মিশর থেকে উড়োজাহাজ ভাড়ায় ক্ষতি ১১০০ কোটি: বিমানের সাবেক ২ কর্মকর্তার সাক্ষ্য গ্রহণ

প্রতীকী ছবি। স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

মিশর থেকে ৭ বছর আগে ভাড়া আনা ২টি উড়োজাহাজের ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা ক্ষতির ঘটনা তদন্তে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পরিচালনা পর্ষদের সাবেক চেয়ারম্যান এয়ার মার্শাল (অব.) জামাল উদ্দীন আহমেদ ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এএম মোসাদ্দেক আহমেদের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।

আজ বুধবার বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি তাদের সাক্ষ্য নেন।

বোয়িং ৭৭৭-২০০ উড়োজাহাজ ২টি ভাড়া আনার সঙ্গে জড়িতদের তলব করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় গত ৮ সেপ্টেম্বর।

সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, 'আমরা তাদের কথা শুনেছি। তারা লিখিত বক্তব্য দিয়েছেন। আরও বক্তব্য দিবেন। আমরা তাদের আরও কথা শুনবো। আমরা আরও পর্যালোচনা করবো।'

বৈঠকের পর বিমানের সাবেক চেয়ারম্যান জামাল উদ্দীন সাংবাদিকদের বলেন, 'মিশরের উড়োজাহাজ লিজ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তারা আমাদের বক্তব্য শুনেছেন।'

উড়োজাহাজ ভাড়া নিয়ে কী বক্তব্য দিয়েছেন জানতে চাইলে সাবেক বিমান বাহিনী প্রধান কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

সংসদীয় কমিটির কয়েকজন সদস্যের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

আজ বুধবার সংসদীয় কমিটি ২টি বৈঠক করে। বেলা ১১টায় নিয়মিত বৈঠকের পর দুপুর ২টায় মিশরীয় উড়োজাহাজ লিজ নিয়ে বৈঠকে বসেন তারা। সাধারণত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে সংসদ সচিবালয়ের কয়েকটি শাখার কর্মকর্তা অংশ নেন। প্রথম বৈঠকে সব শাখার কর্মকর্তারা থাকলেও দ্বিতীয় বৈঠকে কয়েকটি শাখার কর্মকর্তারা ছিলেন না।

ইজিপ্ট এয়ার থেকে ৫ বছরের চুক্তিতে বোয়িং ৭৭৭-২০০ ইআর উড়োজাহাজ ২টি লিজ নিয়েছিল বিমান। এর একটি বিমানের বহরে যুক্ত হয় ২০১৪ সালের মার্চে এবং অন্যটি একই বছরের মে মাসে।

এক বছরের কম সময় ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে ফ্লাইট পরিচালনার পর একটির ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। উড়োজাহাজটি সচল রাখতে ইজিপ্ট এয়ার থেকেই ভাড়ায় আনা হয় আরেকটি ইঞ্জিন।

দেড় বছরের মাথায় নষ্ট হয় বাকি ইঞ্জিনটিও। উড়োজাহাজটি সচল রাখতে ইজিপ্ট এয়ার থেকে আবারও ভাড়ায় আনা হয় আরেকটি ইঞ্জিন। পরে ভাড়ায় আনা ইঞ্জিনও নষ্ট হয়ে যায়।

সেই ইঞ্জিন মেরামত করতে যুক্তরাষ্ট্রের আরেকটি প্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয়। তবে কোনো সময় নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়নি। সে কারণে ইজিপ্ট এয়ার এবং মেরামতকারী কোম্পানি- উভয়কেই অর্থ দিতে হয়েছে বিমানকে।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় গত বছরের অক্টোবর মাসে সংসদীয় কমিটির বৈঠকে জানায়, দুটি বোয়িং ৭৭৭-২০০ উড়োজাহাজের পেছনে ৫ বছরে বাংলাদেশ বিমানের ক্ষতি হয়েছে ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা।

ওই বৈঠকে জানানো হয়, এই উড়োজাহাজ ২টি চালিয়ে রাজস্ব আদায় হয়েছিল ২ হাজার ২০০ কোটি টাকা। খরচ হয়েছিল ৩ হাজার ৩০০ কোটি টাকা।

উড়োজাহাজের ২টির জন্য প্রতিমাসে বিমান ১১ কোটি টাকা করে ভর্তুকি দিয়ে আসছিল। সেই দায় থেকে ওই বছরের মার্চ মাসে মুক্তি পেয়েছে বিমান।

গত দশম সংসদের বিমান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি এই বিমান ২টি লিজ নেওয়া নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিল।

উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য বিমান প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, আশেক উল্লাহ রফিক, আনোয়ার হোসেন খান, সৈয়দা রুবিনা আক্তার ও কানিজ ফাতেমা আহমেদ অংশ নেন।

Comments

The Daily Star  | English
US attack on Iran nuclear sites

Iran denounces US attack as ‘outrageous’

Iran says 'no signs of contamination' after US attacks on key nuclear sites

10h ago