সরকারি চিকিৎসকের বিরুদ্ধে বেসরকারি হাসপাতালে রোগী পাঠানোর অভিযোগ

ছবি: সংগৃহীত

ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা এক রোগীকে দ্রুত অস্ত্রোপচারের প্রয়োজনের কথা বলে বেসরকারি হাসপাতালে পাঠিয়ে ভুল চিকিৎসা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে।

ভুক্তভোগীর স্বামী মান্নান বেপারী গত সোমবার ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক সাইফুর রহমানের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগে মান্নান বেপারি জানান, তার স্ত্রী হাসনা বেগম পেটে ব্যথা অনুভব করায় গত ২২ ডিসেম্বর ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগে গাইনি বিভাগের চিকিৎসককে দেখান। সেই চিকিৎসক রোগীকে সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক উৎপল নাগের কাছে পাঠান। উৎপল নাগ রোগীকে দেখে বলেন, দ্রুত অস্ত্রোপচার না করলে রোগীকে বাঁচানো যাবে না। এই হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করতে অনেক দিন অপেক্ষা করতে হয়।

দ্রুত চিকিৎসার জন্য উৎপল নাগ রোগীকে পুরাতন বাস স্টান্ড এলাকায় পিয়ারলেস প্রাইভেট হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন, একটু পরই তিনি ওই হাসপাতালে যাবেন।

উৎপল নাগের পরামর্শ অনুযায়ী মান্নান বেপারী তার স্ত্রীকে ওই বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করান। সেখানে হাসনা বেগমের অ্যাপেন্ডিক্সে অস্ত্রোপচারের কথা জানান উৎপল নাগ। অস্ত্রোপচার বাবদ তিনি ২৬ হাজার টাকা নেন।

এর চার দিন পর রোগীকে ছাড়পত্র দিয়ে অস্ত্রোপচারের জায়গায় ড্রেসিং করা হয়। এসময় অস্ত্রোপচারের জায়গা থেকে রোগীর মল গড়িয়ে পড়তে শুরু করে।

অভিযোগে আরও বলা হয়, বিষয়টি উৎপল নাগকে জানানোর পর তিনি চিকিৎসার জন্য আরও এক লাখ টাকা লাগবে বলে জানান। এরপর মান্নান ব্যাপারী তার স্ত্রীকে নিয়ে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। তার স্ত্রী এখনো সেখানে চিকিৎসাধীন।

মান্নান বেপারি লিখিত ওই অভিযোগে, 'সঠিক তদন্তের মাধ্যমে অর্থলোভী চিকিৎসক উৎপল নাগের' বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।

অভিযোগের ব্যাপারে উৎপল নাগ সাংবাদিকদের বলেন, 'ওই রোগীকে প্রথমে স্থানীয় পর্যায়ে তুক-তাক, ঝাড়-ফুঁক দেওয়া হয়েছিল। অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে ফরিদপুরে আনা হয়। কিন্তু হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই অ্যাপেন্ডিক্স ফেটে যায়। রোগীর অবস্থা সংগিন হয়ে পড়ায় দ্রুত অস্ত্রোপচার করা হয়।'

তিনি বলেন, অস্ত্রোপচারে কোনো সমস্যা হয়নি। তবে মলবাহী নালির সঙ্গে অ্যাপেন্ডিক্স লেগে থাকলে নালিতে কিছু ছিদ্র তৈরি হয়। তবে এ ছিদ্র কিছু দিনের মধ্যেই জোড়া লেগে যায়। তিনি বলেন, রোগী ভালো আছেন এবং দ্রুত সেরে উঠছেন।

ফরিদপুর মেডিকেল হাসপাতালে তার অস্ত্রোপচার করা সম্ভব ছিল মন্তব্য করে চিকিৎসক উৎপল নাগ বলেন, প্রথমত রোগীর অবস্থা গুরুতর ছিল এবং দ্বিতীয়ত রোগীর পরিবারও দেরি করতে রাজি হচ্ছিল না।

জানতে চাইলে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক সাইফুর রহমান বলেন, গত ২৫ দিন ধরে ওই রোগী ফরিদপুর মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তিনি আরোগ্যের পথে আছেন।

তিনি বলেন, চিকিৎসক উৎপল নাগের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি। এ ব্যাপারে তদন্ত করা হবে।

Comments

The Daily Star  | English
child victims of July uprising Bangladesh

Child victims of July uprising: Of abandoned toys and unlived tomorrows

They were readers of fairy tales, keepers of marbles, chasers of kites across twilight skies. Some still asked to sleep in their mother’s arms. Others, on the cusp of adolescence, had just begun to dream in the language of futures -- of stethoscopes, classrooms, galaxies. They were children, dreamers of careers, cartoons, and cricket.

11h ago