প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় ব্যাংক কর্মকর্তাসহ ৩ জন গ্রেপ্তার

ছবি: সংগৃহীত

পাঁচটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ২ ব্যাংক কর্মকর্তাসহ আরও ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের সদস্যরা।

গ্রেফতার হওয়া তিন জন হলেন, জনতা ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার এমদাদুল হক খোকন, একই ব্যাংকের চাকরিচ্যুত সিনিয়র অফিসার সোহেল রানা ও ঢাকা কলেজের সাবেক ছাত্র এ বি জাহিদ।

এ বিষয়ে ডিবির তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহাদাত হোসেন সুমা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা গতকাল রাতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করি।'

তিনি বলেন, 'তাদের জড়িত থাকার বিষয়ে দুজন সাক্ষীও পাওয়া গেছে, যারা তাদের প্রশ্নফাঁস করতে দেখেছেন। এ বিষয়ে তারা ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেবে।'

সম্প্রতিকালে অনুষ্ঠিত পাঁচটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (এইউএসটি) একজন আইসিটি প্রযুক্তিবিদ এবং রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের তিন কর্মকর্তাসহ পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দারা।

ডিবির কর্মকর্তারা জানান, এই সিন্ডিকেট অন্তত আরও তিনটি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করে কয়েক হাজার চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে ৬০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

ডিবি জানিয়েছে, ৫টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের ১ হাজার ৫১১ জন ক্যাশ অফিসার নিয়োগের জন্য অনুষ্ঠিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরির দায়িত্ব ছিল আহসানউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের। সেখান থেকেই প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়। 

আহসানউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন আইসিটি টেকনিশিয়ান প্রশ্নপত্র ফাঁস করে একটি সিন্ডিকেটের হাতে তুলে দেন, যা পরে কয়েক হাজার চাকরিপ্রার্থীর কাছে বিক্রি করে।

সিন্ডিকেট সদস্যরা পরীক্ষার আগে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে ১১টি অস্থায়ী বুথ বসিয়ে সেখান থেকে তাদের 'গ্রাহকদের' কাছে প্রশ্ন সরবরাহ এবং উত্তরগুলো মুখস্থ করায়।

ওই চক্রের সদস্যরা অনলাইন মেসেজিং অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে চাকরিপ্রার্থীদের কাছে প্রশ্নের ছবি তুলেও পাঠায়। 

গত শনিবার বিকেল ৩টা থেকে অনুষ্ঠিত হওয়া ৫টি ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষায় অন্তত ২ লাখ চাকরিপ্রার্থী অংশ নেন। এক ঘণ্টার পরীক্ষাটির তত্ত্বাবধানে ছিল বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটি।

ডিবি কর্মকর্তা জানান, সিন্ডিকেটের সদস্যরা প্রত্যেক চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে ৭ থেকে ১৫ লাখ টাকা নেয়। এমসিকিউ পরীক্ষার আগে ২০ শতাংশ টাকা নেয়, লিখিত পরীক্ষার আগে ২০ শতাংশ এবং বাকি টাকা চাকরি পাওয়ার পর নেওয়ার কথা ছিল।

প্রশ্নপত্র কিনেছেন এমন প্রায় ২০০ চাকরিপ্রার্থীর তালিকা পেয়েছে ডিবি। তবে, ডিবি কর্মকর্তারা মনে করেন, প্রশ্নপত্র কেনা চাকরিপ্রার্থীর সংখ্যা ২ হাজারেরও বেশি। 

প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও পাবলিক পরীক্ষা আইনে ২৮ জনের বিরুদ্ধে রাজধানীর বাড্ডা থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Dhaka to host high-level Bangladesh-India summit next month

The first high level official meeting between Dhaka and New Delhi since the fall of Awami League government is scheduled to be held in Dhaka next month

53m ago