বরিশাল থেকে ঢাকায় সীমিত আকারে ইলিশ সরবরাহ শুরু, দাম বেড়েছে দেড়গুণ
বরিশালের পাইকারি ইলিশ বিক্রয় কেন্দ্র থেকে ঢাকায় সীমিত পরিসরে ইলিশ মাছ সরবরাহ শুরু হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে বরিশাল পোর্ট রোড পাইকারি ইলিশের আড়ত থেকে ১৬০০ কেজি ইলিশ ঢাকায় পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন সরবরাহকারীরা।
ইলিশ সরবরাহকারীদের সুপারভাইজার বাদশা মিয়া দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, সাধারণত ইলিশের চাহিদা এ সময়ে প্রচুর থাকে। কিন্তু লকডাউনের শুরুতে মাছ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর আজ তৃতীয় দিন থেকে ঢাকার বাজারে অল্প পরিমাণে আবার মাছ সরবরাহ শুরু হয়েছে। তবে, সরবরাহকৃত মাছের দাম অন্তত দেড়গুণ বেড়েছে।
তিনি জানান, এক কেজি ইলিশ মাছ ১৫০০ টাকা ও ৮০০ গ্রাম ওজনের মাছ এক হাজার টাকা কেজি দরে পাঠানো হচ্ছে। যা আগে ১০০০ টাকা ও ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতো।
তিনি আরও জানান, স্বাভাবিক সময়ে ৫-৬ গাড়িতে অন্তত ৩০০ থেকে ৪০০ মণ ইলিশ পাঠানো হতো। এখন পাঠানো হচ্ছে খুবই কম। এ পরিমাণ কমে আগের চেয়ে অন্তত ১০ ভাগের এক ভাগ হয়েছে।
বরিশাল পোর্ট রোড মৎস্য আড়তদার সমিতির সম্পাদক নীরব হোসেন টুটুল জানান, এ সময় অভয়াশ্রম থেকে মাছ ধরা বন্ধ। লকডাউনের কারণে তাদের বাইরের নদী থেকে মাছ ধরে সীমিত পরিসরে ঢাকায় পাঠাতে হচ্ছে।
এর ফলে, স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে দাম কিছুটা বেড়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘বাজারে তেমন ইলিশ নেই। জেলেরা বড় নদীতে জাল ফেলতে পারছেন না। স্থানীয় নদী থেকে ইলিশ সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠাতে হচ্ছে। এ মুহূর্তে ভোলার নদ-নদীতেই কিছু ইলিশ ধরা পড়ছে।’
মাছের আড়তে প্রায় দুই থেকে তিন হাজার শ্রমিক কাজ করলেও, আজ অধিকাংশ শ্রমিককে অলস বসে থাকতে দেখা গেছে।
শ্রমিকরা জানান, তারা সাধারণত লোড ও আনলোডের কাজ করে থাকেন। বাজারে মাছের সরবরাহ না থাকলে তাদের কাজের সুযোগ নেই। কাজ থাকলে দিনে ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত আয় করে থাকেন। গত দুই দিন কেউ কেউ কাজ পেলেও, অধিকাংশ শ্রমিক বেকার।
যোগাযোগ করা হলে বরিশালের মৎস্য কর্মকর্তা (ইলিশ) বিমল চন্দ্র দাস দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘অভয়াশ্রমে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত মাছ ধরা বন্ধের নির্দেশ আছে। এ সময় এখানকার নদীতে জেলেরা জাল ফেললেই, তাদের জেল-জরিমানা করা হচ্ছে। এতে আগামী মৌসুমে বড় আকারের ইলিশ পাওয়া সম্ভব হবে।’
বরিশাল মৎস্য অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আনিছুর রহমান তালুকদার জানান, স্বাভাবিক সময়ে বরিশাল বিভাগের মাছের আড়তগুলোতে কয়েক হাজার মণ ইলিশ সরবরাহ হলেও, এখন তা অন্তত দশ ভাগের এক ভাগে নেমে এসেছে।
Comments