হিথ্রো বিমানবন্দরে বঙ্গবন্ধুর পদচারণার সেই ছবি থেকে বরিশালে অনন্য ভাস্কর্য
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিখ্যাত এক ছবি থেকে বরিশালের উজিরপুর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে নির্মিত হচ্ছে অনন্য এক ভাস্কর্য। ভাস্কর্যটি এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায় আছে।
পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে প্রথমেই লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর দিয়ে ব্রিটেনে প্রবেশ করেন বঙ্গবন্ধু। এই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বঙ্গবন্ধুর দৃপ্ত পদচারণা ভাস্কর্যের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছেন দেশের সুপরিচিত ভাস্কর তেজেস হালদার জশ।
ভাস্কর্যের কাজ আগামী দুই মাসের মধ্যে পুরোপুরি শেষ হয়ে গেলে ২৬ মার্চ এর উদ্বোধন হতে পারে বলে আশা করছে কর্তৃপক্ষ।
ভাস্কর্যের প্রধান উদ্যোক্তা বরিশাল-২ আসনের সংসদ সদস্য মো. শাহে আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে এই ভাস্কর্য নির্মাণের জন্য ২৫ লাখ টাকা বরাদ্দ পাই। পরবর্তীতে এটি উজিরপুর পৌরসভার তত্ত্বাবধানে নির্মিত হচ্ছে।’
ভাস্কর্যের নামকরণ প্রসঙ্গে তিনি জানান, এখনো বিষয়টি নিয়ে তিনি ভাবেননি। শেষ পর্যন্ত কোনো নাম নাও থাকতে পারে।
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতির জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন। বঙ্গবন্ধুর এই আত্মত্যাগ হৃদয়ে ধারণ করে ভাস্কর্যের মাধ্যমে ছড়িয়ে দিতে চেয়েছি।’
উজিরপুর পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী মো. মাসুম বিল্লাহ জানান, গত ১০ সেপ্টেম্বর ভাস্কর্যটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ভাস্কর্য নির্মাণ শেষ হলেও এর বেদী ও সৌন্দর্যবর্ধনের কিছু কাজ বাকি আছে।
উজিরপুর উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ বাচ্চু বলেন, ‘ভাস্কর্য নির্মাণ পুরোপুরি শেষ না হলেও এবার ১৬ ডিসেম্বরে আমরা এখানে পুস্পার্ঘ অর্পণ করেছি।’
স্থানীয় ব্যবসায়ী জাকির তালুকদার জানান, বঙ্গবন্ধুর এই ভাস্কর্যটি যেন জীবন্ত। দূর থেকে দেখলেই বঙ্গবন্ধুর অবয়ব ফুটে ওঠে।
স্থানীয়রা জানান, এখানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণে তারা খুশি। উপজেলা চত্বরে প্রতিদিন শত শত মানুষ আসেন। তাদের মাঝে বঙ্গবন্ধুর এই অভিব্যক্তি এক অন্যরকম অনুভূতি ব্যক্ত করবে।
ভাস্কর্যের প্রধান শিল্পী তেজস হালদার জশ বলেন, ‘এই ভাস্কর্যটি অন্য ভাস্কর্যের মতো নয়। সাধারণত বঙ্গবন্ধুর তর্জনী উঁচিয়ে ধরার অবয়বটিই সবার কাছে পরিচিত। এখানে আমরা বঙ্গবন্ধুর হিথ্রো বিমানবন্দরের পদচারণার ছবিটিই ভাস্কর্যের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছি। এই ধরনের ভাস্কর্য বাংলাদেশের আর কোথাও নেই।’
তিনি বলেন, ‘এটি সবার চেয়ে অন্যরকম। এটি করার কারণ- বঙ্গবন্ধুর অভিব্যক্তি সাধারণত তর্জনী উঁচিয়ে করা হয়ে থাকে। এ থেকে মনে হতে পারে, যেন তার আর কোনো অভিব্যক্তি নেই। আসলে এই ব্যতিক্রমী অভিব্যক্তিটি জনপ্রিয় হলে, তা হয়তো অন্য কোথাও ছড়িয়ে পড়বে।’
ভাস্কর্য শিল্পী জানান, মূল ভাস্কর্যটি ১২ ফুট এবং বেদীসহ এর উচ্চতা ১৮ ফুট। কংক্রিট মাধ্যমে করা হলেও বেদিতে কালো গ্রানাইট মার্বেল থাকবে।
তিনি জানান, এর নামকরণ তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে ‘হিথরো বিমানবন্দরে বঙ্গবন্ধু’ প্রস্তাব করবেন। যশ ছাড়াও এই ভাস্কর্য তৈরিতে সাহায্য করেছেন ভাস্কর্য শ্যামল সরকার ও শুভ বাড়ই।
বঙ্গবন্ধুর এই ভাস্কর্য নির্মাণে বরিশাল সাংস্কৃতিক সংগঠন সমন্বয় পরিষদসহ বরিশালের বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন অভিনন্দন জানিয়েছে।
Comments