ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে বার্ধক্যজনিত কারণে সিংহের মৃত্যু
কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলায় ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে একটি সিংহের মৃত্যু হয়েছে। পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাজহারুল ইসলাম আজ বৃহস্পতিবার দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, বুধবার পার্কের কর্মীরা বেষ্টনীর ভিতরে ওই সিংহটিকে মৃত অবস্থায় দেখতে পায়।
সিংহটি ৩-৪ বছর ধরে বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিল বলে জানান তিনি।
মাজহারুল ইসলাম বলেন, 'পার্কে সিংহ ছিল মোট ৫টি। এর মধ্যে ৩টি পুরুষ ও ২টি স্ত্রী। বুধবার বিকেলে পার্কের বেষ্টনীর দায়িত্বে থাকা কর্মী সাইফুল ইসলাম এশিয়াটিক প্রজাতির সিংহের বেষ্টনীতে যান। সেখানে সিংহ সোহেলকে তিনি মৃত অবস্থায় দেখতে পান।'
তিনি জানান, ২০০৪ সালের ২৯ আগস্ট ঢাকার মিরপুর বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানা থেকে সিংহটিকে এ সাফারি পার্কে আনা হয়। তখন সিংহটির বয়স ছিল ৪ বছর।
পুরুষ সিংহ সোহেল দীর্ঘদিন ধরে সাফারি পার্কে বংশবিস্তারে মূল ভূমিকা পালন করে আসছিল বলে জানান পার্ক কর্মকর্তা মাজহারুল।
সিংহটি মারা যাওয়ায় পার্কে বর্তমানে ৪টি সিংহ রইল। এগুলো সিংহ সোহেলের বংশধর।
মো. মাজহারুল ইসলাম জানান, স্বাভাবিক অবস্থায় একটি সিংহ ১৫ থেকে ১৮ বছর বাঁচে। মৃত সিংহ সোহেলের বয়স হয়েছিল ২২ বছর।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার নেতৃত্বে সিংহের ময়নাতদন্তের পর পার্কের ভেতরে মরদেহ মাটিচাপা দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে চকরিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
বুধবার সন্ধ্যায় সিংহটির ময়নাতদন্ত করেন চকরিয়া উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. সুপন নন্দী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি চিকিৎসক হাতেম সাজ্জাত মো. জুলকার নাইন।
তারা সাংবাদিকদের বলেন, ময়নাতদন্তে বার্ধক্যজনিত কারণে সিংহটি মারা গেছে বলে প্রাথমিকভাবে উঠে এসেছে। ২০১৮ সাল থেকে সিংহটি বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিল।
তারা জানান, সিংহের চোয়াল সম্পূর্ণ ক্ষয়ে যাওয়ায় শক্ত কোনো খাবার ও গরুর মাংস খেতে পারত না। এ ছাড়া পুরুষ সিংহটির মেরুদণ্ড বাঁকা হয়ে গিয়েছিল। পায়ের নখ উঠে গেছে ও চামড়ায় ভাঁজ পড়েছিল। এ ছাড়া ওজন ও চোখের দৃষ্টিশক্তি কমে গিয়েছিল। গত মাসেও সিংহটির চিকিৎসা করা হয়।
ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক সূত্র জানায়, পার্কের এই পুরুষ সিংহের বার্ধক্যের বিষয়ে গত বছরের ২৫ জুলাই চিঠি দিয়ে চট্টগ্রাম বিভাগীয় বন কর্মকর্তার মাধ্যমে বন বিভাগের বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগকে জানানো হয়েছিল।
একই চিঠিতে সিংহের চিকিৎসা ও অ্যানিমেল হিস্ট্রিও পাঠানো হয়েছিল।
এর আগে ২০১৮ সালে ও ২০১৯ সালে বয়স্ক সিংহের বার্ধক্যজনিত সমস্যা বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়।
Comments