শিক্ষার্থীদের ইলেকট্রনিক গ্যাজেটের অতি-নির্ভরশীলতা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে

ছবি: রয়টার্স

যৌথভাবে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ইলেকট্রনিক গ্যাজেটের বিস্তার এবং তাদের স্বাস্থ্যের ওপর এর প্রভাব সম্পর্কে গবেষণা করেছেন। গবেষণায় দেখা গেছে যে, করোনা মহামারির গত দেড় বছরে মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীরা ইলেকট্রনিক গ্যাজেটের ওপর অতিমাত্রায় নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।

মাধ্যমিক স্তরের ৬৮ শতাংশ শিক্ষার্থী মোবাইল ফোনে দিনে ২ থেকে ৪ ঘণ্টা ব্যয় করে। ৯ শতাংশ কম্পিউটারের সামনে এবং ৮ শতাংশ ট্যাবলেটে একই পরিমাণ সময় ব্যয় করে। ইলেকট্রনিক ডিভাইসের ওপর এই অতিরিক্ত নির্ভরতার কারণে অনেকে শারীরিক ও মানসিক রোগে ভুগছে। তাদের মধ্যে পিঠের ব্যথা, চোখের সমস্যা, অনিদ্রা ও বিষণ্নতায় ভোগাসহ নানা সমস্যা দেখা গেছে।

শিক্ষার্থীদের ইলেকট্রনিক গ্যাজেটের অতিরিক্ত ব্যবহার অভিভাবকদের জন্য উদ্বেগের একটি প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০২০ সালের শুরুর দিকে মহামারির কারণে সশরীরে ক্লাস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিশেষ করে শহরাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের বাড়ির বাইরে যাওয়ার খুব কম সুযোগ ছিল। স্কুলে গিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে না পারায় শিক্ষার্থীরা যোগাযোগের জন্য সামাজিক মাধ্যম ও অ্যাপের ওপর নির্ভরশীল হয়ে উঠে। তা ছাড়া, পড়াশোনার কাজে তাদের গ্যাজেট ব্যবহার করতে হয়। বাইরে খেলার সুযোগ না থাকায় এই পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে পড়ে।

অনেক শিক্ষার্থীর শারীরিক ক্রিয়াকলাপ ও খেলাধুলার জন্য বাড়ির ভেতর পর্যাপ্ত জায়গা ছিল না। গবেষণায় দেখা গেছে, ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর বাড়ির বাইরে শারীরিক ক্রিয়াকলাপের সুযোগ ছিল না, ৫০ শতাংশের ঘরের মধ্যেও শারীরিক ক্রিয়াকলাপের করার সুযোগ ছিল না। স্বাভাবিকভাবেই, শিশুরা শিক্ষা, বিনোদন ও বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য ইলেকট্রনিক ডিভাইসের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে।

সীমিতভাবে হলেও বর্তমানে অধিকাংশ বিদ্যালয় সশরীরে ক্লাস ও অন্যান্য নিয়মিত কার্যক্রম শুরু করেছে। এখন শিক্ষক ও প্রশাসনের সময় এসেছে শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে কাজ করার। বলা বাহুল্য যে, শিক্ষার্থীদের ক্লাস ছাড়াও স্কুলে খেলাধুলা ও অন্যান্য শারীরিক ক্রিয়াকলাপে আরও বেশি ব্যস্ত থাকতে হবে। বাবা-মায়ের উচিত সন্তানদের আরও বেশি সময় দেওয়া এবং তাদের ছবি আঁকা ও ক্রাফটিংয়ের মতো সৃজনশীল কাজে যুক্ত করা। যাতে তারা ইলেকট্রনিক ডিভাইসে আসক্ত না হয়। স্কুল ও বাড়ি উভয়ের সহযোগিতায় আমরা আশা করি শিক্ষার্থীরা স্ত্রিনে আসক্তির সমস্যা কাটিয়ে উঠবে।

Comments

The Daily Star  | English

Enquiry panel to find reasons for stock market downtrend

The four-member committee will submit a report in 10 workdays

32m ago