লিড বাড়াচ্ছে বাংলাদেশ
দিনের শুরুতেই বিদায় নিলেন অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম। মধ্যাহ্ন বিরতির আগে সাজঘরে ফিরলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। মাঝে দারুণ খেলতে থাকা ইয়াসির আলি চৌধুরী রাব্বি ম্যাচ থেকে ছিটকে গেলেন হেলমেটে বল লাগায়। তারপরও চতুর্থ দিনের প্রথম সেশনটা ভালো কাটল বাংলাদেশের। পাকিস্তানকে চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য ছুঁড়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে লিড বাড়িয়ে নিচ্ছে তারা।
সোমবার চট্টগ্রাম টেস্টের চতুর্থ দিনের খেলা চলছে। এই প্রতিবেদন লেখার সময়, মধ্যাহ্ন বিরতি পর্যন্ত দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের রান ৬ উইকেটে ১১৫। এতে প্রথম ইনিংসে পাওয়া ৪৪ রানের লিড বেড়ে পৌঁছেছে ১৫৯ রানে। ৬২ বলে ৩২ রান নিয়ে খেলছেন আগের ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান লিটন দাস। ক্রিজে তার সঙ্গী ইয়াসিরের কনকাশন বদলি হিসেবে নামা নুরুল হাসান সোহান। তিনি ৯ বল খেলে এখনও রানের খাতা খুলতে পারেননি।
এদিন প্রথম সেশনে খেলা হয়েছে ২৬ ওভার। বাংলাদেশ ২ উইকেট হারিয়ে যোগ করেছে ৭৬ রান।
আগের দিনের ৪ উইকেটে ৩৯ রান নিয়ে খেলতে নামে বাংলাদেশ। প্রথম বলেই পেসার হাসান আলিকে ফ্লিক করে চার মারেন মুশফিক। কিন্তু এই দারুণ শুরু শেষ হয় অঙ্কুরেই। ওই ওভারের তৃতীয় বলে বোল্ড হয়ে যান মুশফিক। শট না খেলে বল ছেড়ে দেওয়ার খেসারত দিতে হয় তাকে। ৩৩ বলে ২ চারে ১৬ রান আসে তার ব্যাট থেকে।
দলীয় ৪৩ রানে ৫ উইকেট খুইয়ে মহাবিপাকে পড়া বাংলাদেশের হাল এরপর ধরেন ইয়াসির ও লিটন। প্রথম ঘণ্টা শেষে পানি পানের বিরতির সময় ইয়াসিরের মাঠ ছাড়াটা দলের জন্য অস্বস্তির কারণ হলেও উইকেটে আশার আলো হয়ে টিকে আছেন লিটন।
বল যতটা বাউন্স করবে ভেবেছিলেন ইয়াসির, ততটা ওঠেনি। চোখ সরিয়ে নিয়ে ডাক করেছিলেন। পাকিস্তানের পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদির শর্ট বল গিয়ে লাগে তার হেলমেটের পেছনের অংশে। কনকাশন প্রোটোকল অনুসরণের পর আবার ক্রিজে ফেরত যান তিনি। তবে এক ওভার পরই অসুস্থতা বোধ করায় মাঠ ছাড়তে হয় দারুণ খেলতে থাকা এই ডানহাতি ব্যাটারকে। চট্টগ্রাম টেস্টে থেকেই ছিটকে গেছেন তিনি।
সাবলীল খেলতে থাকা ইয়াসির মাঠ ছাড়েন ৩৬ রানে। তার ৭২ বলের ইনিংসে চার ৬টি। লিটনের সঙ্গে ৬৯ বলে ৪৭ রানের জুটিতে তিনিই ছিলেন সপ্রতিভ। দারুণ কিছু শটে নিজের ব্যাটিং সামর্থ্যের ছাপ রাখেন দীর্ঘ অপেক্ষার পর আন্তর্জাতিক মঞ্চে পা রাখা ইয়াসির। জুটিতে তার অবদান ৩৮ বলে ২৮ রান।
রানআউট, ক্যাচ ও স্টাম্পিং মিলিয়ে ইয়াসির ও লিটনকে বিচ্ছিন্ন করার বেশ কিছু সুযোগ তৈরি অবশ্য করেছিল পাকিস্তান। কিন্তু সফল হতে পারেনি। ব্যক্তিগত ৮ রানে বড় বাঁচা বেঁচে যান লিটন। স্পিনার নুমান আলিকে উড়িয়ে মারতে চেয়েছিলেন ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে। ব্যাটে-বলে সংযোগ হয়নি। উইকেটরক্ষক মোহাম্মদ রিজওয়ান গ্লাভসে বল জমাতে না পারায় নষ্ট হয় সুযোগ।
নিজের ২৬ রানে রিভিউ নিয়ে বাঁচেন লিটন। অফ স্পিনার সাজিদ খানের বল তার প্যাডে লেগে জমা পড়ে শর্ট লেগে থাকা ফিল্ডারের হাতে। পরে আল্ট্রা এজে দেখা যায়, বল লাগেনি ব্যাটে। আর বল ট্র্যাকিংয়ে দেখা যায়, বল লেগ স্টাম্পের বাইরে দিয়ে চলে যেত।
লিটনকে ফেরাতে না পারলেও মিরাজকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন সাজিদ। ব্যর্থ রিভিউ নিয়ে ৪৪ বলে ১১ করে বিদায় নেন তিনি। তার ও লিটনের জুটিও ছিল ৬৯ বলের। তবে রানের গতি কম ছিল আগের জুটির চেয়ে। দুজনে যোগ করেন ২৫ রান।
মধ্যাহ্ন বিরতির আগের বলে সোহানের বিপক্ষে রিভিউ নিয়েছিল পাকিস্তান। কিন্তু নষ্ট হয় সেটা। ২০১৮ সালের পর এই প্রথম টেস্ট খেলতে নেমেছেন সোহান। ম্যাচের শেষ ইনিংসে লড়াইয়ের জন্য ভালো পুঁজি পেতে তার ও লিটনের দিকেই তাকিয়ে থাকবে বাংলাদেশ।
Comments