‘অপরাধীরা ঘুরে বেড়ায়, ঝুমন দাশ সাত বার জামিন চেয়েও পায় না’

ছবি: সংগৃহীত

সুনামগঞ্জের শাল্লায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার ঝুমন দাশের মুক্তির দাবিতে প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী।

আজ বুধবার রাজধানীর শাহবাগে অবস্থিত জাতীয় জাদুঘরের সামনে সংগঠনটির পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই আয়োজন করা হয়।

সমাবেশে যুব ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খান আসাদুজ্জামান মাসুম বলেন, 'শাল্লায় সাম্প্রদায়িক হামলার পর আমরা সেখানে গিয়েছি। ঘূর্ণিঝড়ের পর যেমন একটা এলাকা লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়, সেখানে ঠিক তাই হয়েছে। এক জন ধর্ম ব্যবসায়ী যে, ধর্মীয় উন্মাদনা দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করে তার বিরুদ্ধে ঝুমন দাশ সত্য কথা বলেছিলেন বলে তার নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে। কিন্তু যারা সাম্প্রদায়িক হামলা চালিয়েছিল তারা নিজ এলাকায় বহাল তবিয়তে দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছে।ঝুমন দাশের মুক্তি হচ্ছে না। হয়তো এর পিছনে রাঘব বোয়ালের হাত রয়েছে।'

ঝুমন দাশের স্ত্রী সুইটি রাণী দাশ বলেন, 'আমার সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি আমার স্বামী। আমি সন্তান নিয়ে খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছি। আমি দ্রুত সময়ে আমার স্বামীর মুক্তি চাই। আমি নিজেও অসুস্থ, নিরুপায় হয়ে স্বামীর মুক্তির দাবিতে এখানে এসে দাঁড়িয়েছি। আমি হয়রানির শিকার হচ্ছি। সাত বার জামিন চাওয়ার পরও আমার স্বামী জামিন পায়নি। যারা অপরাধী তারা নির্ভয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমার স্বামী জামিন পাচ্ছে না। কী অপরাধ ছিলো আমার স্বামীর?'

সভাপতির বক্তব্যে উদীচীর সাধারণ সম্পাদক জামশেদ আনোয়ার তপন বলেন, 'আমরা এই সমাবেশের মাধ্যমে সরকারের কাছে দাবি জানাবো, আপনারা ঝুমন দাশের মুক্তি দিন এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করুন।এই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে অন্যায়ভাবে কাউকে গ্রেপ্তার করা হবে না, কোনো সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হবে না বলা হয়েছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত ১৭৬ জন সাংবাদিককে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের অপরাধ, তারা তাদের লেখনীর মাধ্যমে যারা দুর্নীতি করছে, রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটপাট করছে, অন্যায় অপরাধ করছে তাদের বিরুদ্ধে কথা বলেছে। এই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন জনগণকে নিরাপত্তা দেয় না।এই আইন লুটপাটকারীদের নিরাপত্তা দেয়। এই স্বাধীনতা, মৌলিক মানবাধিকার ও ৭২ এর সংবিধানের পরিপন্থী।তাই এই আইন বাংলাদেশে থাকতে পারে না। আমরা অবিলম্বে এই আইন বাতিলের দাবি জানাচ্ছি।'

উদীচীর সাধারণ সম্পাদক জামশেদ আনোয়ার তপনের সভাপতিত্বে এবং সহকারী সাধারণ সম্পাদক সঙ্গীতা ইমামের পরিচালনায় সমাবেশ বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন, যুব ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খাঁন আসাদুজ্জামান মাসুম, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন কমিটির সদস্য কাজল দেবনাথ, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার ইমতিয়াজ মাহমুদ, ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের সহ-সভাপতি অনিক রায়, ঝুমন দাশের স্ত্রী সুইটি রাণী দাশ প্রমুখ।

লিখিত বার্তা পাঠিয়ে সমাবেশে সংহতি জানিয়েছেন মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল।

Comments

The Daily Star  | English

‘Shockingly insufficient’

"The proposed decision to allocate USD 250 billion per year for all developing countries is shockingly insufficient," said the adviser

3h ago