উচ্ছেদের পরদিনই দখল ফুটপাত
গতকাল সোমবার দিনব্যাপী সাভার বাজার বাস-স্ট্যান্ড এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের উভয়পাশে ফুটপাত দখল করে গড়ে প্রায় দেড় হাজার অবৈধ টং দোকান উচ্ছেদ করেছে সাভার হাইওয়ে পুলিশ।
তবে উচ্ছেদ অভিযানের এক দিনের মধ্যেই আজ মঙ্গলবার দোকানগুলো আবারও ফুটপাথ দখল করে স্থাপন করা হয়েছে।
হকারদের দাবি, সাভার বাজার বাস-স্ট্যান্ড এলাকায় মহাসড়কের উভয় পাশে প্রায় দেড় হাজার টং দোকান রয়েছে। গতকাল সোমবার কোনো পূর্ব ঘোষিত নোটিশ ছাড়াই সাভার হাইওয়ে থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে দোকানগুলো উচ্ছেদ করেন। তারপর সন্ধ্যায় পুলিশের উচ্ছেদ অভিযানের প্রতিবাদে ও হকারদের পুনর্বাসনের দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তারা। পরে ঢাকা-১৯ আসনের সাংসদ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান ও পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে হকারদের পুনর্বাসনের আশ্বাস দিলে তারা অবরোধ তুলে নেন।
হকারদের সড়ক অবরোধে নের্তৃত্ব দেওয়া সাভার উপজেলা হকার্সলীগের সাধারন সম্পাদক কবির মোল্লা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'করোনার কারণে অনেকেই চাকরি হারিয়ে ফুটপাতে দোকান দিয়ে কোনোমতে তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে জীবনযাপন করছেন। গতকাল পুলিশ কোনো ধরনের নোটিশ ছাড়াই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে প্রায় দেড় হাজার হকারকে উচ্ছেদ করে। হকাররা উচ্ছেদ অভিযানের প্রতিবাদে ও তাদের পুনর্বাসনের দাবিতে সন্ধ্যায় মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে।'
কবির মোল্লা বলেন, 'আজ সকালে বিষয়টি নিয়ে সাভার হাইওয়ে থানার ওসি সাহেবের সঙ্গে বসা হয়েছিল। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে যতদিন পর্য়ন্ত হকারদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না হয় ততদিন নিয়ম মেনে দোকান পরিচালনা করতে হবে যেন দোকানের কারণে পথচারী ও পরিবহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি না হয়।'
পুলিশের অনুমতি ও নির্দেশনা অনুযায়ী পুনরায় দোকান বসানো হয়েছে দাবি করেন কবির মোল্লা।
তবে এমন দাবি ভিত্তিহীন উল্লেখ করে সাভার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিকুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গতকাল উচ্ছেদ অভিযানের পর পুনর্বাসনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করেছিলেন। পরবর্তিতে আমরা ঘটনাস্থালে পৌঁছে তাদের পুনর্বাসনের উদ্যেগ গ্রহণ করা হবে বলে আশ্বাস দিলে তারা সড়ক অবরোধ তুলে নেন এবং যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।'
হকারদের পুনরায় সড়কে দোকান স্থাপনের কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি এবং প্রয়োজনে আবারও উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে বলেন ওসি আতিকুর রহমান।
তিনি আরও বলেন, হাইওয়ে পুলিশের পক্ষে তো প্রতিদিনই অভিযান পরিচালনা করা সম্ভব না। বিশাল এলাকা সামলাতে হয়। যদি তারা পুনরায় ফুটপাত দখল করে তাহলে আগামী ৪/৫ দিনের মধ্যে আবারও অভিযান পরিচালনা করা হবে।
প্রতি দোকান থেকে মাসিক ৭ থেকে ৯ হাজার টাকা ভাড়া আদায়
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক হকার দাবি করেন, তাদের দোকান প্রতি ৭ থেকে ৯ হাজার টাকা মাসিক ভাড়া দিতে হয়। সংগঠনের নেতারা এই টাকা আদায় করেন। কিন্তু তারা তারা কোনো নেতার নাম প্রকাশ করেননি।
ফুটপাতের দোকান থেকে মাসিক ভাড়া আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে সাভার উপজেলা হকার্স লীগের সাধারণ সম্পাদক কবির মোল্লা বলেন, 'সংগঠনের ব্যানারে কোনো প্রকার ভাড়া বা চাঁদা আদায় করা হয়না। আমি নিজেই সাম্প্রতিক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ও বিভিন্ন দপ্তরে ফূটপাতে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছি। অভিযোগটি তদন্ত চলছে।'
কারা ফুটপাতে চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত কারা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'মহাসড়কের পাশে মার্কেটের মালিকরা এসব দোকান থেকে চাঁদা আদায় করেন।'
Comments