অন্তঃসত্ত্বা নারীরা ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ঝুঁকিতে

অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দিন

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সন্তানসম্ভবা মায়েদের মারা যাওয়ার উদ্বেগজনক প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এক সপ্তাহ আগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) করোনা আক্রান্ত ৩০ জন এবং উপসর্গ নিয়ে আরও ২০ জন অন্তঃসত্ত্বা নারী ভর্তি ছিলেন। একদিন পর রাজধানীর মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪৫ জন সন্তানসম্ভবা মা কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হন। ঢামেকের পরিচালকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১ জুলাই থেকে ২৫ জুলাইর মধ্যে ১৪ জন অন্তঃসত্ত্বা নারী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
এখন পর্যন্ত এরকম কোনো আনুষ্ঠানিক পরিসংখ্যান নেই যাতে প্রমাণ হয় করোনাভাইরাসের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের প্রভাবে তাদের মৃত্যুর হার বেশি। তবে ২৫ জুলাই, যুক্তরাজ্যের অবস্টেট্রিক সার্ভিলিয়েন্স সিস্টেম থেকে পাওয়া তথ্য (যা জাতিয় তথ্য থেকে নেওয়া) ভিত্তিতে বলা যায়, মে মাসে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টটি ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে অন্তঃসত্ত্বা মায়েদের মধ্যে মাঝারি থেকে জটিল ধরনের সংক্রমণের হার উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। তারচেয়েও বেশি উদ্বেগজনক হচ্ছে, অন্তঃসত্ত্বা মায়েরা শুধুমাত্র ভাইরাসের বিরুদ্ধে দুর্বলই নন (সন্তানধারণের শেষের দিকে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা এবং ফুসফুসের কার্যকারিতা কমে যাওয়া), বরং তাদের অনেকেই অনাগত সন্তানের ক্ষতি হবে ভেবে ভ্যাকসিন নিতে চান না।
কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এক্ষেত্রে জানিয়েছে, সন্তানসম্ভবা মায়েদের ভ্যাকসিন দেওয়ার সম্ভাব্য ঝুঁকির তুলনায় উপকার বেশি। অন্তর্বর্তীকালীন সুপারিশটি করা হয়েছিল সন্তানসম্ভবা মায়েদের সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকির বিষয়টিকে মাথায় রেখে। এছাড়াও পশুদের ওপর চালানো পরীক্ষা থেকে পাওয়া ডেটা এবং ভ্যাকসিন দেওয়ার পর সংগৃহীত সার্ভিলিয়েন্স ডেটা থেকেও সন্তানধারণের সময়কালে ভ্যাকসিন নেওয়ার কোনো ক্ষতিকর প্রভাবের আলামত পাওয়া যায়নি। ভ্যাকসিনের কার্যকারিতাও অন্তঃসত্ত্বা নয় এমন নারীদের সঙ্গে তুলনীয়। সম্প্রতি সরকার জানিয়েছে, জাতীয় পরিচয়পত্রের পাশাপাশি পাসপোর্ট ও জন্ম নিবন্ধন সনদ ব্যবহার করেও কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য নিবন্ধন করা যাবে খুব শিগগির। ৬ আগস্ট এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। নিশ্চিতভাবেই এটি একটি প্রশংসনীয় ও বহুল প্রতীক্ষিত উদ্যোগ, কিন্তু একই সঙ্গে আমরা ২৯ জুলাই ল অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশনের দেওয়া লিগ্যাল নোটিশের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করছি, যেটিতে সরকারকে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে। আমরা একই সঙ্গে আহ্বান জানাই, অন্তঃসত্ত্বাদের ভ্যাকসিন নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে, এবং ভ্যাকসিন নিলে তাদের অথবা তাদের অনাগত সন্তানের কোনো ধরনের ক্ষতি হবে না, এই বিষয়টি সম্পর্কে আশ্বস্ত করতে। সন্তানসম্ভবা মায়েদের এসময়কার দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও তাদের সন্তানের নিরাপত্তার বিষয়টিকে মাথায় রাখতে হবে এবং সে অনুযায়ী তাদের সুরক্ষিত করতে হবে, যাতে একই সঙ্গে একাধিক জীবন বাঁচানো যায়।
ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছেন মোহাম্মদ ইশতিয়াক খান

 

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh struggles in home textile exports

Bangladesh losing out to Pakistan in home textile exports

Bangladesh has been struggling to recover lost work orders in the home textile segment, a significant volume of which shifted to Pakistan nearly two years ago.

15h ago