বকেয়া বেতনের দাবিতে গাজীপুরে গার্মেন্টস শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ

বকেয়া বেতনের দাবিতে গাজীপুরের লক্ষ্মীপুরা এলাকায় ঢাকা-জয়দেবপুর আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন শ্রমিকরা। স্টাইল ক্রাফট লিমিটেড ও ইয়ংওয়ানস লিমিটেডের পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় অবরোধ শুরু করেন। সন্ধ্যা ৬টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত রাস্তা অবরোধ চলছিল।

শ্রমিকদের অবরোধে গাজীপুরের শিববাড়ী-চান্দনা সড়কে কমপক্ষে চার কিলোমিটার যানজট সৃষ্টি হয়।

কারখানার সুইং শাখার অপারেটর চামেলি ও খাদিজা জানান, গেল মে মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। কয়েক মাস ধরে আন্দোলন করে বেতন আদায় করতে হচ্ছে। মে মাসের বকেয়া বেতন ছাড়াও ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসের ওভারটাইম, অক্টোবর নভেম্বর মাসের ৫৩ শতাংশ বেতন, ২০১৭ সাল থেকে প্রত্যেক শ্রমিকের বাৎসরিক ছুটির ভাতা বকেয়া রয়েছে।

শ্রমিকেরা জানান প্রত্যেক শ্রমিকের সর্বনিম্ন বাৎসরিক ছুটির ভাতা পাঁচ হাজার টাকা। বেতনের ওপর নির্ভর করে ভাতা বেশি হতে পারে। প্রত্যেক শ্রমিকের কমপক্ষে ৪০ ঘণ্টা ওভারটাইম জমা হয়েছে। প্রতি ঘণ্টায় একজন শ্রমিকের মজুরি কমপক্ষে ৬০ টাকা। বেতনের ওপর নির্ভর করে ওভারটাইম মজুরি বেশি হতে পারে। দুই কারখানায় প্রায় ছয় হাজার শ্রমিক কাজ করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও শ্রমিকেরা জানান, বকেয়া বেতনের দাবিতে সকাল ৮টায় শ্রমিকেরা কারখানায় এসে কাজে যোগ না দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। সকাল সাড়ে ৯টায় তারা চান্দনা-শিববাড়ী সড়কের লক্ষীপুরা এলাকায় অবস্থান নেন। পাথর, কাঠ ও ইট দিয়ে সড়কে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হয়।

ঢাকা থেকে আসা গাজীপুর পরিবহন লিমিটেডের চালক রবিউল ইসলাম দুপুর ১টার দিকে জানান, সাড়ে ১১টায় অবরোধে আটকা পড়েন। আধঘণ্টা অপেক্ষার পর সব যাত্রী গাড়ি থেকে নেমে চলে গেছে।

ভিন্ন পথ দিয়ে ঢাকা যাওয়ার সময় তাকওয়া পরিবহনের চালক তোফাজ্জল হোসেন বলেন, সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত অবরোধে আটকা থাকার পর উল্টো পথে চলে এসেছি। আমার মতো যারা বিকল্প পথ চেনেন তারা ভিন্ন পথে চলে যাচ্ছেন।

গাজীপুর জজ আদালতের আইনজীবী এমদাদুল হক বলেন, অবরোধের কারণে সকালে দুই কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে এসেছি। অনেক সহকর্মী ও মক্কেল দেরি করে আদালতে এসেছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শ্রমিক জানায়, গত এপ্রিল মাসের বেতন ভাতা ও ঈদ বোনাস পরিশোধের দাবিতে শ্রমিকেরা আন্দোলনে নামে। আন্দোলনের মুখে তখন আংশিক পাওনা পরিশোধ করা হয়।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক সার্জেন্ট সাজেদুল শাহনেওয়াজ জানান, শ্রমিক ও মালিকপক্ষের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হয়েছে। সন্ধ্যা ৬টায় তিনি জানান, আশা করছি শ্রমিকেরা অবরোধ তুলে নেবে। তাদেরকে অনেক বোঝনো হচ্ছে।

কারখানার কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে গেলে নিরাপত্তাকর্মী সাহিদ জানান, কর্মকর্তারা কেউ অফিসে নেই। আজ কেউ অফিসে আসেননি। কারও ফোন নম্বর দিতেও অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Bangladeshis worry amid US immigration crackdown

The United States has deported at least 31 Bangladeshis after President Donald Trump took a tough immigration policy.

6h ago