তপুর গোলে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে সাফে বাংলাদেশের শুভ সূচনা

ছবি: সংগৃহীত

শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ফিফা র‍্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়ে থাকা শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দাপট দেখাল বাংলাদেশ। খুব বেশি নিশ্চিত সুযোগ তৈরি করতে না পারলেও স্পট-কিক থেকে বল জালে পাঠাতে ভুল করলেন না ডিফেন্ডার তপু বর্মণ। তার গোলে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ১৩তম আসরে শুভ সূচনা করল অস্কার ব্রুজোনের দল।

শুক্রবার আসরের আয়োজক মালদ্বীপের রাজধানী মালেতে উদ্বোধনী ম্যাচে ১-০ গোলে জিতেছে র‍্যাঙ্কিংয়ের ১৮৯তম স্থানে থাকা বাংলাদেশ। দ্বিতীয়ার্ধের প্রায় পুরোটা সময় ১০ জন নিয়ে খেলা শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচের ৫৬তম মিনিটে জয়সূচক গোলটি করেন বসুন্ধরা কিংসের তপু।

৫৮ শতাংশ সময়ে বল পায়ে রাখার পাশাপাশি গোলমুখে বাংলাদেশ শট নেয় ২০টি। এর মধ্যে লক্ষ্যে ছিল চারটি। বিপরীতে, শ্রীলঙ্কা নয়টি শট নিলেও একটিও লক্ষ্যে রাখতে পারেনি। অর্থাৎ রক্ষণে তারিক কাজী-বিশ্বনাথ ঘোষরা তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করেন ভালোভাবে।

প্রথম মিনিট থেকে বল নিজেদের পায়ে রাখলেও গোলমুখে গিয়ে বারবার খেই হারিয়ে ফেলছিল বাংলাদেশ। পাল্টা আক্রমণে র‍্যাঙ্কিংয়ের ২০৫তম দল শ্রীলঙ্কাও চেষ্টা করছিল লাল-সবুজের প্রতিনিধিরদের রক্ষণে ভীতি ছড়ানোর।

২০তম মিনিটে সতীর্থের ফ্রি-কিকের পর লঙ্কান ডিফেন্ডার হার্শা ফার্নান্দোর দূরপাল্লার শট চলে যায় পোস্টের ওপর দিয়ে। দুই মিনিট পর ডি-বক্সের প্রান্ত থেকে বাংলাদেশ অধিনায়ক জামালের বাঁ পায়ের ভলিও লক্ষ্যে থাকেনি।

৩৬তম মিনিটে মিডফিল্ডার কাভিন্দু ইশান ডান প্রান্ত দিয়ে আক্রমণে উঠে যে শট নেন, তা পরীক্ষায় ফেলতে পারেননি বাংলাদেশের গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকোকে। পরের মিনিটে চালানা চামিরার শটও নিশানা খুঁজে পায়নি।

৩৯তম মিনিটে বাংলাদেশের ভালো একটি আক্রমণ পর্যবসিত হয়। বামদিক থেকে দ্রুতগতিতে এগিয়ে ডি-বক্সে ক্রস ফেলেন রাকিব হোসেন। কিন্তু মিডফিল্ডার জুয়েল রানা বল পা ছোঁয়ানোর আগেই তা ক্লিয়ার করেন শ্রীলঙ্কার ডিফেন্ডাররা।

প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে গোল প্রায় পেয়েই গিয়েছিল বাংলাদেশ। বাম প্রান্ত থেকে ডিফেন্ডার ইয়াসিন আরাফাতের ক্রসে তপুর হেড ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন লঙ্কান গোলরক্ষক সুজন পেরেরা।

ছবি: সংগৃহীত

বিরতির পর দুই দলের ওই একটি শটই ছিল লক্ষ্যে। দ্বিতীয়ার্ধে একটি পরিবর্তন নেমে খেলতে নামে বাংলাদেশ। জুয়েলের জায়গায় মাঠে নামেন সাদ উদ্দিন।

৫১তম মিনিটে উইঙ্গার মোহাম্মদ ইব্রাহিমের শট চলে যায় গোলপোস্টের বাইরে দিয়ে। তবে পাঁচ মিনিট পরই অবসান হয় বাংলাদেশের অপেক্ষার। নিজেদের ডি-বক্সে বল হাতে লাগান লঙ্কান ডিফেন্ডার ডাকসন পুসলাস। রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজানোর পাশাপাশি লাল কার্ড দেখিয়ে মাঠ ছাড়ার নির্দেশ দেন তাকে। এটি ছিল তার দ্বিতীয় হলুদ কার্ড। প্রথমার্ধের শুরুর দিকে বিপজ্জনক ফাউল করে প্রথম হলুদ কার্ড পেয়েছিলেন তিনি।

স্পট-কিক নেওয়ার গুরুদায়িত্ব পড়ে তপুর কাঁধে। ১২ গজ দূর থেকে মাথা ঠাণ্ডা রেখে দারুণ দক্ষতায় লক্ষ্যভেদ করেন তিনি। তার মাপা শট বাম দিকের জাল কাঁপালেও পেরেরা আগেই ঝাঁপ দিয়েছিলেন ডানে।

৭৪তম মিনিটে জোড়া বদল আনেন বাংলাদেশের স্প্যানিশ কোচ ব্রুজোন। স্ট্রাইকার সুমন রেজার পরিবর্তে মতিন মিয়া ও ইব্রাহিমের পরিবর্তে মাহবুবুর রহমান সুফিল মাঠে ঢোকেন।

পরের মিনিটে লঙ্কান বদলি ফরোয়ার্ড ডিলন ডি সিলভার গড়ানো শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ছয় মিনিট পর সাইফ স্পোর্টিংয়ের জামালের ক্রসে মতিনের হেড চলে যায় পোস্টের কাছ দিয়ে। নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে বিপলুও পারেননি ব্যবধান বাড়াতে।

একজন কম নিয়ে খেলেও শেষদিকে শ্রীলঙ্কা বেশ কিছু আক্রমণ রচনা করে। তবে তারা একবারের জন্যও জিকোর পরীক্ষা নিতে ব্যর্থ হয়। ফলে রক্ষণ জমাট রেখে পূর্ণ পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ে সাফের সাবেক চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ।

আগামী সোমবার একই ভেন্যুতে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে আসরের রেকর্ড সাতবারের চ্যাম্পিয়ন শক্তিশালী ভারতের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় বিকাল পাঁচটায়।

Comments

The Daily Star  | English

7 colleges to continue operating under UGC until new university formed

Prof AKM Elias, principal of Dhaka College, to be appointed as the administrator

44m ago