২ মন্ত্রণালয়ের একমত হওয়া কতটা কঠিন?

সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের মধ্যে চলমান শক্তি পরীক্ষার লড়াইয়ে একটি সমন্বিত ও স্বাধীন কপিরাইট দপ্তর প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টায় অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে, যা সত্যিই দুঃখজনক।

কপিরাইট দপ্তর থেকে কপিরাইট সনদ, পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস সনদ দেওয়া হয়ে থাকে। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কপিরাইট অফিস এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস বিভাগকে (ডিপিডিটি) সমন্বিত করার পরিকল্পনা বাংলাদেশকে কেবল অধিকাংশ দেশের সমকক্ষই করবে না, বরং দেশের জনগণ একই জায়গা থেকে সংশ্লিষ্ট সব সেবা পাবে। এতে জনভোগান্তি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে।

তবে, ২ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে চলমান মতভেদের কারণে অতি প্রয়োজনীয় এই সংস্কার কাজটি বিলম্বিত হচ্ছে।

সর্বপ্রথম ২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে এই ২ দপ্তরকে একত্রিত করার নির্দেশ আসে। ২০১৪ সালে আবারও একই নির্দেশ দেন তিনি। অবশেষে, ২০১৫ সালের অক্টোবরে দপ্তর ২টি একত্রিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গত ৬ বছরে বেশ কয়েকবার বৈঠক ও আলোচনার পরও ২ মন্ত্রণালয়ের মতভেদের কারণে সব প্রচেষ্টা ভেস্তে যায়। মানুষের ভোগান্তি আর শেষ হয় না। কপিরাইট সংক্রান্ত পরিষেবাগুলো সহজ করতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে অযৌক্তিক বিলম্বের জন্য ২ মন্ত্রণালয়ের কাছে কী অজুহাত থাকতে পারে? কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কী করছে?

কপিরাইট আইন কোনো কিছুর স্রষ্টাকে তার সৃষ্টির ওপর অধিকার দেয়। এতে করে অন্য কেউ সেই সৃষ্টির অনুলিপি তৈরি, পুনরুৎপাদন বা অন্য কোনোভাবে ব্যবহার করলেও প্রকৃত মালিকের মালিকানা বজায় থাকে। বাংলাদেশকে জ্ঞানভিত্তিক ও উন্নত দেশে রূপান্তরিত করতে হলে কপিরাইট সংক্রান্ত সমস্যাগুলোর দ্রুত সমাধান করতে হবে। এ ছাড়া উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করতে এবং সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে দেশে মেধাস্বত্ব অধিকার সুরক্ষার জন্য উপযুক্ত নীতি থাকা দরকার। যার আইনি কাঠামো এখনো অসম্পূর্ণ। কিন্তু মেধাসত্ত্ব সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করা ২টি মন্ত্রণালয় জনস্বার্থে একসঙ্গে কাজ করতে না পারলে কীভাবে এই ধরনের নীতি ও কাঠামো প্রণয়ন করা সম্ভব?

দিন শেষে, কোনো ভোগান্তি ছাড়া কপিরাইট পরিষেবা পাওয়া জনগণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এটা কীভাবে করা যাবে সেটা কর্তৃপক্ষকেই খুঁজে বের করতে হবে। ২টি অফিস একত্রিত করে নাকি পৃথক কেন্দ্রীভূত জাতীয় কার্যালয়ের মাধ্যমে কাজটি সম্পন্ন করা হবে সেটা আলোচনার বিষয় হতে পারে। এ ক্ষেত্রে যথাযথ পরিকল্পনা প্রণয়ন, সমন্বয় ও বাস্তবায়নে ব্যর্থতা গ্রহণযোগ্য নয়। কিন্তু সেটাই হচ্ছে। অতি সত্ত্বর এই অবস্থার পরিবর্তন করতে হবে।

Comments

The Daily Star  | English

A good example of a bad plan

A year on, Karnaphuli tunnel losing over Tk 27 lakh a day

6h ago