মণিপুরী সম্প্রদায়ের মহারাসলীলা আজ
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর শিববাজার জোড়া মণ্ডপে মণিপুরী মহারাসলীলা সেবা সংঘের উদ্যোগে আয়োজিত হচ্ছে বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী সম্প্রদায়ের ১৭৯তম মহারাস উৎসব।
আজ শুক্রবার এই উৎসব উদযাপিত হচ্ছে।
অপরদিকে, রাস উৎসব ২০২১ উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে আদমপুর মণিপুরী কালচারাল কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে মীতৈ মণিপুরী সম্প্রদায়ের ৩৬তম রাস উৎসব ও আদমপুর তেতইগাঁও মধুমঙ্গল শর্মা মণ্ডপ প্রাঙ্গণে মণিপুরী সাংস্কৃতিক পরিষদের আয়োজনে (মীতৈ মণিপুরী সম্প্রদায়ের) ৬ষ্ঠ বারের মতো রাস উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।
এবারের উৎসবে ৩০০'র বেশি শিশু-কিশোর রাধাকৃষ্ণ, রাখাল, গোপী ও বৃন্দার ভূমিকায় অংশ নেবেন রাখাল ও রাস নৃত্যে। ধ্রুপদী নাচের শৈল্পিক আবহ ধরে রাখতে উপজেলার মণিপুরী গ্রামে গ্রামে হয়েছে নাচের মহড়া।
আজ উৎসবের দিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কৃষ্ণের বাল্যলীলা অনুসরণে হবে রাখাল নৃত্য। সন্ধ্যায় আয়োজন করা হবে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
রাতে রাধাকৃষ্ণের রাসলীলা পরিবেশিত হবে মণিপুরী নৃত্যের ধ্রুপদ ভঙ্গিমায়। সেই আঙ্গিকে অংশগ্রহণকারীদের প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে।
প্রশিক্ষকরা দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, প্রায় ২ সপ্তাহ ধরে গ্রামে গ্রামে অংশগ্রহণকারীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ধর্মীয় আচার হলেও এই উৎসব তাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে বহন করে। তাই অংশগ্রহণকারীরা যেন নিখুঁতভাবে নৃত্য উপস্থাপন করতে পারে সেদিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
আদমপুরের রাস উৎসব ২০২১ উদযাপন পরিষদের কোষাধ্যক্ষ শান্ত কুমার সিংহ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মহারাসলীলা মণিপুরীদের অনুষ্ঠান হলেও প্রতিবছর বর্ণিল এ উৎসবে যোগ দেন দেশ-বিদেশের হাজারো দর্শনার্থী।'
'গত বছর করোনা মহামারির কারণে উৎসব হয়নি তাই এ বছর সবার মধ্যে বাড়তি উৎসাহ আছে,' উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'আয়োজন সফল করতে চূড়ান্ত প্রস্তুতি চলছে।'
মণিপুরী মহারাসলীলা সেবা সংঘের সাধারণ সম্পাদক শ্যাম সিংহ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শুধুমাত্র নিজস্ব আচার নয়, সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন আর অসাম্প্রদায়িকতার প্রতীক হয়ে ওঠেছে মণিপুরীদের এই ধর্মীয় উৎসব।'
জানা যায়, মণিপুরের মহারাজা ভাগ্যচন্দ্র সিংহ ১৭৭৯ সালে রাস উৎসব শুরু করেন। এরপর থেকে কার্তিক পূর্ণিমা তিথিতে গৌড়ীয় বৈষ্ণব ধর্মাবলম্বী মণিপুরীদের প্রধান ধর্মীয় মহোৎসব শ্রীশ্রী কৃষ্ণের মহারাসলীলা উদযাপিত হয়ে আসছে।
১৯২৬ সালের সিলেটের মাছিমপুরে মণিপুরী রাস নৃত্য উপভোগ করে মুগ্ধ হয়েছিলেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। পরে কবিগুরু কমলগঞ্জের নৃত্য শিক্ষক নীলেশ্বর মুখার্জীকে শান্তিনিকেতনে নিয়ে প্রবর্তন করেছিলেন মণিপুরী নৃত্য শিক্ষা।
কমলগঞ্জ থানার ওসি ইয়ারদোস হাসান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ উপলক্ষে ৩ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।'
Comments