রিজওয়ান-ফখরের ব্যাটে অস্ট্রেলিয়াকে চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য দিল পাকিস্তান
সকাল থেকেই শঙ্কা, জ্বরের কারণে সেমি-ফাইনালে খেলতে পারবেন না পাকিস্তানের উইকেটরক্ষক ব্যাটার মোহাম্মদ রিজওয়ান। তবে সব শঙ্কা কাটিয়ে মাঠে নামলেন তিনি। অধিনায়ক বাবর আজম ও ফখর জামানের সঙ্গে গড়লেন দুটি দারুণ জুটি। তাকে দারুণ সহায়তা করেন ফখর। তাতেই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে লড়াকু পুঁজিই পেয়েছে পাকিস্তান।
বৃহস্পতিবার দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অস্ট্রেলিয়াকে ১৭৭ রানের লক্ষ্য দিয়েছে পাকিস্তান। টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামা দলটি রিজওয়ান ও ফখরের ফিফটিতে ভর করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৭৬ রান করে তারা।
আগের দিন প্রথম সেমি-ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৬৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে রোমাঞ্চকর এক উপহার দেয় নিউজিল্যান্ড। সাম্প্রতিক সময়ে দারুণ খেলতে থাকা এ দুই দলের কাছে তাই আরও একটি জমজমাট লড়াই প্রত্যাশা করা যেতেই পারে।
তবে দুবাইয়ে বরাবরই টস গুরুত্বপূর্ণ। সেখানে শুরুতেই ভাগ্যটা সঙ্গে পেয়েছে অস্ট্রেলিয়া। যদিও শুরুটা সে ভাবে ভালো করতে পারেনি দলটি। আরও একবার দারুণ ওপেনিং জুটি উপহার দেন দুই পাকিস্তানি ওপেনার। এরপর অধিনায়ক বাবরকে ফেরালেও ফখর জামানের সঙ্গে রিজওয়ান আরও একটি দারুণ জুটি গড়লে লড়াইয়ের পুঁজি মিলে যায় পাকিস্তানের।
যদিও জ্বর থেকে উঠে আসা রিজওয়ান শুরুতে কিছুটা নড়বড়ে ছিলেন। তৃতীয় ওভারে খালি হাতে বিদায় নিতেও পারতেন। ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে লংঅফে ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন। মিডঅফ থেকে দৌড়ে সে ক্যাচ প্রায় লুফে নিয়েছিলেন ডেভিড ওয়ার্নার। তবে শেষ মুহূর্তে এ অজি ফিল্ডার নিয়ন্ত্রণ রাখতে না পারলে সে যাত্রা বেঁচে যান রিজওয়ান।
প্লের শেষ বলেও দুরূহ ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন রিজওয়ান। এ যাত্রাতেও বেঁচে যান এ পাকিস্তানি ওপেনার। ফলে পাওয়ার প্লেটা দারুণ সদ্ব্যবহার করে দলটি। বিনা উইকেটে করে ৪৭ রান। প্রথম ছয় ওভারে চলতি আসরে এটাই সর্বোচ্চ রান পাকিস্তানের।
পাওয়ার প্লে শেষে কিছুটা ধীরে গতিতে এগিয়ে যেতে থাকে পাকিস্তান। দশম ওভারে কাঙ্ক্ষিত ব্রেক থ্রু পায় অজিরা। জাম্পার বলে বাবর স্লগ সুইপ করতে গিয়ে লংঅনে সীমানায় ধরা পড়েন ওয়ার্নারের হাতে। তবে এর আগে ৭১ রানের দারুণ এক ওপেনিং জুটি এনে দেন পাকিস্তানকে। ৩৪ বলে ৫টি চারের সাহায্যে ৩৯ রান করেন বাবর।
এরপর ফখরের সঙ্গে দলের হাল ধরেন রিজওয়ান। গড়েন ৭২ রানের আরও একটি দারুণ জুটি। স্টার্কের ফুলার লেংথের বলে ঠিকভাবে শট নিতে না পারলে মিডঅফে ধরা পড়েন রিজওয়ান। ৫২ বলে ৬৭ রানের ইনিংস খেলেন এ ওপেনার। নিজের ইনিংসটি ৩টি চার ও ৪টি ছক্কায় সাজান তিনি।
এদিন অবশ্য কিছু করতে পারেননি সুপার টুয়েলভে দারুণ নজরকারা আসিফ আলী। কামিন্সের প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ধরা পড়েছেন স্টিভ স্মিথের হাতে। ঠিক পরের বলেই আউট হতে পারতেন ফখর। এবারও ফিল্ডার সেই স্মিথ। কিন্তু লুফে নিতে পারেননি তিনি। ফখর তখন ৪০ রানে ব্যাট করছিলেন। তবে ১৯তম ওভারে মাত্র ৩ রান দিয়ে রানের গতিতে লাগাম দেন কামিন্স।
শেষ ওভারেও শুরুটা ভালো করেছিলেন স্টার্ক। প্রথম ৩ বলে আসে মাত্র ২ রান। তবে পরের দুই বলে টানা দুই ছক্কা হাঁকিয়ে পুঁজিটা বাড়িয়ে নেন ফখর। শেষ পর্যন্ত ব্যাট করে খেলেন ৫৫ রানের ইনিংস। ৩২ বলে ৩টি চার ও ৪টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
পাকিস্তান: ২০ ওভারে ১৭৬/৪ (রিজওয়ান ৬৭, বাবর ৩৯, ফখর ৫৫*, আসিফ ০, মালিক ০, হাফিজ ১*; স্টার্ক ১/৩৮, হ্যাজলউড ০/৪৯, ম্যাক্সওয়েল ০/২০, কামিন্স ১/৩১, জাম্পা ১/২২, মার্শ ১/২২)।
Comments