সড়কে মৃত্যু দুর্ঘটনার চেয়েও বেশি কিছু

স্টার ফাইল ফটো

প্রতিটি মৃত্যুই দুঃখজনক। কিন্তু আমাদের সড়কে যা ঘটে তার বেশিরভাগই এড়ানো সম্ভব। আরও পরিকল্পিত সড়ক, যানবাহনের ফিটনেসের ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা, বাসচালকদের জন্য উন্নত প্রশিক্ষণ ও জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা তৈরির মাধ্যমে এসব মৃত্যু সহজেই এড়ানো যেতে পারে। পুলিশের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম ৭ মাসে দেশে ৩ হাজার ২৫৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ হাজার ৯৫ জন নিহত হয়েছেন। এ সংখ্যা টুইন টাওয়ার হামলায় মোট নিহত এবং আফগানিস্তান যুদ্ধে ২০ বছরে নিহত মোট মার্কিন সেনার চেয়ে বেশি।

উপরের এ পরিসংখ্যান হিসেব করলে দেখা যায়, ওই ৭ মাসের প্রতি মাসে গড়ে ৪৪২ জন এবং প্রতিদিন গড়ে ৪ জন সড়কে প্রাণ হারিয়েছেন। প্রশ্ন হচ্ছে, সড়কে এই ট্র্যাজেডি রোধে কর্তৃপক্ষ কী করেছে? সম্ভবত কিছুই না। নিষ্ক্রিয়তাকে এ ক্ষেত্রে মৃত্যুর চেয়ে বড় ট্র্যাজেডি মনে হচ্ছে। কারণ নাগরিকদের এত বেশি প্রাণহানির পরেও, কোনো সরকারি উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না।

অনেকেই আশা করেছিলেন, বিধিনিষেধ ও বাস বন্ধ থাকার ফলে সড়ক দুর্ঘটনা অনেকটাই কমে যাবে। কিন্তু, ঘটেছে ঠিক উল্টো। কারণ, ব্যাটারিচালিত রিকশা, ভ্যান ও অন্যান্য লাইসেন্সবিহীন যানবাহন ঠিকই সড়কে চলাচল করেছে।

এই সময়টায় মৃত্যুর সংখ্যা বেশি হওয়ার কারণ যা-ই হোক না কেন, সত্যি কথা হচ্ছে, আমাদের সড়কগুলো বিশ্বের সবচেয়ে অনিরাপদ সড়ক। বিশ্বের যে কোনো সড়ক দুর্ঘটনার তালিকার শীর্ষে থাকে আমাদের রেকর্ড সংখ্যক দুর্ঘটনা।

সড়ক নির্মাণের সময় পরিকল্পনার ঘাটতি থেকে শুরু করে বাস ও ট্রাকের চলাচল তদারকি এবং চালকদের প্রশিক্ষণ- দুর্ঘটনার কারণ হয়ে উঠা সবকিছুকে আধুনিক সড়ক ব্যবস্থার প্রয়োজন অনুসারে গুরুত্বের সঙ্গে দেখতে হবে এবং সংস্কার করতে হবে। আমাদের দেশে যানবাহনের ফিটনেস না থাকা একটি গুরুতর সমস্যা। দুর্নীতির কারণে আনফিট যানবাহনও সড়কে চলার সুযোগ পায়। ফলে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটে।

আমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন বিশেষ টাস্কফোর্সের প্রতি নিজেদের কাজ গুরুত্ব দিয়ে করার এবং নিজেদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করার আহ্বান জানাচ্ছি। ছোট যানবাহনের বেপরোয়া চলাচল যে একটি বড় সমস্যা, সেই ব্যাপারে বিআরটিএর চেয়ারম্যানের সঙ্গে আমরা একমত। তবে, এটি কোনোভাবেই একমাত্র সমস্যা নয়। নিয়ন্ত্রণ ও তদারকির ক্ষেত্রে আরও কিছু সমস্যা রয়েছে, যেগুলো অবিলম্বে সমাধান করা প্রয়োজন। অর্থনৈতিক অগ্রগতির সঙ্গে আমাদের অন্যান্য কিছু বৈশিষ্ট্যও থাকতে হবে, যেগুলো আমাদেরকে সার্বিক অগ্রগতির দিকে নিয়ে যাবে। সড়ক নিরাপত্তা সেগুলোর একটি।

Comments

The Daily Star  | English

No plan to lift ban on extremist groups

The interim government does not have any plan to lift the ban on extremist groups that were outlawed in recent decades.

3h ago