ইভ্যালির ৩৬ একাউন্টে লেনদেন প্রায় ৩ হাজার ৮৯৯ কোটি টাকা

বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) আজ বৃহস্পতিবার হাইকোর্টে একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরের আগস্ট পর্যন্ত বিতর্কিত ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম ইভ্যালি লিমিটেডের ৩৬টি অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে প্রায় ৩ হাজার ৮৯৯ কোটি টাকার লেনদেনের সন্ধান পাওয়া গেছে।

ইভ্যালির প্রাক্তন চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন এবং প্রাক্তন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ রাসেল এবং তাদের কর্মচারী বা প্রতিষ্ঠানের নামে ১৩টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নামে খোলা ৬৭টি অ্যাকাউন্টের প্রাসঙ্গিক নথি বিশ্লেষণে এ তথ্য উঠে এসেছে।

বিএফআইইউ প্রতিবেদনে বলেছে, লেনদেনের বিবরণী থেকে জানা গেছে- ৩৬টি অ্যাকাউন্টে মোট ৩ হাজার ৮৯৮.৮২ কোটি টাকা লেনদেন করা হয়েছে, এসব অ্যাকাউন্ট ইভ্যালি ডট কম নামে খোলা হয়েছিল। তারমধ্যে প্রায় ১ হাজার ৯৫৬.১৯ কোটি টাকা জমা দেওয়া হয় এবং প্রায় ১ হাজার ৯৪২.৬৩ কোটি টাকা উত্তোলন করা হয়। গত বছরের ৩০ আগস্ট অ্যাকাউন্টগুলোতে ব্যালেন্স ছিল প্রায় ২.১৩ কোটি টাকা।

বিএফআইইউ আইনজীবী শামীম খালেদের মাধ্যমে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চে আগের আদেশ অনুযায়ী ৩টি পৃথক রিট আবেদনের শুনানির সময় প্রতিবেদনটি জমা দেওয়া হয়।

এদিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তাদের আইনজীবী তাপস কান্তি বাউলের মাধ্যমে বেঞ্চে আরেকটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ই-কমার্স শিল্পের উন্নয়নে জরুরি উদ্যোগ নিতে তারা ১৫ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, কমিটি বেশ কয়েকবার বৈঠকের ব্যবস্থা করে এবং বিদ্যমান আইনি কাঠামো পর্যালোচনা করে গেটওয়েতে আটক অর্থের পরিমাণসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

রিট আবেদনকারীদের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, প্রতিবেদন পাওয়ার পর হাইকোর্ট বিএফআইইউকে অন্যান্য ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের ওপর একটি সম্পূর্ণ প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছেন। এছাড়া, এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে আইন মন্ত্রণালয়ের একজন প্রতিনিধিকে যথাযথ কাজের জন্য কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করতে বলেছেন।

তিনি আরও জানান, রিট আবেদনের পরবর্তী শুনানি ও আদেশ দেওয়ার জন্য হাইকোর্ট আগামী বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেছেন।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার আবেদনের শুনানির সময় রাষ্ট্রপক্ষের প্রতিনিধিত্ব করেন।

এর আগে, আদালতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে কয়েকজন আইনজীবী ও ভোক্তা বিভিন্ন তারিখে উচ্চ আদালতে ৩টি পৃথক রিট পিটিশন দাখিল করেছিলেন।

একটি পিটিশনে ডিজিটাল বা ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মের গ্রাহকদের অধিকার ও স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ বা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা ও নিষ্ক্রিয়তাকে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে।

আরেকটি পিটিশনে দেশে অনলাইন বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণে একটি ই-কমার্স নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ গঠনের জন্য হাইকোর্টের নির্দেশনা চাওয়া হয়।

তৃতীয়টি ইভ্যালি, আলেশা মার্ট, ই-অরেঞ্জ, ধামাকা, কিউকম, আলাদিনের প্রদীপ, দালাল প্লাসসহ অন্যান্য ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলোর অর্থ আত্মসাৎ, অর্থপাচার এবং জালিয়াতির অভিযোগ তদন্ত করতে হাইকোর্টকে একটি বিচারবিভাগীয় কমিটি গঠনের অনুরোধ জানানো হয়।

Comments

The Daily Star  | English
explanations sought from banks for unusual USD rates

Explanations sought from 13 banks for higher dollar rate

BB issued letters on Dec 19 and the deadline for explanation ends today

2h ago