বেনাপোল বন্দরের রাজস্ব প্রবৃদ্ধি ২৯.৭৮ শতাংশ
বেনাপোল স্থলবন্দরে গত অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরে প্রথম ৭ মাসে রাজস্ব প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৯.৭৮ শতাংশ। ২০২০-২১ অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল ১৯.৪৮ শতাংশ।
বেনাপোল স্থলবন্দরের কাস্টমস কমিশনার মো. আজিজুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা এবং জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত রাজস্ব আদায় হয়েছে ২৪৩৬.৬৯ কোটি টাকা। যার প্রবৃদ্ধি ২১০.৯৩ কোটি টাকা এবং গত অর্থবছরে ছিল ২২২৫.৭৬ কোট টাকা।
তিনি আরও জানান, এরমধ্যে শুধু জানুয়ারি মাসেই রাজস্ব আদায় হয়েছে ৪৪৬.২৬ কোটি টাকা। যার প্রবৃদ্ধি ১০২.০৪ কোট টাকা। গত অর্থবছরে যা ছিল ৩৪৩.৮৬ কোটি টাকা। কিন্তু, চলতি অর্থ বছরের আগস্ট-অক্টোবর এই ৩ মাস বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ৩০০ ট্রাক সোয়াবিন এক্সট্রাক্ট ভারতে রপ্তানি হওয়ায় আমদানি কমে যায়। ফলে ওই ৩ মাস রাজস্ব আদায়ে বিরূপ প্রভাব পড়ে। রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রায় পিছিয়ে থাকলেও বছরগুলোর তুলনায় প্রবৃদ্ধিতে এগিয়ে আছে বেনাপোল কাস্টম হাউস।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, বেনাপোল বন্দরে সক্ষমতা বাড়লে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন কঠিন নয়। তবে, বেনাপোল কাস্টমস হাউসে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করায় আমদানিকারকরা অন্য বন্দরে যাচ্ছেন।
বেনাপোল আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল লতিফ অভিযোগ করেন, সিরিয়ালের নামে বেনাপোল বন্দরের ওপারে ভারতের কালিতলা পার্কিংয়ে প্রতিদিন ৬ হাজার পণ্যবোঝাই ট্রাক আটকে রাখা হচ্ছে। প্রতিটি ট্রাক থেকে ২ হাজার টাকা করে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে।
কাস্টম হাউসের যুগ্ম কমিশনার আব্দুর রশিদ মিয়া জানান, বেনাপোল বন্দর ও রেলপথে আমদানি পণ্যের রাজস্ব আদায়, ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন, ডিজিটালি অটোমেশন, চোরাচালান ও শুল্ক ফাঁকি রোধ, নির্ধারিত সময়ে ডেলিভারি না নেওয়া পণ্যের নিলাম, ব্যবহারের উপযোগিতা হারানো কিংবা ক্ষতিকর রাসায়নিক পণ্য ধ্বংস ইত্যাদি ক্ষেত্রে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া মিথ্যা ঘোষণা, জাল জালিয়াতি ও শুল্ক ফাঁকি রোধে অসাধু আমদানিকারক ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে কাস্টম হাউস। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে সাময়িক স্থগিত করা হয়েছে ১৭টি লাইসেন্স এবং চূড়ান্তভাবে বাতিল করা হয়েছে ৩টি।
ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ ডাইরেক্টর মতিয়ার রহমান জানান, ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের কালিতলা পার্কিংয়ে পণ্যবোঝাই ট্রাক দিনের পর দিন আটকে রেখে মোটা অংকের চাঁদা আদায় করা হয়। ফলে, একটি ট্রাকের বাংলাদেশে আসতে সময় লাগছে ২০-২৫ দিন। এতে আমদানিকারকদের মোটা অঙ্কের লোকসান গুনতে হয়। বর্তমানে বেনাপোল বন্দর দিয়ে রেলপথে আমদানি বেড়েছে। উন্নয়ন কাজ শেষে হলে রেলপথে আমদানি আরও বাড়বে।
বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার মো. আজিজুর রহমান জানান, করোনাকালে বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি বাড়লেও উচ্চ শুল্কহারের কারণে পণ্য কম এসেছে। তবে, ব্যবসায়ীদের বৈধ সুবিধা বাড়ানোর পক্ষে কাজ চলছে। সক্ষমতা বাড়ালে এ বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি বাড়িয়ে দ্বিগুণ রাজস্ব আদায় সম্ভব।
Comments