শতাব্দী প্রাচীন মহেশ্বরপাশা স্কুল অব আর্ট রক্ষায় ১৮ নাগরিকের বিবৃতি

মহেশ্বরপাশা স্কুল অব আর্ট। ছবি: স্টার

খুলনার ঐতিহাসিক মহেশ্বরপাশা স্কুল অব আর্ট ভবন রক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন দেশের ১৮ নাগরিক।

আজ সোমবার এক বিবৃতিতে তারা বলেন, পূর্ব বাংলা তথা বর্তমান বাংলাদেশের শিল্পরুচি বোধ, ইতিহাস ও ঐতিহ্যের স্মারক ১৯০৪ সালে স্থাপিত দেশের প্রথম অংকন শিল্প শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মহেশ্বরপাশা স্কুল অব আর্ট। যার প্রতিষ্ঠাতা শিল্পী শশিভূষণ পাল।যিনি নিজ বাড়িতে এই শিল্প বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। তার অক্লান্ত পরিশ্রমে ১৯২৯ সালে চিত্রশিল্প শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির সুরম্য ভবন নির্মাণ করা হয়। এই ভবনটিতে দীর্ঘ সময় আর্ট স্কুলটির কার্যক্রম চলে।

বিবৃতিদাতারা বলেন, বর্তমানে ঐতিহ্যের স্মারক এ ভবনটি ভেঙ্গে ফেলার জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। আমরা ফেসিলিটিজ অধিদপ্তরের এ হেন দায়িত্ব জ্ঞানহীন কর্মকাণ্ডে বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ।

তারা জানান, ভবনটি ঘিরে প্রাথমিক বিদ্যালয়, উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় গড়ে উঠেছে। ১৯৭৪ সালে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন ও কবি জসিমউদ্দীন এই প্রতিষ্ঠানটিকে বাংলাদেশের প্রথম অংকন শিল্প শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের  মর্যাদা দিয়েছিলেন। শিল্পী সুলতান নানা সময়ে এ প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেছেন।

১৯৮৩ সালে আর্ট স্কুলটি খুলনা শহরে স্থান্তারিত হয়ে খুলনা আর্ট কলেজ ও বর্তমানে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে খুলনা আর্ট ইনিস্টটিউট হিসাবে পরিচালিত হচ্ছে।

'গত শতকে শশিভূষণ পাল তার নিজ বাড়িতে বাংলাদেশের প্রথম চিত্রশিল্প বিদ্যালয় স্থাপন করে যে নজির স্থাপন করেছিলেন তা আমাদের ইতিহাসের গৌরবের অধ্যায়। নিজ বাড়িতে নিজের চেষ্টায় যে সুরম্য ভবন তৈরি করেছেন তা আমাদের ঐতিহ্যের স্মারক!'

বিবৃতিতে বলা হয়, সেই স্মারক ভেঙ্গে ফেলার অর্থ হচ্ছে নিজ গৌরবের ইতিহাস থেকে বাংলাদেশকে এবং দেশের জনগণকে বিচ্ছিন্ন করা। আমরা এহেন অপপরিকল্পনা বাস্তবায়ন না করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। একই সঙ্গে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়কে এ ভবন রক্ষা করে তা প্রত্নতত্ব অধিদপ্তরের অধীনে "শশীভূষণ পাল চিত্রশিল্প জাদুঘর"এ রূপ দেয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।

বিবৃতিদাতারা হলেন, আব্দুল গাফফার চৌধুরী, সৈয়দ হাসান ইমাম, অনুপম সেন, রামেন্দু মজুমদার, ফেরদৌসী মজুমদার, সারওয়ার আলী, আবেদ খান, সেলিনা হোসেন, লায়লা হাসান, আবদুস সেলিম, মফিদুল হক, শফি আহমেদ, শাহরিয়ার কবীর, নাসির উদ্দীন ইউসুফ, মুনতাসীর মামুন, সারা যাকের, শিমূল ইউসুফ ও গোলাম কুদ্দুছ।

Comments