১১ কোটির কেনাকাটায় ৪ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ

ছবি: সংগৃহীত

চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের ওষুধ ও অন্যান্য চিকিৎসা সামগ্রী কেনাকাটায় চার কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গতকাল রোববার দিনব্যাপী অনুসন্ধান চালিয়েছে।

তবে এ বিষয়ে কোনো কথা বলেননি তদন্ত কমিটির কেউ।

গত বছরের জুনে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালসহ চার উপজেলার জন্য মহামারির সময় জরুরি ওষুধ, প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র ও সার্জিক্যাল মালামাল ক্রয়ে ১১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এই কেনাকাটায় অনিয়মের অভিযোগ উঠলে তদন্ত কমিটি গঠন করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

এই কমিটির সদস্যরা হলেন- খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. বিধান চন্দ্র ঘোষ, আবাসিক মেডিকেল অফিসার সুভাষ রনজন হালদার ও অফিস সহকারী আলিমুজ্জামান হালদার। কমিটির প্রধান ডা. বিধান চন্দ্র ঘোষ।

অভিযোগ রয়েছে, বরাদ্দের টাকা আসার পর চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন ডা. এএসএম মারুফ হাসান চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শামীম কবীরকে প্রধান করে একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করেন। ওই বোর্ড স্থানীয়ভাবে ঠিকাদারের মাধ্যমে কেনাকাটা শেষে সবকিছু বুঝে নিয়ে বিল পরিশোধের জন্য জেলা হিসাবরক্ষণ অফিসে পাঠায়।

এই কেনাকাটায় চরম অনিয়ম হয়েছে বলে ২০২০ সালের ২৮ জুন প্রতিবেদন প্রকাশ করে একটি অনলাইন সংবাদমাধ্যম। এতে বলা হয়, দুই কোটি ৭৫ লাখ টাকার মালামাল ক্রয় করা হয়েছে। সাড়ে চার কোটি টাকার কোনো ওষুধই কেনা হয়নি।

সংবাদ প্রকাশের পর ২০২০ সালের ১ জুলাই চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. শামীম কবীর বাদী হয়ে দুই সংবাদকর্মীর নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন।

মামলায় আসামি করা হয় দৈনিক জনবাণী পত্রিকার চুয়াডাঙ্গা সংবাদদাতা আহসান আলম ও চুয়াডাঙ্গার স্থানীয় পত্রিকা পশ্চিমাঞ্চলের সংবাদদাতা সাইফ জাহানকে।

তারা গত ৮ জুলাই হাইকোর্ট থেকে জামিন পান। মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে।

মামলার বাদী ডা. শামীম কবীর বর্তমানে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।

তদন্ত কমিটি সারাদিন চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে ক্রয়কৃত ওষুধের স্টক, এমএসআর প্রাপ্তির নথি, মজুদ বহি ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে।

এ ছাড়াও তারা জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন, চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সাবেক আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা, চার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, হিসাবরক্ষকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের।

এ বিষয়ে একাধিকবার প্রশ্ন করেও ডা. এএসএম মারুফ হাসান ও ডা. শামীম কবীরের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তারা বলেছেন, বিষয়টি তদন্তাধীন থাকায় তারা কোনো মন্তব্য করবেন না।

তদন্ত কমিটির প্রধান ডা. বিধান চন্দ্র ঘোষ বলেন, ‘ঘটনার সত্যতা নিরূপণ করতে একটি প্রাথমিক তদন্ত করা হয়েছে।’

তিনি জানান, তদন্তের জন্য প্রয়োজনীয় সকল নথিপত্র তিনি চুয়াডাঙ্গা থেকে খুলনায় নিয়ে গেছেন এবং অভিযুক্তদের সঙ্গে কথা বলেছেন।

Comments

The Daily Star  | English

US retailers lean on suppliers to absorb tariffs

Rather than absorbing the cost or immediately passing it on to consumers, many US apparel retailers and brands have turned to their suppliers in Bangladesh, demanding they share the pain

7h ago