খালেদা জিয়ার চিকিৎসা: পরিস্থিতি পুনর্বিবেচনার সময় এখনই
সর্বশেষ পাওয়া সংবাদ অনুযায়ী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার মারাত্মক অবনতি হয়েছে। তার স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জটিলতার বিষয়ে চিকিৎসকরা প্রথমবারের মতো গণমাধ্যমের সামনে বক্তব্য দিয়েছেন।
খালেদা জিয়ার লিভার সিরোসিস ধরা পড়েছে এবং রক্তক্ষরণ হচ্ছে। চিকিৎসকরা বলছেন, তার অবস্থা যেকোনো মুহূর্তে সংকটাপন্ন হতে পারে। তার ট্রান্সজুগুলার ইন্ট্রাহেপাটিক পোর্টুসিস্টেমিক শান্ট বা 'টিপস' প্রযুক্তির চিকিৎসা প্রয়োজন যা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও জার্মানির কিছু নির্দিষ্ট হাসপাতালে পাওয়া সম্ভব।
খালেদা জিয়ার রক্তক্ষরণের উচ্চ ঝুঁকি আছে এবং আগামী ৬ সপ্তাহ এ ঝুঁকি আরও বেশি থাকবে উল্লেখ করে চিকিৎসকরা শিগগির তাকে বিদেশে নেওয়ার জোরালো পরামর্শ দিয়েছেন।
তাদের এ পরামর্শ বিবেচনায় নিয়ে মানবিক কারণে খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো হবে কি না, তা নিয়ে সরকারের পুনর্বিবেচনার সময় এসেছে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
মানবিক কারণে সরকার ইতোমধ্যে খালেদা জিয়াকে পরিবারের সঙ্গে থাকার অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু, আইনমন্ত্রী বলেছেন যে খালেদা এখন মুক্ত এবং সরকারের হেফাজতে নেই। এ ধরনের মন্তব্য কিছুটা বিভ্রান্তিকর।
আমরা যতদূর জানি যে খালেদা জিয়া আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন এবং শাস্তি ভোগ করছেন। আইনমন্ত্রী তাকে মুক্ত বলে কী বোঝাতে চাইলেন? তার মানে কি চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়া বিদেশে যেতে পারবেন? যদি তাই হয়, তাহলে তার বিদেশে যাওয়ার বাধা কোথায়? বা এর আগে যখন বলা হয়েছিল যে তাকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি পেতে আগে জেলে ফিরতে হবে, তখন কী বোঝানো হয়েছিল?
গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের চিকিৎসার জন্য নিয়মিত বিদেশে যেতে দেখা যায়। এর মানে হচ্ছে আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ততটা উন্নত নয়, যেখানে সব ধরনের জরুরি চিকিৎসা সেবা পাওয়া যাবে। খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা হয়তো এমন পর্যায়েই এসেছে।
আমরা জানি যে খালেদা জিয়া ও তার বিরুদ্ধে মামলা নিয়ে অনেক রাজনৈতিক হিসাবনিকাশ আছে। কিন্তু, তিনি এখন গুরুতর অসুস্থ। তার জীবনের এই পর্যায়ে রাজনীতিকে কি এক পাশে রেখে মানবিক দিক নিয়ে ভাবা যায় না?
Comments