আলো ঝলমলে দিনে বাংলাদেশের দাপট

Mahmudul Hasan Joy
ফাইল ছবি- সংগ্রহ

ঠিক প্রত্যাশামতই নিউজিল্যান্ডের শেষ ৫ উইকেট দ্রুত মুড়ে দিলেন বোলাররা। এরপর প্রত্যাশার চেয়েও বেশি নিবেদন দেখালেন ব্যাটসম্যানরা। বিশেষ করে তরুণ মাহমুদুল হাসান জয় চোয়ালবদ্ধ দৃঢ়তায় কাড়লেন আলো, নাজমুল হোসেন শান্ত খেললেন দৃষ্টিনন্দন এক ইনিংস। বাংলাদেশ পার করল স্বপ্নময় এক দিন।

রোববার মাউন্ট মাঙ্গানুই টেস্টে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে স্পষ্ট দাপট বাংলাদেশের। নিউজিল্যান্ডকে ৩২৮ রানে গুটিয়ে দিয়ে ২ উইকেটে ১৭৫ রান তুলে ফেলেছে মুমিনুল হকের দল।

শান্ত ৬৪ করে ফিরলেও ৭০ রানে অপরাজিত আছেন জয়। ৮ রান নিয়ে তার সঙ্গী অধিনায়ক মুমিনুল। ৮ উইকেট হাতে রেখে ১৫৩ রানে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ।

আগের দিনের ২৫৮ রান নিয়ে নামা নিউজিল্যান্ডকে এদিন মুড়ে দিতে বড় ভূমিকা রাখেন অফ স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ। শেষ ৫ উইকেটের তিনটিই তুলেছেন তিনি। অধিনায়ক মুমিনুল নিয়েছেন শেষ উইকেট, আরেক উইকেট গেছে বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলামের পকেটে।

এদিন খেলতে  নেমে দিনের শুরু দিকেই উইকেট হারায় কিউইরা। ক্রিজে নামা নতুন ব্যাটসম্যান রাচীন রবীন্দ্রকে স্লিপে ক্যাচ বানিয়ে তৃতীয় শিকার ধরেন শরিফুল। কাইল জেমিসনকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়েছিলেন হেনরি নিকোলস। ৩২ রানের একটি জুটিও আসে। এরমধ্যে নিকোলস পেরিয়ে যান ফিফটি। কিন্তু থিতু হওয়ার আগে জেমিসন শিকার হন মিরাজের। মিরাজের স্পিনে লং অনে সহজ ক্যাচে ধরা দেন তিনি।

টিম সাউদিও দিচ্ছিলেন কিছুটা সঙ্গ। তিনিও খানিকক্ষণ টিকে মিরাজের বলে উইকেট ছুঁড়ে দেন। খানিকটা এগিয়ে চিপ করে ক্যাচ দেন মিড উইকেটে। পরের বলেই নেইল ওয়েগনারকে ফেরান মিরাজ।

তার টার্ন করা বলে ব্যাট লাগিয়েছিলেন ওয়েগনার। বল কিপারের গ্লাভসে জমা পড়লেও আম্পায়ার সাড়া দেননি। পরে রিভিউ নিয়ে সফল হয় বাংলাদেশ।

শেষ উইকেট পেতে আর সময় লাগেনি। থিতু থাকা নিকোলসই আউট হয়েছেন। মুমিনুলের স্পিনে রিভার্স করতে গিয়ে শর্ট থার্ডম্যানে ধরা দেন দলের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৭৫ রান করা এই বাঁহাতি।

এরপর বাকিটা সময় বাংলাদেশকে চওড়া হাসি উপহার দেয় টপ অর্ডার। এই সিরিজের আগে টপ অর্ডার নিয়েই দুশ্চিন্তার জায়গা ছিল বেশি। সেই টপ অর্ডার থেকেই মিলে স্বস্তির ছবি।

দুই ওপেনার সাদমান ইসলাম আর জয় মিলে দলকে পাইয়ে দেন ভালো শুরু। কিউই পেসারদের শুরুর ঝাপ্টা সামাল দেন দাঁতে দাঁত চেপে। খুব বেশি ঝুঁকির দিকে না গিয়ে ক্রিজে পড়ে থাকার দিকে মন দেন তারা।

১৮ ওভার পর্যন্ত টিকে ওপেনিং জুটি। ১৯তম ওভারের শুরুতে ভুল করে বসেন সাদমান। নেইল ওয়েগনারের বলে তার হাতেই ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ২২ রান করা এই বাঁহাতি।

এরপর জয়ও শিকার হতে পারতেন ওয়েগনারের। ২০ রানে থাকা ডানহাতি তরুণ ওপেনারের সোজা একটি বলে পরাস্ত হয়ে প্যাডে লাগিয়েছিলেন। জোরালো আবেদন সাড়া দেননি আম্পায়ার। ব্যাটে লেগেছে ভেবে রিভিউ নেয়নি নিউজিল্যান্ড। রিপ্লেতে দেখা যায় রিভিউ নিলে জয়কে ফেরাতে পারত তারা।

বেঁচে বাকিটা সময় জয় ছিলেন আরও সতর্ক। বয়সের চেয়ে পরিণত মাথায় এগুতে দেখা যায় তাকে। স্থিতধি জয়কে পেয়ে সাবলীল ব্যাটে হাল ধরেন শান্ত। জমে যায় দুজনের জুটি। শান্ত ছিলেন বেশ ইতিবাচক।

জয়ের অনেক পরে নেমে ফিফটি পেরিয়ে যান আগে। ৯০ বলে ছক্কা মেরে পঞ্চাশ পূরণ করেন বাংলাদেশের নাম্বার থ্রি। ফিফটির পরও আরও দ্রুত রান বাড়ানোর অ্যাপ্রোচ ছিল শান্তর। ১০৯ বলে ৬৪ করে শান্তও ওয়েগনারের শিকার হলে ভেঙ্গে যায় ১০৪ রানের জুটি।

পরে অধিনায়ক মুমিনুলকে নিয়ে দিনের বাকিটা সময় পার করেন জয়। অসম্ভব দৃঢ়তা দেখানোর পাশাপাশি চোখ ধাঁধানো ড্রাইভে বাউন্ডারি পেতেও দেখা যায় তাকে। তৃতীয় উইকেটে এরমধ্যে ২৮ রান যোগ করেছেন তারা। বাংলাদেশের সামনে এখন প্রথম ইনিংসে লিড নেওয়ার সুযোগ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংস: ১০৮.১  ওভারে ৩২৮   (ল্যাথাম ১, ইয়ং ৫২, কনওয়ে ১২২ , টেইলর ৩১, নিকোলস ৭৫, ব্ল্যান্ডেল  ১১, রবীন্দ্র ৪, জেমিসন ৬, সাউদি ৬, ওয়েগনার ০, বোল্ট ৯* ; তাসকিন ০/৭৭, শরিফুল ৩/৬৯, ইবাদত ১/৭৫, মিরাজ ৩/৮৬, শান্ত ০/১০, মুমিনুল ২/৬ )

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস:  ৬৭ ওভারে ১৭৫/২   (সাদমান ২২, জয় ৭০*, শান্ত ৬৪, মুমিনুল ৮*  ; সাউদি  ০/৪১, বোল্ট ০/৩৭, জেমিসন ০/৩৫, ওয়েগনার  ২/২৭, রবীন্দ্র ০/২৬)

Comments

The Daily Star  | English
Kudos for consensus in some vital areas

Kudos for consensus in some vital areas

If our political culture is to change, the functioning of our political parties must change dramatically.

2h ago