গ্যাটকো দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির হতে হবে না

khaleda zia
খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত

গ্যাটকো দুর্নীতি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে সশরীরে আদালতে হাজির হতে হবে না। আজ রোববার ঢাকার স্পেশাল জজ আদালত-৩ এর বিচারক মুহাম্মদ আলী হোসেন আসামিপক্ষের আবেদন আমলে নিয়ে এ আদেশ দেন।

খালেদা জিয়ার পক্ষে তার আইনজীবী জয়নাল আবেদিন মেসবাহ আদালতে সশরীরে উপস্থিতি মওকুফ চেয়ে আবেদন করেছিলেন।

আবেদনপত্রে উল্লেখ করা হয়, সরকারের নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়া বর্তমানে কারাগারের বাইরে আছেন। তিনি অসুস্থ এবং চলাফেরার করার অবস্থায় নেই।

জয়নাল আবেদিন মেসবাহ এই মামলায় খালেদা জিয়াসহ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন শুনানির পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন করেন। আবেদনপত্রে উল্লেখ করা হয়, মামলা তদন্তকালে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যেসব নথি জব্দ করেছিল, সেগুলো পর্যালোচনা এখনো শেষ হয়নি।

দুর্নীতি দমন কমিশনের কৌঁসুলি মোশাররফ হোসেন কাজল আসামিপক্ষের বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত আগামী ১৩ মার্চ পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করেন।

বিভিন্ন কারণে এ পর্যন্ত গ্যাটকো দুর্নীতি মামলার শুনানি ৩৭ বার মুলতবি হলো। এদিন শুনানিকালে জামিনে মুক্ত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনসহ বিএনপির ৪ নেতা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে খালেদা জিয়ার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার আসামির অনুপস্থিতির অনুমোদন চেয়ে আদালতের আদেশ প্রার্থনা করে আবেদন করেছিলেন।

২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরী ৪ দলীয় জোট সরকারের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া, তার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় এ মামলা করেন। মামলার পরদিন খালেদা জিয়া ও কোকোকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ওই বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর মামলাটি অন্তর্ভুক্ত করা হয় জরুরি ক্ষমতা আইনে। পরের বছর ১৩ মে খালেদা জিয়াসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে এ মামলায় অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়।

মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গ্যাটকোকে ঢাকার কমলাপুর আইসিডি ও চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের কাজ পাইয়ে দিয়ে রাষ্ট্রের ১৪ কোটি ৫৬ লাখ ৩৭ হাজার ৬১৬ টাকার ক্ষতি করেছেন।

মামলার ২৪ আসামির মধ্যে ৫ জন ইতোমধ্যে মারা গেছেন এবং একজনের যুদ্ধাপরাধ মামলায় ফাঁসি কার্যকর হয়। তারা হলেন—সাবেক মন্ত্রী এম সাইফুর রহমান, আব্দুল মান্নান ভূঁইয়া, এম কে আনোয়ার, জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির মতিউর রহমান নিজামী, চট্টগ্রাম বন্দরের প্রধান অর্থ ও হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আহমেদ আবুল কাশেম ও বিএনপি চেয়ারপারসনের ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো।

অন্য আসামিরা হলেন—বিএনপির সাবেক মন্ত্রী এম শামছুল ইসলাম, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, সাবেক মন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (চবক) সাবেক চেয়ারম্যান কমোডোর জুলফিকার আলী, প্রয়াত মন্ত্রী কর্নেল (অব.) আকবর হোসেনের স্ত্রী জাহানারা আকবর, ২ ছেলে ইসমাইল হোসেন সায়মন এবং এ কে এম মুসা কাজল, এহসান ইউসুফ, সাবেক নৌ সচিব জুলফিকার হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (চবক) সাবেক সদস্য এ কে রশিদ উদ্দিন আহমেদ, গ্লোবাল অ্যাগ্রোট্রেড প্রাইভেট লিমিটেডের (গ্যাটকো) পরিচালক শাহজাহান এম হাসিব, গ্যাটকোর পরিচালক সৈয়দ তানভীর আহমেদ ও সৈয়দ গালিব আহমেদ, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান এ এস এম শাহাদত হোসেন, বন্দরের সাবেক পরিচালক (পরিবহন) এ এম সানোয়ার হোসেন এবং বন্দরের সাবেক সদস্য লুৎফুল কবীর।

Comments

The Daily Star  | English
Barishal University protest

As a nation, we are not focused on education

We have had so many reform commissions, but none on education, reflecting our own sense of priority.

11h ago