অস্ট্রেলিয়ায় শিক্ষা ও স্থায়ী বসবাসের সুযোগ
অস্ট্রেলিয়ার অভিবাসনমন্ত্রী অ্যালেক্স হক এক বিবৃতিতে বলেছেন, গত ১৫ ডিসেম্বর অস্ট্রেলিয়ার সীমান্ত খুলে দেওয়ার পর মাত্র দেড় মাসে ৪৩ হাজার আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী এ দেশে এসেছেন। ভিসাধারী প্রায় ১ লাখ ৪৩ হাজার শিক্ষার্থী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ায় এসে পৌঁছাবেন।
মন্ত্রী আরও বলেন, 'এটা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত যে, অস্ট্রেলিয়া এখনো আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের তালিকায় প্রথম পছন্দের দেশ। উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থা, উচ্চ মজুরি এবং কাজ পাওয়ার সহজলভ্যতা, আমাদের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, আবহাওয়া, নিরাপত্তা, উন্নত জীবন ব্যবস্থা, উন্নত চিকিৎসা এই দেশকে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী এবং ইমিগ্র্যান্টদের কাছে আকর্ষণীয় এবং আগ্রহী করে তুলেছে।'
বিদেশি শিক্ষার্থীদের আরও বেশি উৎসাহিত করার জন্য অধ্যায়নকালীন সময়ে তাদের সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা কাজের সময়সীমা তুলে নেওয়া হয়েছে এবং ভিসা ফি কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। যেকোনো ভিসাধারী শিক্ষার্থী আগামী ৮ সপ্তাহের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ায় প্রবেশ করলে তার ভিসা ফি ফেরত দেওয়া হবে। শিক্ষার্থী ভিসার বর্তমান ফি ৬৩০ অস্ট্রেলীয় ডলার।
অস্ট্রেলিয়া কোভিড-১৯ মহামারির ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা এবং সীমান্ত বন্ধের কারণে প্রচুর শ্রমশক্তি হারিয়েছে, তাই অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের অংশ হিসেবে অভিবাসন বাড়াতে চায়।
চলতি মাসের শুরুতে প্রকাশিত ট্রেজারির মধ্যবছরের অর্থনৈতিক আপডেট অনুসারে দেখা যায়, ২০২১-২২ অর্থবছরে নিট বিদেশি অভিবাসন প্রায় ৪১ হাজার হওয়ার সম্ভাবনা আছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এটি ১ লাখ ৮০ হাজারে পৌঁছবে বলে আশা করা হচ্ছে। অর্থাৎ, প্রায় দ্বিগুণ বাড়বে।
অস্ট্রেলিয়ার মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম বার্ষিক আকারে সেট করা হয় এবং প্রতি আর্থিক বছরে ১ জুলাই থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত চলে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে অভিবাসী ২ লাখ ৩৫ হাজারে উত্তীর্ণ হবে বলে সরকার পূর্বাভাস দিয়েছে।
অস্ট্রেলীয় সরকার তার ইমিগ্রেশন পদ্ধতিতে এ বছর ব্যাপক পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে। যারা বছরের পর বছর ধরে অস্ট্রেলিয়ায় থেকে স্থায়ী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন, তাদের সেই স্বপ্ন পূরণে পরিকল্পনা গ্রহণ করছে সরকার।
নিউসাউথ ওয়েলসের সরকার দক্ষ পেশাজীবীর একটি তালিকা প্রকাশ করেছে সম্প্রতি। এতে অনেক পেশার সঙ্গে 'আরলি চাইল্ডহুড টিচার' এবং 'চাইল্ড কেয়ার সেন্টার ম্যানেজার' পেশাকে অত্যন্ত চাহিদা সম্পন্ন পেশা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আগামীতে এই পেশার সঙ্গে যুক্তরা উচ্চ মজুরিসহ অনেক রকম সুবিধা পাবেন। এসব পেশায় বিদেশিদের জন্য রয়েছে বিপুল সুযোগ।
'নভেম্বরে সরকার অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের অংশ হিসেবে অত্যন্ত দক্ষ অভিবাসীদের গুরুত্বপূর্ণ খাতে ধরে রাখতে ভিসা পরিবর্তনের ঘোষণা দিয়েছে। যেসব অভিবাসী মহামারি চলাকালে অস্ট্রেলিয়ায় থেকে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেছেন, তারা স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য যোগ্য হবেন', বলেছেন স্বরাষ্ট্র দপ্তরের এক মুখপাত্র।
অভিবাসনমন্ত্রী অ্যালেক্স হক বলেন, 'তীব্র শ্রম ঘাটতি মোকাবিলার পাশাপাশি মহামারি জুড়ে অস্ট্রেলিয়ায় থাকার সিদ্ধান্ত নেওয়া সেই সব উচ্চ দক্ষ অভিবাসী শ্রমিকদের স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য এটি একটি বিশেষ ছাড়। এটি তাদের অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্বের পথসহ এখানে থাকার অনুমতি দেবে।'
আকিদুল ইসলাম: অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী লেখক, সাংবাদিক
Comments