নির্ধারিত সময়ের আগেই চালু হতে পারে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক শওকত আকবর বলেছেন, নির্ধারিত মেয়াদের কয়েক মাস আগেই ২০২৩ সাল থেকে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

মূলত, এই পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট ২০২৪ সালে ও দ্বিতীয় ইউনিট ২০২৫ সালে চালু হওয়ার কথা।

গতকাল বৃহস্পতিবার প্রকল্প পরিচালক আকবর পরমাণু শক্তি কমিশনে সাংবাদিকদের বলেন, প্রথম ইউনিটটি চালু হবে ২০২৩ সালে। সে অনুসারে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে।

প্রথম ইউনিট চালু হওয়ার ৬ থেকে ৮ মাস পর দ্বিতীয় ইউনিট চালু হবে।

আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৫০ শতাংশ কাজ শেষ হবে মন্তব্য করে আকবর বলেন, বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ গাইডলাইন অনুসারে যথাযথভাবে করা হচ্ছে কি না, তা পরিদর্শনের জন্য আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) ৫টি মিশনের মধ্যে প্রথম মিশন আগামী মাসে পরিদর্শনে আসবে।

মিশনগুলো পর্যায়ক্রমে বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রায় ১৯টি অবকাঠামোর কাজ পরিদর্শন করবে। এ ছাড়া পরিদর্শনের আওতায় আছে বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা ব্যবস্থা এবং প্রাতিষ্ঠানিক ও অপারেটিং স্টাফদের দক্ষতার মতো বিষয়গুলো।

পরিদর্শনে সন্তুষ্ট হলে তারা পরমাণু জ্বালানি আনার ব্যাপারে সবুজ সংকেত দেবে।

আকবর বলেন, রিঅ্যাক্টর প্রেশার ভ্যাসেল স্থাপনের পর জ্বালানি আনার বিষয়টিই হবে সবচেয়ে বড় কাজ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১০ অক্টোবর এই প্রেশার ভ্যাসেল স্থাপনের কাজ উদ্বোধন করেন।

আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার গাইডলাইন মেনে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে পরমাণু জ্বালানি আনার ক্ষেত্রে নিরাপত্তার বিষয়টি দেখভাল করবে রাশিয়ার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

আকবর বলেন, বাংলাদেশে জ্বালানি আসার পর তা সর্বোচ্চ নিরাপত্তায় পাবনার বেস স্টেশনে নেওয়া হবে।

তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ২০২৩ সালের মাঝামাঝি বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য এই পরমাণু জ্বালানি আনা হতে পারে। তখন বিদ্যুৎকেন্দ্রের পরীক্ষামূলক পরিচালন শুরু হতে পারে।

'আমরা আইএইএ-এর গাইডলাইন মেনেই অবকাঠামো তৈরি করছি। এখন পর্যন্ত তারা আমাদের কাজে সন্তোষ প্রকাশ করেছে', বলেন তিনি।

বিকিরণের ঝুঁকি সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক বলেন, প্রকল্পের অবকাঠামো এমনভাবে নকশা করা হয়েছে, তাতে স্বাভাবিক কার্যক্রম চলার সময় এখান থেকে নির্গত বিকিরণের পরিমাণ এতই কম হবে যে তা এখানকার কর্মীদের জন্য কখনো নির্ধারিত স্তরের ওপরে উঠবে না।

সক্রিয় ও নিষ্ক্রিয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়াও এই বিদ্যুৎ প্রকল্পের নকশায় নিরাপত্তার ৫টি স্তর আছে।

নকশার পাশাপাশি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে সহায়তাকারী দেশ রাশিয়ার পক্ষ থেকে এমন নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে যে, স্বাভাবিক কিংবা জরুরি পরিস্থিতিতে বিকিরণ সীমা কখনোই চুল্লি ভবনের আশপাশের ৩০০ মিটার অতিক্রম করবে না। এটি আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য মাত্রা।

প্রকল্প পরিচালক বলেন, 'এই পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৩০০ মিটারের বাইরে বা সাইটের কর্মীদের জন্য বিকিরণের ঝুঁকি নেই।'

রাশিয়ার কারিগরি ও আর্থিক সহায়তায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কাজ করছে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন।

অনুবাদ করেছেন মামুনুর রশীদ

Comments

The Daily Star  | English

Cyber protection ordinance: Draft fails to shake off ghosts of the past

The newly approved draft Cyber Protection Ordinance retains many of the clauses of its predecessors that drew flak from across the world for stifling freedom of expression.

11h ago