নাঈম শেখকে টেস্টে রাখা নিয়ে মুমিনুলের ব্যাখ্যাও অস্পষ্ট
দল নির্বাচনের বিষয় নিয়ে কোন প্রশ্ন হলে বাংলাদেশের অধিনায়করা টিম ম্যানেজমেন্টের উপরই দায় চাপান। এদিন মুমিনুল হকের কাছে আগেই পরিষ্কার হওয়া গেল অধিনায়ক হিসেবে তিনি টিম ম্যানেজমেন্টেরই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ, সিদ্ধান্ত গ্রহণে থাকে তার বড় ভূমকাই। সে হিসেবে টেস্টে দলে নাঈম শেখকে রাখার ব্যাখ্যাও দিতে হলো তাকে। তবে সেই ব্যাখ্যায় প্রধান নির্বাচকের মতো থেকে গেল অস্পষ্টতা।
পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টের জন্য ২০ জনের স্কোয়াডে বিস্ময়করভাবে রাখা হয় নাঈমকে। সাইফ হাসান টাইফয়েডে ছিটকে যাওয়ায় সেই স্কোয়াড পরে হয় ১৯ জনের।
দলে কাকে লাগবে না লাগবে এসব ব্যাপারে আসলে অধিনায়কের ভূমিকা কতটা। শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে জানতে চাওয়া হয় মুমিনুলের কাছে। উত্তরে তিনি বলেন, 'অবশ্যই দল সাজানো থেকে শুরু করে। কে খেলবে না খেলবে, কারা ঢুকছে না ঢুকছে এই ব্যাপারে আমিই ভূমিকা রাখি। একটা অধিনায়ক বসিয়ে দিলে অন্যরা করবে এরকম না। অনেক কিছু আমার মাধ্যমেই আসে। টস জেতা কে খেলবে না খেলবে ইত্যাদি সব।'
অর্থাৎ নাঈমকে দলে ডাকাতেও তার ভূমিকা থাকার কথা। গত কয়েক মাস ধরে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেললেও দীর্ঘ পরিসরে একদম অনভিজ্ঞ নাঈম। সবশেষ প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ তিনি খেলেছিলেন ১৮ মাস আগে। সেই ম্যাচেও দুই ইনিংসে করেন ০ রান। ৬ টি প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ খেলে তার গড় কেবল ১৬.৬৩।
এমন একজনকে টেস্ট দলে নেওয়ার পেছনে গত কয়েকদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের অভ্যাসের যুক্তি দিলেন মুমিনুল, 'সত্যি বলতে আমার আর কোন ব্যাকআপ ওপেনার নেই। নাঈমের কথা যেটা বললেন একটা খেলোয়াড় আন্তর্জাতিক খেলার ভেতরে আছে। হঠাৎ একটা খেলোয়াড় ঘরোয়া থেকে নিয়ে এলে কঠিন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে চ্যালেঞ্জের হয়। আপনি এমন কাউকে নেন যে আসলে আন্তর্জাতিক খেলার ভেতরে আছে।' নাঈমকে দলে নিয়ে প্রায় একই রকম ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নুও।
টি-টোয়েন্টি সাদা বলের খেলা, টেস্ট হয় লাল বলের। দুই ধরণের বলের মুভমেন্ট আলাদা। খেলার ধরনও ভিন্ন। টেস্ট দলের সঙ্গে প্রথম দিনের অনুশীলনে সেটা হয়ে যায় স্পষ্ট। লাল বলে বারবার পরাস্ত হওয়া নাঈমকে এক পর্যায়ে নেট থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। শুক্রবার তাকে দেখা যায়নি নেটে। বলের ভিন্নতা থাকলেও কেবল খেলার মধ্যে থাকার যুক্তি মুমিনুলের, 'অবশ্যই ম্যাটার করে (লাল বল-সাদা বল)। কিন্তু আপনার যখন ব্যাকআপ ওপেনার থাকবে না, তখন আল্টিমেটলি যে খেলার ভেতরে থাকবে অনুশীলন করিয়ে ক্যারি করবেন।'
খেলার মধ্যে আছেন ঘরোয়া ক্রিকেটাররাও। সদ্য সমাপ্ত জাতীয় লিগের ৬ রাউন্ড খেলেছেন তারা। টেস্ট ব্যাকআপ বিবেচনায় সেখান থেকেও কাউকে নেওয়া যেত কিনা। এই প্রশ্নের উত্তরেও খেলার মধ্যে থাকার যুক্তি মুমিনুলের। যদিও যাকে ব্যাকআপ নেওয়া হয়েছে সেই নাঈমই লাল বলে লম্বা সময় ধরে খেলার মধ্যে নেই।
এবার জাতীয় লিগে তিন নম্বরে খেলে ৬০ গড়ে ৬০৩ রান করেছেন ফজলে মাহমুদ। ৫৯০ রান করেছেন অমিত হাসান। জাতীয় লিগে তিন নম্বরে রান পাওয়া মাহমুদুল হাসান জয়কে টেস্ট দলে নিয়ে তাকে ওপেনারের ব্যাক হিসেবে নেওয়ার কথাই জানান মুমিনুল। ওপেনারদের মধ্যে পিনাক ঘোষ জাতীয় লিগে ৪ ম্যাচে ৪৮.৮৫ গড়ে করেন ৩৪২ রান। তবে তারা কেউই শেষ পর্যন্ত জাতীয় দলের বিবেচনায় নেই।
Comments