কাজাখস্তানে রুশ সেনা, বিক্ষোভ ‘নিয়ন্ত্রণে’
মধ্য এশিয়ার তেলসমৃদ্ধ দেশ কাজাখস্তানে এলপি গ্যাসের দাম বৃদ্ধির কারণে সহিংস বিক্ষোভে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩ হাজারের বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত ৪ দিনে নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন ২৬ জন।
আজ শুক্রবার কাজাখস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম খবর ২৪ এ তথ্য জানিয়েছে।
রুশ সংবাদমাধ্যম স্পুতনিক জানায়, কাজাখ প্রেসিডেন্ট কাসিম-জোমার্ট তোকায়েভ আজ জাতির উদ্দেশে টেলিভিশনে ভাষণ দেবেন। দেশটির প্রায় সব অঞ্চলে বিক্ষোভ 'নিয়ন্ত্রণে' এসেছে বলে তিনি সেই ভাষণে জানিয়ে দেবেন।
এর আগে তিনি বলেছিলেন, 'সন্ত্রাসীরা' অস্ত্র ব্যবহার করছে। জনগণের সম্পত্তি নষ্ট করছে। বন্দুকধারীদের পুরোপুরি দমনে সন্ত্রাসবিরোধী বাহিনীকে নিয়োজিত করা প্রয়োজন।
সেসময় প্রেসিডেন্ট তোকায়েভ নিজ দেশের বিক্ষোভ দমনে রুশ নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট কালেক্টিভ সিকিউরিটি ট্রিটি অর্গানাইজেশনের (সিএসটিও) সাহায্য চান।
এই জোটের সদস্যরাষ্ট্র হচ্ছে— রাশিয়া, বেলারুশ, আর্মেনিয়া, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান ও তাজিকিস্তান।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, তোকায়েভের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে রুশ-নেতৃত্বাধীন সেনারা কাজাখস্তানে পৌঁছেছে। তবে সেনার সংখ্যা নিয়ে প্রতিবেদনে কিছু বলা হয়নি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, কাজাখস্তানে ইন্টারনেট ডাউন থাকায় সেখানকার সংবাদ নিরপেক্ষভাবে পাওয়া যাচ্ছে না। আজ সকালে রাজধানী শহর আলমাতের প্রধান সড়কে সাঁজোয়া যান ও সেনাদের উপস্থিতি দেখা গেছে।
সিএসটিও'র মহাসচিব স্ট্যানিসলাভ জাস রুশ রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আরআইএ'কে বলেন, 'প্রয়োজন হলে সব মিলিয়ে সেখানে আড়াই হাজার সেনা সদস্য পাঠানো হতে পারে।'
এ ছাড়াও, সেনারা 'কয়েক দিন বা সপ্তাহ' সেখানে থাকবেন বলেও জানান তিনি।
রুশ সংবাদমাধ্যম আরটি জানিয়েছে, শান্তিরক্ষী বাহিনীর মূল কাজ হচ্ছে কাজাখস্তানে স্থিতিশীলতা বজায়ে সাহায্য করা।
গতকাল স্ট্যানিসলাভ জাস বলেছিলেন, জোটের বিধি মেনেই শান্তিরক্ষীদের পাঠানে হচ্ছে। তিনি মনে করেন, 'কাজাখস্তানে যা হচ্ছে তা দেশটির ভৌগলিক অখণ্ডতা, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি।'
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে আল-জাজিরা জানায়, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা শহরের কেন্দ্র ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ভবন থেকে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিয়েছে। যদিও শহরের বেশ কয়েকটি এলাকায় বিক্ষিপ্তভাবে গুলির শব্দ শোনা গেছে।
কাজাখস্তানের সহিংস বিক্ষোভ ও সেখানে রুশ সেনার উপস্থিতি নিয়ে পশ্চিমের দেশগুলো সতর্ক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন কাজাখ পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে পরিস্থিতির 'শান্তিপূর্ণ' সমাধানের পরামর্শ দিয়েছেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক জোসেফ বোরেল কাজাখস্তানে রুশ সেনার উপস্থিতিকে 'এড়িয়ে যাওয়া যেত' বলেও মন্তব্য করেছেন।
Comments