ভ্যালেন্টাইনস ডে’তে দেখার মতো ১০টি চলচ্চিত্র

'এক্স্যাক্টলি কেমন করে প্রেম হয়, আমার জানা নেই'; 'বাকিটা ব্যক্তিগত' চলচ্চিত্রে প্রধান চরিত্র, যাকে আমরা নায়ক বলে ডাকতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি, তার মুখে এ ধরনের কথা শুনে একটু থমকে দাঁড়াতে হয় বৈকি। সিনেমা যখন থেকে নিজের যাত্রা শুরু করেছে, বিষয়বস্তু হিসেবে ভালোবাসা তার সবচাইতে বড় সঙ্গী হিসেবে সবসময় পাশে থেকেছে। সেখানে দাঁড়িয়ে নায়ক প্রেম করতে জানবে না, দর্শক মন তা মেনে নিতে ঠিক সায় দেয় না। বড়পর্দায় যদি প্রেমই না রইল, তবে রইল কী? 

তবে প্রেমেরও রকমফের হয়, গল্পের নানা শাখা-প্রশাখা থাকে, ভিন্নতা দেখা যায় প্রতিটি মানুষের ব্যক্তিসত্তায়। সেসব কথা মাথায় রেখে সিনেমাও নিজের পথকে বৈচিত্র্যপূর্ণ করে চলেছে। যুগ যুগ ধরে চলমান এই প্রক্রিয়ার ফল হিসেবে সৃষ্ট ১০টি চলচ্চিত্র নিয়ে আজকের এই আয়োজন। প্রেম দিয়ে দর্শকদের মনে পাকাপোক্ত জায়গা করে নেওয়া এই চলচ্চিত্রগুলো প্রেম নিয়েই আমাদের নতুন করে ভাবায়, বুঝতে শেখায়, উদযাপন করতে শেখায়।  

১. আসা যাওয়ার মাঝে

যদি একটি সিনেমায় কোনো সংলাপই না থাকে, তাও আবার প্রেমের সিনেমায়, তবে সেটি তার গ্রহণযোগ্যতা কতটুকু হারায়? নাকি একদমই হারায় না? নির্বাক যুগের কোনো চলচ্চিত্র নয়, কথা হচ্ছে ২০১৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত আদিত্য বিক্রম সেনগুপ্তের 'আসা যাওয়ার মাঝে' নিয়ে। সংলাপ ছাড়াও যে চমৎকার একটি গল্প বলা সম্ভব, তাতে প্রেম যোগ করা সম্ভব, আমাদের নিত্যকার জীবনের ছবি আঁকা সম্ভব, সেটি এই সিনেমা করে দেখিয়েছে।

এক দম্পতি, স্বামী রাতে কাজ করেন, স্ত্রী দিনে। তাদের মধ্যে খুব একটা দেখা-সাক্ষাৎ হয় না। তবে যখন হয়, সেই মুহূর্তটি মায়াময় উৎকণ্ঠার। নিত্য সংগ্রামের জীবনে ততটুকুই তাদের পাওনা। সিনেমাটি সম্পর্কে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, 'সেই সময়, আমরা যখন কাজ শুরু করেছিলাম, তখন যেভাবে সিনেমা তৈরি হতো, সত্যজিত-ঋত্বিক-মৃণালরা একদম রাস্তায় নেমে বাঙালির নাড়ির স্পন্দনগুলো ধরতেন, এই ছবিটা সেইরকমভাবে তৈরি করেছেন বিক্রম আদিত্য সেনগুপ্ত। প্রত্যেকেটা দৃশ্য এত এত বেশি স্পর্শকাতর যে, দেখতে গেলে সত্যিই চোখে জল এসে যায়।'

অভিনয়ে: ঋত্বিক চক্রবর্তী, বাসবদত্তা চট্টোপাধ্যায়।

২. অ্যানি হল

ইতোমধ্যে ভেঙে গেছে, এমন এক সম্পর্কের গল্প নিয়ে চলচ্চিত্রটি শুরু হয়। দেখা যায় কমেডিয়ান অ্যালভি সিংগার ফ্লাশব্যাকে অ্যানি হলের সঙ্গে তার প্রথম সাক্ষাৎ এবং তাদের সম্পর্কের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলো সম্পর্কে দর্শকদের জানাচ্ছে। বাদ যাচ্ছে না অন্যান্য নারীর সঙ্গে জড়িত তার পূর্ববর্তী সম্পর্কগুলোও। দুটি মানুষের মধ্যকার সম্পর্ক, সম্পর্কের পুনর্মূল্যায়ন এবং সেটির প্রতি দৃষ্টিভঙ্গিই সিনেমাটির প্রতিপাদ্য। প্রথাগত স্টাইলের বাইরে গিয়ে গল্প বলার ঢঙে চলচ্চিত্রটি মুন্সীয়ানা দেখিয়েছে।

সেমি বায়োগ্রাফি ঘরানার এই সিনেমাটি রোমান্সের পাশাপাশি কমেডির জন্যও সমভাবে জনপ্রিয়। বিশেষ করে এর প্যারোডি এবং তৎকালীন পপ কালচারের ছোঁয়া একে অনন্য উচ্চতা দান করেছে। ১৯৭৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত উডি অ্যালেন পরিচালিত এই ছবিটি অস্কারে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের পুরস্কার পায়।

অভিনয়ে: উডি অ্যালেন, ডায়ান কিটেন।

৩. বিফোর সানরাইজ

রিচার্ড লিংক্লেটার পরিচালিত এই চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায় ১৯৯৫ সালে। বিখ্যাত 'বিফোর' সিনেমা ত্রয়ীর প্রথম কিস্তি এটি। ভিয়েনাগামী এক ট্রেনে সাক্ষাৎ হয় জেসে এবং সেলিনের। জেসে ভিয়েনা থেকে আমেরিকার ফ্লাইট ধরবে, অন্যদিকে সেলিন যাচ্ছে প্যারিস, নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ে। পরদিন জেসের ফ্লাইট পর্যন্ত তারা একত্রে সময় কাটানোর সিদ্ধান্ত নেয়।   

কথোপকথনধর্মী এই চলচ্চিত্রে আমরা দেখতে পাই দুজন আগন্তুকের প্রেম, জীবন, ধর্ম, শহর ভিয়েনা প্রভূত বিষয় নিয়ে স্বচ্ছ এবং নির্মোহ আলোচনা। নিজের গল্প বলার মধ্য দিয়ে, নিজের চিন্তার প্রকাশ ঘটিয়ে তারা একে অপরকে বোঝবার চেষ্টা করে। প্রেম এই চলচ্চিত্রে ভীষণ সূক্ষ্ম হয়ে দর্শকদের মাঝে ধরা দেয়। প্রেম এখানে মোড়ানো থাকে দর্শন এবং দৃষ্টিভঙ্গির মোড়কে। সিনেমাটির শেষে পাত্র-পাত্রী যোগাযোগের ঠিকানা বিনিময় করে না বরং তারা ঠিক করে ৬ মাস পর ঠিক এখানেই তারা আবারও মিলিত হবে।

অভিনয়ে: ইথান হক, জুলি দেলপি।

 ৪. বাকিটা ব্যক্তিগত

ঠিক কোথায় গেলে বা কী করলে পরে ভালোবাসার খোঁজ মেলে? সদুত্তর নেই কারও কাছে। ডকুমেন্টারি ফিল্ম-মেকার প্রমিত তাই নিজেই বেরিয়ে পড়ে প্রেমের সন্ধানে। অন্বেষণে খোঁজ মেলে মোহিনী নামে এক গ্রামের। সেখানে গেলেই নাকি মানুষ প্রেমে পড়ে যায়। প্রমিতও তাই প্রেমের আশায় দেরি না করে ক্যামেরাম্যান অমিতের সঙ্গে রওয়ানা দেয় সেই গ্রামের উদ্দেশে।  

বাংলার লোকগানগুলোতে প্রেমের যে অসাধারণ সব বর্ণনা রয়েছে, তার চমৎকার ব্যবহার সিনেমাটিতে দেখিয়েছেন পরিচালক প্রদীপ্ত ভট্টাচার্য্য। প্রেম এখানে শাশ্বত, সার্বজনীন, সকলের মাঝে বহমান। একটি দৃশ্যে একজন তাই জিজ্ঞেস করেন, 'প্রেম ছাড়া কি মানুষ বাঁচে?' এটি ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের ৬১তম আসরে শ্রেষ্ঠ বাংলা ভাষার পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র বিভাগে পুরস্কার লাভ করে।

অভিনয়ে: ঋত্বিক চক্রবর্তী, অমিত সাহা, অপরাজিতা ঘোষ।

 ৫. ইটারনাল সানশাইন অফ দ্য স্পটলেস মাইন্ড

প্রেমিকা তার স্মৃতি মস্তিষ্ক থেকে মুছে ফেলায় ক্ষোভে-দুঃখে জোয়েলও একই সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু ঘুমন্ত অবস্থায় যখন একে একে ক্লেমেন্টিনের সব স্মৃতি মুছে ফেলা হচ্ছে, তখন জোয়েল বুঝতে পারে সে আসলে চায় না তার স্মৃতি থেকে ক্লেমেনটিন মুছে যাক।

স্মৃতি আমাদের জীবনে অবিচ্ছেদ্য এক অনুষঙ্গ। তা সে ইতিবাচকই হোক বা নেতিবাচক। স্মৃতি এবং তা থেকে প্রাপ্ত অভিজ্ঞতাই একজন মানুষকে তৈরি করে। কোন কিছুর শেখার ক্ষেত্রে, ভুল শোধরানোর ক্ষেত্রে বা মানসিক পরিপক্বতার ক্ষেত্রে স্মৃতি অপরিহার্য। সিনেমাটিতে স্মৃতি মুছে ফেলবার পর দুজনের কেউই কিন্তু ভালো নেই। বরং মানবীয় আবেগের যে সহজাত প্রবৃত্তিতে তারা একে অপরের কাছে এসেছিল, সেটিই আবার মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। স্পটলেস মাইন্ড কিন্তু ইটারনাল সানশাইন নিশ্চিত করতে পারে না। মাইকেল গন্ড্রি পরিচালিত অসাধারণ এই চলচ্চিত্রটির শিরোনাম নেওয়া হয়েছে আলেক্সেন্দার পোপের কবিতা Eloisa to Abelard থেকে।

অভিনয়ে: জিম ক্যারি, কেট উইন্সলেট, মার্ক রাফেলো।

৬. ফলেন অ্যাঞ্জেলস

আর পাঁচটি রোমান্টিক সিনেমার সঙ্গে এর কোনো মিল খুঁজে পাওয়া যাবে না, আবার সিনেমাটি দেখা শেষে রোমান্টিক মুভি ছাড়া অন্য কোন ছকে একে ফেলাও মুশকিল। ওয়াং কার-ওয়াই পরিচালিত হংকংয়ের এই সিনেমাটি মুক্তি পায় ১৯৯৫ সালে। একটি হিটম্যান এবং তার 'পার্টনারের' (যে তাকে খুনের কন্ট্রাক্ট দেয়) মধ্যকার অদ্ভুত এক সম্পর্ক গল্পটিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। হিটম্যানের সঙ্গে পার্টনারের কখনো দেখা হয়নি, তবুও পার্টনার তার প্রতি আকর্ষণ বোধ করে, তাকে না পাওয়ার আক্ষেপে পোড়ে। দেখতে পাই হো চি-মো নামের পাগলাটে এক যুবককে চার্লি নামের এক মেয়ের প্রেমে পড়তে। প্রতি রাতে চার্লিকে হো চি-মোয়ের কাঁধে মাথা রেখে কাঁদতে দেখা যায়। শেষপর্যন্ত চার্লিও একদিন হো চি-মোকে ভুলে যায়।

সিনেমা অ্যাসথেটিকসের বিচারে অত্যন্ত উঁচুমানের এই ছবিটি প্রেম সম্পর্কে গভীর দর্শনের রাস্তায় না হেঁটে স্টাইলিশ পন্থায় নাগরিক জীবন এবং তার মধ্যকার প্রেম, আক্ষেপ, অনুভূতিগুলো রূপালী পর্দায় তুলে ধরে।  

অভিনয়ে: তাকেশি কানেশিরো, মিশেল রেইস, লিওন লাই

৭. হার

দীর্ঘ এক সম্পর্কের অবসানে ব্যথিত থিওডর টোয়াম্বলি একটি অপারেটিং সিস্টেমের সংস্পর্শে আসে। ব্যক্তিভেদে সিস্টেমটি তার কার্যক্রম পরিচালনা করতে সক্ষম। এখানে থিওডরের পরিচয় হয় সামান্থার সঙ্গে- বুদ্ধিমতী, জ্ঞানী, অনুভূতিপ্রবণ, মজার এক সহকারী যা মূলত আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলেজিন্সের নারী কণ্ঠ। ধীরে ধীরে থিওডর ও সামান্থার বন্ধুত্ব প্রেমের দিকে অগ্রসর হয়।

প্রেমের একটি বৈশিষ্ট্য বোধহয় এটি যে একে নির্দিষ্ট কোনো ছকে ফেলা যায় না। থিওডরের ক্ষেত্রেও তেমনটিই ঘটেছে। সিনেমাটি মনুষ্য জীবনে একাকীত্ব এবং তা থেকে মুক্তি পাওয়ার আকুলতার বিষয়টিও তুলে এনেছে। জোকারখ্যাত জোয়াকিন ফিনিক্সের অনবদ্য অভিনয়ে ছবিটি মুক্তি পায় ২০১৩ সালে; পরিচালনার দায়িত্ব ছিলেন স্পাইক জোনজে।  

অভিনয়ে: হোয়াকিন ফিনিক্স, স্কারলেট জোহানসন

৮. মিডনাইট ইন প্যারিস

আরেকটি উডি অ্যালেন চলচ্চিত্র। বাগদত্তা এবং তার পরিবারের সঙ্গে প্যারিসে ছুটি কাটাতে আসেন লেখক গিল পেনডার। এখানে এসে অনেকের সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হয়, ঘটতে থাকে অদ্ভুত সব ঘটনা- যার সবকিছু ব্যাখ্যা করাও মুশকিল।

বলা হয়ে থাকে চলচ্চিত্রটি মূলত 'নস্টালজিয়া' এবং 'এস্কেপিজমের' ওপর দাঁড়িয়ে। বর্তমানের সঙ্গে মানিয়ে নিতে খাবি খেলেই মানুষ অতীতের নস্টালজিয়ায় ভোগে। বর্তমানকে এড়াতেই মানুষ অতীতে যেতে চায়। আমরা তাই গিলের টাইম ট্র্যাভেলের বিষয়টি লক্ষ করি। এই দুইটি বিষয় মাথায় রেখে প্রেমের প্রশ্নে পরিচালক উডি অ্যালেন একদম নতুন কিছু দৃষ্টিভঙ্গির অবতারণা করেন ২০১১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই সিনেমাটিতে।

অভিনয়ে: ওয়েন উইলসন, র‍্যাচেল ম্যাকঅ্যাডামস, মারিওন কোটিয়াড।

৯. দ্য লাঞ্চবক্স

লাঞ্চবক্সের অদলবদলে গৃহবধূ ইলা সিংয়ের সঙ্গে পরিচয় হয় প্রৌঢ় বিপত্নীক সাজান ফার্নান্দেজের। স্বামীর ভালোবাসা বঞ্চিত ইলা চিঠির মাধ্যমে সাজানের সঙ্গে এক অদ্ভুত সম্পর্ক গড়ে তোলেন। সামনাসামনি তাদের দেখা করার কথা থাকলেও সাজান নিজের বয়স এবং সেটি ইলার সঙ্গে কতটা বেমানান তা চিন্তা করে ইলাকে নিজের মতো এগিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।   

বিয়ে যে সবসময় সকলের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবে, তেমনটা নাও হতে পারে। উপমহাদেশে বিয়েকে প্রেমের শেষ গন্তব্য বিবেচনা করা হলেও অসুখী বিয়ের সংখ্যা এ অঞ্চলে কম নয়। সেইসঙ্গে, মানুষের আকাঙ্ক্ষা এবং প্রেমে মানুষের চাহিদার সঙ্গে প্রত্যাশার যে বড় একটা ফারাক থাকে তাও পরিচালক রিতেশ বাত্রা এই সিনেমায় দেখিয়েছেন।

অভিনয়ে: ইরফান খান, নিমরাত কৌর, নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকী

১০. ফাইভ হান্ড্রেড ডেইজ অব সামার

কাহিনি এবং কাঠামো বিবেচনায় অ্যানি হলের সঙ্গে সিনেমাটির বহু মিল রয়েছে। টমের সঙ্গে সামারের পরিচয়ের ৫০০ দিন নিয়ে এই সিনেমার গল্প। সিনেমার শুরুতে আমরা তাদের ভাঙনের কথা জানতে পারি। পরে টমের ফ্লাশব্যাকে তাদের প্রথম সাক্ষাৎ এবং সম্পর্কের নানা মোড় সম্পর্কেও জানা যায়।

টমকে পুরো চলচ্চিত্রজুড়েই সামারের বিরহে অত্যন্ত মনমরা পরিলক্ষিত হয়। কিন্তু সিনেমাটার মজেজা বোধহয় এই বার্তাটাই যে, নিজের ভালো থাকার জন্য অন্যের ওপর নির্ভর করতে নেই। প্রেম থেকে প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির হিসেবে টমকে পিষ্ট হতে দেখা যায়। তবে আদৌ কি তা যৌক্তিক? ২০০৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমাটিতে এসকল উত্তরই খোঁজার চেষ্টা করেছেন পরিচালক মার্ক ওয়েব।  

অভিনয়ে: জোসেফ গর্ডন-লেভিট, জোয়ি ডেশানেল।

 

Comments

The Daily Star  | English

10 die of dengue

886 hospitalised in the last 24 hours

1h ago