সমাজ পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখা রুহুল আমিন

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার রুহুল আমিন। ছবি: সংগৃহীত

খুলনার পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি ইউনিয়নের কাশিমনগর গ্রামের এক দরিদ্র পরিবারে জন্ম রুহুল আমিনের। আর দশ জনের মতোই বেড়ে ওঠা, জীবনে সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়া। তবে, তফাত হলো— দীর্ঘ সময় ধরে তিনি কাজ করছেন জনমানুষের জন্যে। গ্রাম বাংলার মানুষের জন্যে কাজ করা রুহুলকে কেন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে দিন কাটাতে হচ্ছে? কী অপরাধ তার?

গ্রেপ্তার হওয়ার আগে রুহুল আমিনের নাম খুব বেশি মানুষ জানতেন না। অবশ্য কেউ নাম জানুক, সেই লক্ষ্যও তার ছিল না। রাজধানীর লাইম লাইটের বাইরে গিয়ে নীরবে কাজ করছিলেন রুহুল।

খুলনায় এইচএসসি শেষে ২০০৬ সালে ঢাকায় আসেন রুহুল৷ আর দশ জন সাধারণ মানুষের মতোই ঢাকায় কষ্ট করে তাকে টিকে থাকতে হয়েছে। কখনো একবেলা খেয়ে বন্ধুর মেসে থেকেছেন। কখনো নৈশপ্রহরীর চাকরি করে ফাঁকে ফাঁকে পড়াশোনা করেছেন। এভাবেই ক্রমাগত দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করে করেই ভর্তি হয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বাংলা বিভাগে। বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্পৃক্ত হন বাসদের রাজনীতির সঙ্গে। বাসদের ছাত্র সংগঠন সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক হন। আর সেখান থেকে হন সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। গণজাগরণ মঞ্চেও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি।

চেনা ছকেই হাঁটার কথা ছিল রুহুল আমিনের। ঢাবি থেকে পড়াশোনা শেষ করে হয়তো বিসিএস দেওয়া, দরিদ্র পরিবারের হাল ধরা, বাকি জীবনটা একটু নিশ্চয়তায় কাটানো। কিন্তু, সেই চেনা পথে হাঁটলেন না রুহুল। ঢাবি থেকে স্নাতক শেষ করলেও রাজনৈতিক কারণে স্নাতকোত্তর শেষ না করেই ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে রুহুল খুলনা শহরে চলে যান। খুলনায় গিয়ে একদল তরুণকে নিয়ে যুক্ত হন সুন্দরবন রক্ষা আন্দোলনে।

রুহুল সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট করাকালীনই বাসদ দুই ভাগে ভাগ হয়ে যায়। পার্টি থেকে খুলনা জেলায় সংগঠন গড়ে তোলার দায়িত্ব পান তিনি। খুলনা আসার পরই রুহুল আমিনের জীবনের মোড় ঘুরে যায়।

২০১৩ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত তিনি বামপন্থি রাজনীতির গতানুগতিক ধারাতেই হেঁটেছেন। খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং খুলনা জেলায় ছাত্র সংগঠন গড়ে তোলা, আর গতানুগতিক বাম রাজনীতির এই পথেই হয়তো বাকি জীবন পার করতে পারতেন।

কিন্তু, বামপন্থি দলগুলো নিজেদের শ্রমিক শ্রেণির রাজনৈতিক দল দাবি করলেও শ্রমিকদের মধ্যে এই দলগুলোর কাজ নেই— এই বিতর্ক জোরেশোরে উঠলে রুহুল আমিন সরাসরি শ্রমিকদের কাছে এগিয়ে যান তাদের জন্যে সংগঠন গড়ে তুলতে।

প্রায় এক বছর শ্রমিক অঞ্চলে নিয়মিত যোগাযোগ করে ব্যর্থ হলেও ২০১৭ সালে পাটকলে মজুরি কমিশনের আন্দোলনের সময় তিনি একটি পথ খুঁজে পান। এই আন্দোলনে শ্রমিকদের পানি খাওয়ানোর ব্যবস্থা করার মাধ্যমেই মূলত এই বাম রাজনৈতিক কর্মীর নতুন ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার সূচনা। বহুমুখী কর্মযজ্ঞে তার অনুপ্রবেশ। বাম রাজনীতির গতানুগতিকতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার সূচনা পর্ব।

প্রতিদিন তহবিল সংগ্রহ করে পানি ও চিনির শরবত শ্রমিকদের জন্য সরবরাহ করতে করতেই রুহুল উদ্যোগ নেন পাটকলের এই আন্দোলন খালিশপুরের সীমারেখা পার করে খুলনা শহরে ছড়িয়ে দেওয়ার। অল্প কর্মীবাহিনী নিয়ে খুলনার বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, পেশাজীবী, নাগরিক সমাজ থেকে শুরু করে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কাছে ঘুরে ঘুরে পাটকল শ্রমিকদের দুর্দশার গল্প, তাদের আন্দোলনের ন্যায্যতার যুক্তি তিনি পৌঁছে দিয়ে তাদের খালিশপুরমুখী করার চেষ্টা করেন।

এরই ধারাবাহিকতায় তিনি খুলনার বিশিষ্ট নাগরিক, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও শ্রমিকদের নিয়ে এক জনসভার ডাক দেন। পাটকল আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে খালিশপুর থেকে খুলনায়। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার সমন্বয়ে এই জনসভা হওয়ার প্রক্রিয়ায় তিনি গড়ে তোলেন ‘শ্রমিক-কৃষক-ছাত্র-জনতা ঐক্য’ প্ল্যাটফর্মটি।

এরপরই দেখা যায় একজন ভিন্ন রুহুল আমিনকে। ক্রমাগত পাটকল শ্রমিকদের বাসায় যাতায়াত, তাদের বিপদে-আপদে সহায়তার হাত বাড়িয়ে এগিয়ে যাওয়া, শ্রমিকদের জন্য মেডিকেল ক্যাম্প আয়োজন কিংবা তহবিল সংগ্রহ করে করোনাকালীন লকডাউনে শ্রমিকদের জন্য খাদ্য সরবরাহের ব্যবস্থা করার মাধ্যমে রুহুল তাদের বিশ্বাস অর্জন করে নেন। অন্যদিকে সরকার-নিয়ন্ত্রিত কর্মচারী সংসদের (সিবিএ) বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে পাটকল আন্দোলন সংগঠিত করার দিকেও তিনি উদ্যমী হন।

এই ধারাবাহিক প্রচেষ্টা সারাদেশে একটা সাড়া ফেলা শুরু করে। ঢাকার মানবাধিকারকর্মীসহ অনেকেই রুহুলের সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তোলেন। স্থানীয় থেকে জাতীয় গণ্ডির দিকে যাত্রা শুরু করেন রুহুল।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তানজীম উদ্দিন, কুয়েটের শিক্ষার্থী নাহিন, পলিটেকনিকের তাইম, বিএল কলেজের দোলন কিংবা ডুমুরিয়ার প্রত্যন্ত অঞ্চলের কৃষক কার্তিক— এই মানুষগুলো সবাই একসঙ্গে রওনা দিচ্ছেন খালিশপুরের শ্রমিক আন্দোলন সফল করতে। এমন দৃশ্য বহুদিন এই রাষ্ট্র দেখেনি। যা সম্ভব হয়েছে রুহুল আমিনের কারণে।

এরপর রুহুলের দলকে দেখা যায় কৃষকের সঙ্গে গ্রামে ধানের ন্যায্যতার সংগ্রামে। ‘সম্মিলিত কৃষক সমাজ’ নামে গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়ায় রুহুলের দল। তারা ধানের ন্যায্যতা সরাসরি মধ্যস্বত্বভোগীদের বদলে কৃষক আর জনতার যোগাযোগ ঘটাতে চাইলেন। এই বৃহৎ লড়াইয়ে রুহুল আমিনরা অনেকটা সফলও হলো।

খুলনায় ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের প্রতিবাদের আন্দোলনে যোগ দেওয়ায় এবং ডুমুরিয়ায় কৃষক আন্দোলন ইউনিয়ন থেকে ইউনিয়নে সংগঠিত করায় রুহুল আমিনের কাজের ক্ষেত্রও আরও প্রসারিত হয়। ফলত দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, হতদরিদ্র শ্রমিক কিংবা গ্রামের কৃষক— সর্বত্র বিচরণ করছেন রুহুল আমিন। বাসদীয় রাজনীতির বাইরে রুহুল আমিনের নিজস্ব এক বিস্তৃত আওতা তৈরি হয়। এই কর্মযজ্ঞের মাধ্যমেই তিনি গতানুগতিক বাম রাজনীতির পদ্ধতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে থাকেন। প্রশ্ন তুলতে থাকেন পার্টির অভ্যন্তরে।

রুহুলের প্রশ্নের হাত থেকে রেহাই পেতে ২০১৯ সালে তৎকালীন বাসদ (মার্ক্সবাদী) দল তাকে বহিষ্কার করে। পরে নিজের তৈরি করা আওতাটাকে আরও বিস্তৃত করার কাজে নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত হয়ে পড়েন তিনি।

তিনি নজর দেন একটা বিশাল ঐক্য প্রক্রিয়ার দিকে। যেই ঐক্য একজন হতদরিদ্র কৃষক বা নিপীড়নের শিকার শ্রমিক থেকে শুরু করে বুদ্ধিবৃত্তিক সার্কেল কিংবা শিক্ষার্থীর সঙ্গে পেশাজীবীর। তৈরি হতে থাকে সম্পূর্ণ নতুন একদল ঐক্যবদ্ধ মানুষদের। যারা শুধু নিজ নিজ সেক্টরের সমস্যা সংকট নিয়ে সংঘবদ্ধ নয়, বরং একে অন্যের সংকটকালে সবাই মিলে এগিয়ে যাচ্ছে। আর এসব ঐক্যবদ্ধ মানুষদের ভরকেন্দ্র হয়ে ওঠেন ৩২ বছর বয়সী রুহুল আমিন।

করোনা সংকটকালেও খুলনায় বিভিন্ন সহায়তামূলক কাজ করেছেন রুহুল আমিন। সহযাত্রীদের নিয়ে তিনি ত্রাণ বিতরণ করেছেন বানিশান্তা যৌনপল্লী, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ ও শ্রমিকদের মাঝে।

রুহুলের হাত ধরে তৈরি হওয়া এই ঐক্য সম্পর্কে এক পর্যায়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে সরকার। তার ওপর নানা ধরনের চাপ আসতে থাকে। সূচনা হয় রুহুল আমিনের ও সরকারের মধ্যে বৈরী সম্পর্কের।

২০১৮ সালের এপ্রিলে রুহুল আমিনকে প্রথম খালিশপুর থানায় তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে তার ওপর হামলা করে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীরা। এরপর ২০২০ সালের জুলাইয়ে আবার গ্রেপ্তার হন লিফলেট বিতরণ করার সময়। তৃতীয় দফায় তিনি আটক হন ২০২০ সালের ৪ অক্টোবর। সেসময় খালিশপুরের বন্ধ মিল খুলে দেওয়ার দাবিতে ‘কফিন মিছিল’ কর্মসূচি পালনের সময় রুহুলসহ ১১ জনকে আটক করে পুলিশ। এ ছাড়াও, কোনো ধরনের কর্মসূচি না করতে ২০২০ সালের জুলাইয়ে র‍্যাবের পক্ষ থেকেও রুহুলকে চাপ দেওয়া হয়।

শুরু হয় সরকার বনাম রুহুল আমিনের যুদ্ধ! তবে, শুধু সরকারই নয়, ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষ ছাড়া ক্ষমতার প্রভাব খাটানো সবাই-ই রুহুল আমিনকে নিজেদের জন্যে হুমকি মনে করেন। রুহুল আমিন যেন তাদের শক্র!

এতকিছুর পরেও ভয় পেয়ে পিছু হটেননি রুহুল। মিল বন্ধ করে দেওয়ার পর সরকার যখন প্রচণ্ড মারমুখী, তখন র‌্যাব, ডিবি, যুবলীগ কিংবা সিবিএ নেতারা যখন তাকে হুমকি-ধামকি কিংবা আক্রমণ করছেন, তখন খালিশপুরে সেই হুমকি উপেক্ষা করে রুহুল আমিন একের পর এক কর্মসূচির ঘোষণা দেন এবং সফলভাবে সেগুলো বাস্তবায়ন করেন৷

এরপরের ধাপে চিনিকল বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর রুহুল আমিন সমগ্র উত্তরবঙ্গের চিনিকলগুলো, চট্টগ্রাম, ঢাকা, সিরাজগঞ্জের পাটকলগুলোতে ঘুরে বেড়িয়ে পাটকল-চিনিকল রক্ষায় একটা জাতীয় কমিটি গড়ে তোলার উদ্যোগ নেন এবং সেই কমিটি ঘোষণার ঠিক আগ মুহূর্তেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারের পরেও রুহুল আমিনের মানবিকতা থেমে থাকেনি। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে ডিবি পুলিশ তাকে তুলে নিয়ে যায় এবং পরদিন দুপুরে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হয়। সেখান থেকে পাঠানো হয় কারাগারে। এই পুরো সময় তিনি অভুক্ত ছিলেন। সে সময় খাবার পাঠানোর কথা বললে রুহুল জানান, ভেতরে তিনিসহ মোট ছয় জন আছেন। তাকে জানানো হয়, ভেতরে একজনের খাবার পাঠানো যাবে। কিন্তু, একা খাবার খেতে অস্বীকৃতি জানান তিনি। শেষ পর্যন্ত সেদিন না খেয়েই ছিলেন তিনি। রাতে কারাগারের দেওয়া খাবার খান।

রুহুলের সঙ্গে কারাগারে থাকা একজন জামিনে মুক্ত হওয়ার পর বলেন, ‘রুহুল ভাই অনেক সরল আর বোকা। নিজের লুঙ্গি আর গামছা তিনি কয়েদিদের অবলীলায় দিয়ে দিচ্ছেন।’ এসব থেকেই বোঝা যায়, কারাগারেও মানবিক দায়িত্ব পালন থেকে বিরত নেই রুহুল।

এত বাধার পরেও রুহুল আমিন নিজ গন্তব্যে এগিয়ে চলেছেন। যেমন:

ক. পাটকল আন্দোলনে ক্রমাগত ঝুঁকি নিয়ে যেকোনো ধরনের ভয়ভীতি-আক্রমণ উপেক্ষা করেও নিজের আন্দোলন ক্রমাগত চালিয়ে যাচ্ছেন।

খ. বাম রাজনীতি যেই চেনা পথে বিগত কয়েক দশক হেঁটেছে, সেই পথ সরকারের চেনা ও সরকারের জন্য নিরাপদ। কিন্তু, রুহুল আমিন একইসঙ্গে চেনা পথের বাইরে ও কার্যকরভাবে পথ চলেছেন।

গ. সারাদেশে যখন প্রবল বিভক্তি, তখন রুহুল আমিন আন্দোলনের প্রশ্নে শ্রমিকের সঙ্গে শিক্ষার্থীর, শিক্ষার্থীর সঙ্গে কৃষকের, কৃষকের সঙ্গে শিক্ষকের, শিক্ষকের সঙ্গে পেশাজীবীর আর পেশাজীবীর সঙ্গে নাগরিক সমাজের ঐক্য প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়ায় হাঁটছেন। শুধু তাই নয়, এক সেক্টরের পেশাজীবীর আন্দোলনে অন্য সেক্টরের পেশাজীবীদেরও যুক্ত করছেন।

ঘ. জাতীয়ভাবেই একটা বৃহৎ ঐক্য গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করছেন।

রুহুলের নেওয়া প্রত্যেকটা উদ্যোগই সরকার নিজের জন্যে ঝুঁকি মনে করেছে। তাই সরকার যেকোনোভাবেই হোক, রুহুল আমিনকে থামাতে চেয়েছিল। আর তাকে থামানোর জন্যে সবচেয়ে মোক্ষম অস্ত্র হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন’কে।

রুহুল আমিন কবে মুক্তি পাবেন, তা আমরা জানি না। তার মুক্তির বিষয়টা অনিশ্চয়তায় ঘেরা। আদালত ইতোমধ্যে দুবার তার জামিন আবেদন নাকচ করেছেন। গত ৭ মার্চ তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে নেওয়ার পর দেখা যায়, তিনি খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটছেন। তিনি ক্রনিক অ্যাজমা ও জন্ডিসে আক্রান্ত। সঙ্গে প্রচণ্ড জ্বর। পরবর্তীতে তার শুভানুধ্যায়ীরা আইনজীবীর মাধ্যমে মেডিকেল অর্ডার করালে তাকে আবার খুমেকে রক্ত পরীক্ষা আর বুকের এক্স-রে করানোর জন্যে নেওয়া হয়। কিন্তু, এরপর তার চিকিৎসা প্রক্রিয়ায় আর কোনো অগ্রগতি দৃশ্যমান হয়নি।

এই ক্ষরণকালের সময় আমাদের মধ্যবিত্ত মনে স্বপ্ন দেখায়, সাহস জোগায় একজন রুহুল আমিন। বুক টান টান করে চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলার হিম্মত আমাদের যখন হারিয়ে যাচ্ছে, তখন রুহুল আমিনরা আমাদের সামনে এসে দাঁড়ায়। আমাদের বাঁচার মতো বুক ভরে শ্বাস নেওয়ার ভরসা দেয়।

জেলমুক্ত হয়ে রুহুল আমিন সামনে কী করবেন, কীভাবে এগোবেন— সেটা ভবিষ্যতের জন্যেই তোলা রইল।

দীপংকর রায়: সাংবাদিক, দ্য ডেইলি স্টার

roydipankar111@gmail.com

Comments

The Daily Star  | English

Admin getting even heavier at the top

After the interim government took over, the number of officials in the upper echelon of the civil administration has become over three times the posts.

8h ago