কষ্টের মাঝেও রিকশাচালকদের মুখে হাসি
রিকশা চালিয়ে ঘামে ভিজে গেছেন সিরাজ মিয়া (৪০)। রিকশা চালাতে কতটা কষ্ট হচ্ছে বোঝাই যাচ্ছে। কিন্তু, তার মধ্যেও গুনগুন করে গান গাইছেন তিনি। তার মন বেশ ভালো।
গাবতলী থেকে ফার্মগেট আসার সময় তিনি ভাড়া চেয়েছিলেন ২০০ টাকা। শেষ পর্যন্ত ১৬০ টাকায় রাজি হন।
করোনা মহামারিতে কষ্টে আছে নিম্নআয়ের মানুষ। তার মধ্যে প্রচণ্ড রোদে পুড়ে এতো কষ্টে রিকশা চালানোর সময়েও গান গাইবার মতো সুখের উৎস জানতে চাইলে সিরাজ মিয়া বলেন, ‘বহুদিন পর একটু ভালো রোজগার হচ্ছে। গত সোমবার রিকশা চালিয়ে এক হাজার ৬০০ টাকা রোজগার করেছি। গতকাল মঙ্গলবার হয়েছে এক হাজার ৮০০ টাকা। আজও রাত ৮টা বা ৯টা পর্যন্ত চালালে গতকালের মতোই আসতে পারে।’
সিরাজ মিয়া জানান, প্রতিদিন সকাল ৮টায় রিকশা নিয়ে বের হন তিনি। দুবার বিরতি নিয়ে রাত ৯টা পর্যন্ত চালিয়ে জমা ও খাওয়া খরচ বাদ দিয়ে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা আয় করাই বেশ কঠিন হয়ে পরে। সেখানে এখন যা আয় হচ্ছে তাতে আনন্দ হওয়াটাই স্বাভাবিক।
সিরাজ মিয়ার কথা ধরেই রাজধানীর মিরপুর, ফার্মগেট, কাওরান বাজার ও মগবাজার এলাকায় অন্তত ২০ জন রিকশাচালকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে একই রকম তথ্য।
তারা বলেন, এখন তাদের আয় বাড়ার কারণের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে রাস্তায় বাস না থাকা এবং মোটরসাইকেল ও গাড়ির রাইড শেয়ারিং বন্ধ থাকা। অফিসগামী মানুষকে খুঁজে নিতে হচ্ছে রিকশাই। সেই সঙ্গে অন্যান্য গাড়ি কম থাকায় তুলনামূলক অল্প সময়ের মধ্যেই যাত্রীকে তার গন্তব্যে পৌঁছে দিয়ে অন্য যাত্রী নিতে পারছেন তারা।
কোভিড-১৯ এর বিস্তার ঠেকাতে গত সোমবার সকাল ৬টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত সারা দেশে পণ্যবাহী যানবাহন ও রিকশা ছাড়া সব ধরনের গণপরিবহন বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয় সরকার। এতে করেই বেড়ে যায় রিকশার ওপর নির্ভরশীলতা।
এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে রিকশাচালকরা দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ পর্যন্ত ভাড়া বাড়িয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন অনেক যাত্রী।
Comments