স্কুলশিক্ষার্থীদের করোনার টিকাদানে অব্যবস্থাপনা
স্কুলশিক্ষার্থীদের জন্য সরকারের টিকাদান কর্মসূচি এই মাসের প্রথম থেকে শুরু হয়েছে। এই টিকাদান কর্মসূচি নিয়ে বেশ কিছু অভিযোগ উঠেছে৷
বুধবার এই সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, লম্বা লাইন, টিকা কেন্দ্রের অব্যবস্থাপনা ও নিবন্ধন প্রক্রিয়ার বিভিন্ন ধরনের জটিলতার কারণে ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী স্কুলশিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার উদ্যোগে উৎসাহ ও উদ্দীপনা কমেছে।
দুর্ভাগ্যবশত, এটি থেকে বোঝা যায় যে, কর্তৃপক্ষ এর আগে দেশজুড়ে টিকাকরণ কর্মসূচি থেকে কোনো শিক্ষা গ্রহণ করেনি। দুর্বল পরিকল্পনা ও সঠিক তদারকির অভাবের দিকগুলোর কারণে টিকাদান কর্মসূচিতে অদক্ষতার ছাপ স্পষ্টভাবে দেখা যায়। এটি হতাশাজনক যে, যারা টিকা পাওয়ার আশা করছেন তাদের জন্য টিকাদান কার্যক্রমকে সহজ করতে সরকার এখনও কোনো দক্ষ ব্যবস্থা তৈরি করতে পারেনি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অব্যবস্থাপনার কারণে বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীদের টিকার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে। এমনকি কিছু শিক্ষার্থীকে স্কুলের ভেতরে প্রবেশ করতেও বিভিন্ন বাধাবিপত্তির মুখে পড়তে হয়েছে।
স্কুলের ভেতরে-বাইরে বিশৃঙ্খলা এবং প্রচণ্ড ভিড়ের কারণে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকির মুখে পড়েছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। বিশৃঙ্খলা এবং ভিড়—এটিই এখন পর্যন্ত সরকারের সব টিকাদান কর্মসূচির প্রধান সমস্যা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রচণ্ড ভিড় হওয়ার আরেকটি কারণ হলো কেন্দ্রের সবগুলো বুথ চালু না থাকা। ঢাকায় স্কুল শিক্ষার্থীর সংখ্যা বিপুল। তাই সরকারের উচিত ছিল বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে যথেষ্ট সংখ্যক টিকা কেন্দ্র স্থাপন করা। বর্তমানে স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য মাত্র কয়েকটি টিকা কেন্দ্র করা হয়েছে, সেখানেও কিছু বুথ কাজ করছে না। এটি একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়।
অভিভাবকরা অভিযোগ করেছেন, তাদের সন্তানদের টিকা দেওয়ার জন্য নিবন্ধন করার সময় তারা স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সহযোগিতা পাচ্ছেন না। এছাড়া সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধন করার ক্ষেত্রেও একটি বড় প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। যাদের কাছে ১৬-অংকের জন্ম নিবন্ধনপত্র আছে, তারা সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধন করতে পারছেন না।
এসব সমস্যা অনেক আগেই সমাধান করা উচিত ছিল। সরকারি টিকাদান অভিযানের এত সময় পরেও এই সমস্যাগুলো রয়ে যাওয়ার পেছনে কোনো অজুহাত থাকতে পারে না। স্কুলের শিক্ষার্থীদের টিকাদান যাতে সুষ্ঠুভাবে হয় তা নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষের মনোযোগের অভাব সত্যিই বিভ্রান্তিকর।
আমরা কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে এই সমস্যাগুলোকে পুরোপুরিভাবে সমাধান করার জন্য আহ্বান জানাই। তা না হলে স্কুলের শিক্ষার্থীদের বর্তমান টিকাদান অভিযানও পুরোপুরি সফল হবে না।
অনুবাদ করেছেন সুচিস্মিতা তিথি
Comments