ব্যাংক কর্মকর্তা নির্যাতন ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগে মামলা

রন ও দিপু সিকদারের নাম বাদ দিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন

রন হক সিকদার ও দিপু হক সিকদার। ছবি: সংগৃহীত

ঋণের জন্য এক্সিম ব্যাংকের দুই কর্মকর্তাকে অপহরণ, নির্যাতন ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগে দায়ের করা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন থেকে সিকদার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রন হক সিকদার ও তার ভাই দিপু হক সিকদারের নাম বাদ দিয়েছে পুলিশ।

তদন্ত কর্মকর্তা ও পুলিশের গোয়েন্দা শাখার উপ-পরিদর্শক মো. রিপন উদ্দিন গত ২৯ জুলাই ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। সেখানে বলা হয়েছে, উভয় পক্ষই আদালতের বাইরে বিষয়টি নিষ্পত্তি করেছেন।

সিএমএম আদালতের জেনারেল রেকর্ডিং অফিসের এক কর্মকর্তা গতকাল সোমবার দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য জানিয়ে বলেন, 'আদালতের নিয়মিত কার্যক্রম শুরুর পর তদন্ত প্রতিবেদনটি গ্রহণ করা হবে কিনা সে বিষয়ে আদালতই সিদ্ধান্ত নেবেন।'

প্রতিবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা বলেছেন, অভিযোগকারী ও অভিযুক্ত উভয়ই গত ৮ জুলাই একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন। সেখানে বলা হয়েছে যে, তারা আদালতের বাইরে বিষয়টি নিষ্পত্তি করেছেন।

এই চুক্তির একটি অনুলিপি তদন্ত প্রতিবেদনের সঙ্গে সংযুক্ত করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা।

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, মামলাটিতে 'তথ্যগত ভুল' আছে। কারণ, আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যালিস্টিকস রিপোর্টে দেখা যায়, যে অস্ত্র থেকে গুলি ছোড়ার কথা বলা হয়েছিল সেটির সঙ্গে মিলছে না।

চুক্তির অনুলিপি ও ব্যালিস্টিকস রিপোর্ট পাওয়ার পর তদন্ত কর্মকর্তা আদালতের সামনে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে মামলার অভিযোগ থেকে দুই ভাইকে মুক্তি দেওয়ার আবেদন করেছেন।

এক্সিম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ হায়দার আলী মিয়া গতকাল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এই বিষয়ে একটি চুক্তি হয়েছে।'

গত ১২ ফেব্রুয়ারি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের পর রন হককে গ্রেপ্তার করা হয়। বাবার মৃত্যুর পর সেদিন তিনি দুবাই থেকে ফিরে আসেন। একই দিন সিএমএম আদালতে হাজির করা হলে তাকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেওয়া হয়।

গত বছরের ১ মে এক্সিম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ হায়দার আলী মিয়া ও অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ ফিরোজ হোসেনকে নির্যাতন, হত্যা চেষ্টার অভিযোগে ব্যাংকের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) সিরাজুল ইসলাম সিকদার গ্রুপের রন ও দিপুর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

মামলার বিবৃতি অনুযায়ী, ৫০০ কোটি টাকার ঋণের জন্য বন্ধক রাখা দুই ভাইয়ের সম্পত্তির মূল্য বাড়িয়ে দিতে অস্বীকার করায় ওই ব্যাংকের দুই শীর্ষ কর্মকর্তার ওপর হামলা চালানো হয়।

এতে আরও বলা হয়েছে, ব্যাংক কর্মকর্তাদের বনানীর একটি বাড়িতে আটকে রেখে দুই ভাই নির্যাতন করেন এবং অস্ত্রের মুখে তাদের সাদা কাগজে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করেন।

মামলা নথিভুক্ত হওয়ার ছয় দিন পর গত বছরের ২৫ মে দুই ভাই সরকারি অনুমতি নিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে ব্যাংককে পালিয়ে যান।

একই বছরের ২০ জুলাই এই মামলায় বিদেশ থেকে আগাম জামিনের জন্য আবেদন করায় হাইকোর্ট রন ও তার ভাইকে জরিমানা করেন।

তাদের জামিন আবেদন প্রত্যাখ্যান করে হাইকোর্টের একটি ভার্চুয়াল বেঞ্চ দুই সপ্তাহের মধ্যে জরিমানা হিসেবে কোভিড-১৯ মহামারি রোধে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে প্রত্যেককে পাঁচ হাজার ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন।

তহবিলে পিপিই দেওয়ার পর দুই ভাইকে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়ে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়।

প্রতিবেদনটি ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছেন সুমন আলী

Comments

The Daily Star  | English
tax collection target for IMF loan

Talks with IMF: Consensus likely on exchange rate, revenue issues

The fourth tranche of the instalment was deferred due to disagreements and now talks are going on to release two tranches at once.

11h ago