হাসানের তোপে সাড়ে তিনশর আগেই থামল বাংলাদেশ
আগের দিন উইকেটে লম্বা সময় কাটিয়ে সেঞ্চুরি পেয়ে অপরাজিত ছিলেন লিটন দাস, মুশফিকুর রহিম ছিলেন তিন অঙ্ক ছোঁয়ার অভিযানে। হাতে ৬ উইকেট নিয়ে আড়াইশ পেরিয়ে যাওয়ায় বড় সংগ্রহের সুবাস পাচ্ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু টেস্ট ম্যাচে প্রতিটি দিনের প্রতিটি সকালই হাজির হয় নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে। এদিন সেটা সামলাতে পারল না মুমিনুল হকের দল। হাসান আলির তোপে তাদেরকে সাড়ে তিনশর আগে থামিয়ে নিজেদের প্রত্যাশা পূরণ করল পাকিস্তান।
শনিবার চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে চলছে সিরিজের প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় দিনের খেলা। মধ্যাহ্ন বিরতির আগে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস থেমেছে ৩৩০ রানে। ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি পাওয়া লিটন করেন ১১৪ রান। অভিজ্ঞ মুশফিক নার্ভাস নাইন্টিজের শিকার হয়ে আউট হন ৯১ রান। মেহেদী হাসান মিরাজ অপরাজিত থাকেন ৩৮ রানে।
প্রথম দিনের খেলা শেষে হাসান জানিয়েছিলেন, উইকেটে দুজন থিতু ব্যাটার থাকলেও বাংলাদেশকে ৩৫০ রানের নিচে আটকাতে চান তারা। সেই লক্ষ্য পূরণে তিনিই রাখেন অগ্রণী ভূমিকা। এদিন প্রথম সেশনে বাংলাদেশ ৭৭ রান যোগ করতে হারায় ৬ উইকেট, যার ৪টিই পান হাসান। সবমিলিয়ে এই ডানহাতি পেসারের শিকার ৫১ রানে ৫ উইকেট। ২টি করে উইকেট নেন শাহিন শাহ আফ্রিদি ও ফাহিম আশরাফ। স্পিনারদের ঝুলিতে গেছে একটি উইকেট, নেন সাজিদ খান।
দিনের দ্বিতীয় ওভারেই বাংলাদেশের ইনিংসে আঘাত হানেন হাসান। রিভিউ নিয়ে লিটনকে এলবিডাব্লিউ করে সাজঘরে পাঠায় পাকিস্তান। ২৩৩ বলের ইনিংসে ১১ চার ও ১ ছক্কা মারেন তিনি। প্রথম দিনের ১১৩ রানের সঙ্গে আর মাত্র ১ যোগ করতে পারেন লিটন। তার বিদায়ে ভাঙে স্বাগতিকদের ২০৬ রানের পঞ্চম উইকেট জুটি। টেস্টে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জুটির তালিকায় এটির অবস্থান ১১ নম্বরে।
অভিষিক্ত ইয়াসির আলি চৌধুরী সাদা পোশাকে নিজের প্রথম ইনিংসটি স্মরণীয় করে রাখতে পারেননি। হাসান তাকে দেননি সে সুযোগ। ভেতরে ঢোকা বলে লেগ স্টাম্প হারান ইয়াসির। ১৯ বলে তার রান ৪।
দুর্দান্ত প্রথম স্পেলে ৬ ওভারে মাত্র ৭ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন হাসান। শাহিনও তাকে দারুণ সঙ্গ দেন। তাদের আগুনঝরা বোলিং দেখে নিজেকে গুটিয়ে রেখেছিলেন মুশফিক। করছিলেন সাবধানী ব্যাটিং। কিন্তু ফাহিম আশরাফের মিডিয়াম পেসে উইকেট হারান তিনি। বল তার ব্যাটে ছোঁয়া লেগে জমা পড়ে উইকেটরক্ষক মোহাম্মদ রিজওয়ানের হাতে। নিশ্চিত না হওয়ায় রিভিউ নেন মুশফিক। মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে অবশ্য বদল আসেনি। ৮২ রান নিয়ে খেলতে নামা মুশফিক থামেন সেঞ্চুরি থেকে ৯ রান দূরে। তার ২২৫ বলের ইনিংসে বাউন্ডারি ১১টি।
অষ্টম উইকেটে জুটি গড়ার প্রয়াস ছিল মিরাজ ও তাইজুল ইসলামের। আক্রমণে ফিরে সেটা ভেস্তে দেন শাহিন। আগের ডেলিভারিতে চার মারা তাইজুল অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বলে ক্যাচ দেন। প্রথম স্লিপে দারুণভাবে বল লুফে নেন আবদুল্লাহ শফিক। ১ চারে ২৮ বলে তাইজুলের সংগ্রহ ১১ রান।
পরপর দুই বলে আবু জায়েদ রাহি ও ইবাদত হোসেনকে ফিরিয়ে বাংলাদেশের ইনিংস গুটিয়ে দেন হাসান। টেস্ট ক্যারিয়ারে ষষ্ঠবারের মতো ৫ উইকেটের স্বাদ নেন তিনি। বাউন্সারে পরাস্ত রাহি স্লিপে ক্যাচ দেন শফিকের হাতে। ১৯ বলে ৮ রান করেন তিনি। অ্যাঙ্গেলে ঢোকা বলে স্টাম্প উপড়ে যায় রানের খাতা খুলতে না পারা ইবাদতের। লিটন-মুশফিকের বিদায়ের পর মূলত মিরাজের কল্যাণে তিনশ পেরোয় বাংলাদেশ। ৬৮ বলের অপরাজিত ইনিংসে মিরাজ মারেন ৬টি চার।
Comments