সৈয়দ শামসুল হকের ৩টি অপ্রকাশিত কবিতা

বাংলা সাহিত্যের সব শাখাতেই সৈয়দ শামসুল হকের সাবলীল পদচারণার জন্য তাকে 'সব্যসাচী লেখক' বলা হয়। ২০১৬ সালের আজকের এই দিনে মারা যান। কিন্তু মৃত্যুর শেষভাগেও সক্রিয় ছিলেন বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। আনোয়ারা সৈয়দ হকের সৌজন্যে সৈয়দ শামসুল হকের ৩টি অপ্রকাশিত কবিতা প্রকাশিত হলো। জীবনের শেষ দিকে কবিতাগুলো বিভিন্ন কাগজের প্যাকেটের ওপরে, সিগারেটের কার্টনে, খামের পেছনে, দেশলাইয়ের খোলের ভেতরে লেখা। কোথাও তারিখ আছে কোথাও নেই, নেই শিরোনাম--সেভাবেই রাখা হয়েছে।

শিরোনামহীন

ভুলে যাও সন্ধ্যে বলে কিছু আছে
একটি তারার ফুল অন্ধকার গাছে
ভুলে যাও লকেটের মতো চাঁদ
মনে রেখো একখানি হাত
কেবল তোমার দিকে, আর কিছু নয়-

এভাবেই থমকে থাকে যখন সময়
তুমি আর আমি বসে মুখোমুখি
ব্যস, শুধু এইটুকুই
এতেই দিনের আলো মরে যায় যাক
এই হাতখানি থাক
সন্ধ্যার গভীরে যাক রাতের গভীরে
ভিজে যাক হৃদয় শিশিরে
সারারাত সারারাত
তোমার হাতের দিকে একখানি হাত।

১০ অক্টোবর ২০১৪

শীরোনামহীন

কবিরও বয়স বাড়ে আর দশটা মানুষেরই মতো
বুড়ো হয়, হতে হতে তারও হয় বাড়ে দূর্বাঘাস
এমন কবিও আছে, অকালেই! অথবা নিহত!
শীত গ্রীষ্মে কবিও কাতর হয়, জ্বরে হাসঁফাঁস।

কিন্তু যে কবিতা নামে কলমের মুখে অগ্নিফুল-
শব্দ আর ধ্বনিতে শোনিতে যার সমুদ্রের রোল
তারও কি বয়স বাড়ে? কবিতারও হয় শাদা চুল?
     কীর্তনিয়া খোল?

না বাপু আখেরে দেখি কবিদের বয়স বাড়লেও
কবিতা স্বর্গের পরী- নৃত্যপরা- ভারা নাই তার।

শীরোনামহীন

লাইনে দাঁড়িয়ে আছি-
নামধাম বিস্তারিত দরখাস্তে আছে।
পাসপোর্ট চাই।
দেশ ছেড়ে চলে যাবো বলে নয়,

ছেড়ে যেতে পারি ... নিশ্চয়তা চাই
কখনো যেতেই যদি হয় তবে-
আইন সম্মত পথে যেন যেতে পারি-
সীমান্তের কাঁটাতার, বন্দুক পাহারা -
     ভয় পাই।
     কাপুরুষ? মেনে নিচ্ছি। 

     (অসমাপ্ত)

ছবি: দ্য সৈয়দ শামসুল হক ফাউন্ডেশন

Comments

The Daily Star  | English

3 die of dengue as daily hospitalisations hit record high this year

Nearly 500 patients admitted in 24 hours as total cases rise to 12,763

2h ago