আতিয়া মহলে জঙ্গিবিরোধী অভিযান: সাক্ষী না আসায় হয়নি মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ

স্টার ফাইল ফটো

সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকার আতিয়া মহলে জঙ্গিবিরোধী অভিযানের ঘটনায় হওয়া মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ আবারও পিছিয়েছে। মঙ্গলবার সিলেট সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের নির্ধারিত দিন থাকলেও সাক্ষী না আসায় তা আবারও পিছিয়ে যায়।

দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) খোকন চন্দ্র সরকার।

তিনি বলেন, ‘আসামিদের আদালতে হাজিরের জন্য প্রস্তুত রাখা হলেও কোন সাক্ষী উপস্থিত না হওয়ায় সাক্ষ্যগ্রহণ হয়নি। আদালত আগামী দিন এখনো জানাননি’।

২০১৭ সালের ২৪ মার্চ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত এ জঙ্গিবিরোধী অভিযান ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’ পরিচালনা করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। জঙ্গি আস্তানার বাইরে গ্রেনেড হামলায় র‌্যাবের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ সাত জন নিহত হন।

আতিয়া মহলে অভিযান ও বাইরে গ্রেনেড হামলার ঘটনায় হওয়া দুটি পৃথক মামলা তদন্ত করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন। ২০১৯ সালের ৬ সেপ্টেম্বর অভিযোগপত্র জমা দেয় পিবিআই।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পিবিআইয়ের পরিদর্শক দেওয়ান আবুল হোসেন অভিযোগপত্রে এ ঘটনায় জড়িত ৮ আসামির কথা উল্লেখ করেন, যার মধ্যে আতিয়া মহলে ও পরবর্তীতে মৌলভীবাজারে হওয়া জঙ্গিবিরোধী অভিযানে মৃত ৫ জনকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়ার আবেদন করা হয়।

গতবছরের ৫ মে এই মামলায় আসামি জহুরুল হক ওরফে জসিম উদ্দিন, মো. হাসান ও মোসা. আর্জিনা ওরফে রাজিয়া এর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন সিলেটের সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুহাম্মদ নুরুল আমীন বিপ্লব।

অভিযুক্ত তিন জনই নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি), যা বর্তমানে নব্য জেএমবি হিসেবে পরিচিত, এর সামরিক শাখার আত্মঘাতী সদস্য। এ মামলায় ৩৩ জন সাক্ষী রয়েছেন।

জহুরুল ও তার স্ত্রী আর্জিনাকে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড থেকে এবং হাসানকে কুমিল্লার চান্দিনা থেকে ২০১৭ সালে জঙ্গিবিরোধী অভিযানের সময় আটক করা হয় এবং পরবর্তীতে ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে তাদের আতিয়া মহলের মামলার গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

এদিকে, আতিয়া মহলের বাইরে গ্রেনেড হামলার ঘটনায় ৭ জনের মৃত্যুতে হওয়া মামলার তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ২২ জুলাই পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পিবিআই পরিদর্শক দেওয়ান আবুল হোসেন।

পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনে তিনি গ্রেনেড হামলায় জড়িত তিন জঙ্গিই মৌলভীবাজারের বড়হাটের জঙ্গি অভিযানে নিহত হয় বলে উল্লেখ করেন। তবে অজ্ঞাতনামা নিহত এক  জঙ্গি পরবর্তীতে ডিএনএ পরীক্ষায় নব্য জেএমবির আমির মাইনুল ইসলাম মুসা হিসেবে সনাক্ত হলে আদালত পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনে সংশোধনীর জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন।

মুসার মৃত্যু ও সম্পৃক্ততার বিষয়টি  নতুন করে পর্যালোচনার দায়িত্বে থাকা পিবিআইয়ের পরিদর্শক জাহাঙ্গীর হোসেন তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী মুসার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে এই মামলায় সন্নিবেশিত করতে এখনো কাজ চলছে। ইতোমধ্যে মৌলভীবাজারের বড়হাটে জঙ্গি অভিযানের মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হয়েছে। দ্রুতই পরিবর্তিত পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে’।

২০১৭ সালের ২৪ মার্চ ভোররাতে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকার আতিয়া মহল বাড়িটিতে জঙ্গি আস্তানা রয়েছে জানতে পেরে বাড়িটি ঘিরে ফেলে পুলিশ। প্রাথমিক অবস্থায় পুলিশ এবং পরে ২৫ মার্চ থেকে জঙ্গিবিরোধী অভিযান “অপারেশন টোয়াইলাইট” শুরু করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।

সেদিন সন্ধ্যায় আতিয়া মহলের অদূরে গ্রেনেড হামলা চালায় আরেকটি জঙ্গি দল। এ হামলায় ঘটনাস্থলে দুই পুলিশ সদস্যসহ ছয় জন নিহত হন এবং হামলায় গুরুতর আহত হয়ে পরবর্তীতে মারা যান র‌্যাবের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবুল কালাম আজাদ।

আতিয়া মহলে জঙ্গি আস্তানায় জঙ্গিবিরোধী অভিযান ও বাইরে গ্রেনেড হামলার ঘটনায় মোগলাবাজার থানায় দুটি মামলা করে এবং প্রাথমিক তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে পুলিশ।

পরবর্তীতে সে বছরের ২ মে পুলিশ সদরদপ্তরের নির্দেশে মামলার তদন্তভার দেয়া হয় পিবিআইকে এবং ৯ মে থেকে তদন্ত শুরু করে পিবিআই।

Comments

The Daily Star  | English

Private airlines caught in a bind

Bangladesh’s private airline industry is struggling to stay afloat, hobbled by soaring fuel prices, punitive surcharges, and what operators describe as unfavourable policies. Of the 10 private carriers that have entered the market over the past three decades, only two -- US-Bangla Airlines and A

8h ago