহীত

ঐতিহ্যবাহী এ মেলায় এ বছর দেশ-বিদেশ থেকে আসা ১ লাখেরও বেশি ভক্ত ও দর্শনার্থীর সমাগম ঘটবে বলে তিনি আশা করেন।

এরই মধ্যে মাজার ও মাজার সংলগ্ন এলাকায় প্রচুর মানুষের সমাগম হয়েছে। অনেকে সৃষ্টিকর্তার আরাধনা করতে, অনেকে তাদের মনের ইচ্ছা পূরণের আশায় এসেছেন। শুধু মুসলমান নয়, অন্যান্য ধর্মের অনুসারীরাও এসেছেন এখানে। 

মেলা উপলক্ষে অনেক দোকানি বিভিন্ন পণ্যের স্টল বসিয়েছেন। মেলায় আসা দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশের পাশাপাশি কাজ করছেন স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকরাও।

ট্যুরিস্ট পুলিশের বাগেরহাট জোনের ইনচার্জ মোশাররফ হোসেন জানান, ৩ দিনব্যাপী মেলায় ১ লাখের বেশি লোকের সমাগম হবে। এই ভক্ত ও দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ট্যুরিস্ট পুলিশ সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছে। 

ছবি: সংগৃহীত

তিনি বলেন, 'আমরা আমাদের ইউনিটের ফোন নম্বর দেয়ালে এবং পাবলিক প্লেসে ঝুলিয়ে রেখেছি। ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও আমাদের নম্বর রয়েছে, কোনো সমস্যায় কেউ ফোন করলে আমাদের পুলিশ সদস্যরা সেখানে পৌঁছবেন।' মেলার ৩ দিন সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবেন বলেও জানান তিনি।

মেলার দর্শনার্থী গোপালগঞ্জের মো. জাহিদুল শেখ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা সপরিবারে মেলা উপলক্ষে খানজাহান (রহ.)-এর মাজার প্রাঙ্গণে এসেছি, ৩ দিন থাকব। আমাদেরও মানত ছিল, পূরণ করেছি।'

যশোরের তারিকুল মোল্লা বলেন, 'প্রতিবছরই ঐতিহ্যবাহী এ মেলা দেখতে আসি। মেলাটি মানুষের কাছে খুবই জনপ্রিয়। করোনা পরিস্থিতির কারণে গত ২ বছর ধরে মেলা হয়নি, এবার হচ্ছে তাই ভালো লাগছে।'

দর্শনার্থী রবীন দাস দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রায় ২৫ বছর ধরে মেলায় আসছি। প্রতিবছর আমরা রোগ ও বিপদ থেকে মুক্তির জন্য মানত করি। আমার এবারও একটা মানত ছিল; আমি এসে দিয়ে দিয়েছি।'

ছবি: সংগৃহীত

মাজারের প্রধান খাদেম ফকির শের আলী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রায় ৫৫০ বছর ধরে প্রতিবছর খানজাহানের মাজারে মেলা বসে। চৈত্র মাসের পূর্ণিমা তিথিতে মেলা বসে। আজ সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে মেলা শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে ৫০ হাজারের বেশি মানুষের সমাগম হয়েছে। আমরা সবাই চেষ্টা করছি যাতে দর্শনার্থীরা এখানে শান্তিপূর্ণভাবে মেলা উদযাপন করতে পারে।'

তিনি আরও বলেন, 'পূর্বপুরুষদের কাছে যতটুকু শুনেছি, ৫৫০ বছর ধরে এখানে মেলা হয়ে আসছে। খানজাহানের মৃত্যু বা জন্মদিনে এই মেলা হয় না। অতীতে চৈত্র মাসের পূর্ণিমা তিথিতে এখানে ভক্তদের সমাগম হতো। যা ধীরে ধীরে মেলায় রূপ নিয়েছে।'

 

Comments

The Daily Star  | English

US lowers Bangladesh tariff to 35% from 37%

Failure to secure a more favourable bilateral agreement by Aug 1 deadline would be a significant blow to the country's export-oriented economy

7h ago