বেঁচে থাকলে আজ ৬৪ বছরে পা রাখতেন তারেক মাসুদ
‘আদম সুরত’, ‘মুক্তির গান’, ‘মুক্তির কথা’, ‘মাটির ময়না’, ‘অন্তর্যাত্রা’ ও ‘রানওয়ে’র মতো চলচ্চিত্র নির্মাণের মাধ্যমে বাংলা সিনেমায় নতুন ধারার সূচনা করেছিলেন তিনি।
তিনি খ্যাতিমান নির্মাতা তারেক মাসুদ। আজ তার জন্মদিন। বেঁচে থাকলে আজ ৬৪ বছরে পা রাখতেন গুণী এই নির্মাতা। ১৯৫৬ সালে ফরিদপুরের ভাঙ্গার নূরপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন তিনি।
আমেরিকায় বিলাসবহুল জীবন ছেড়ে সিনেমার প্রতি ভালোবাসা থেকে সংগ্রামের পথ বেছে নিয়েছিলেন এই সিনেমাযোদ্ধা।
তারেক মাসুদ ১৯৮২ সালে প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ শুরু করেন। ১৯৮৯ সালে প্রখ্যাত শিল্পী এসএম সুলতানের জীবনের ওপর ‘আদম সুরত’ নামের একটি প্রামাণ্যচিত্রটি নির্মাণ করেছিলেন তিনি। এটি নির্মাণ করতে তার লেগেছিল সাত বছর।
১৯৯৬ সালে তিনি নির্মাণ করেন বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময়ের ভ্রাম্যমাণ গানের দলকে নিয়ে ‘মুক্তির গান’। ১৯৭১ সালে মার্কিন নির্মাতা লেয়ার লেভিনের ক্যামেরাবন্দি ফুটেজের সঙ্গে বিভিন্ন ফুটেজ দিয়ে এই ছবিটি নির্মাণ করা হয়েছিল।
প্রামাণ্যচিত্রটির জন্য তিনি ১৯তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ প্রামাণ্যচিত্রের পুরস্কার লাভ করেছিলেন।
২০০২ সালে তারেক মাসুদের প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘মাটির ময়না’ মুক্তি পেয়েছিল। ছবিটি কান চলচ্চিত্র উৎসবসহ কয়েকটি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়েছিল।
কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রথম বাংলাদেশি চলচ্চিত্র হিসেবে ‘মাটির ময়না’ ডিরেক্টর্স ফোর্টনাইটের শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র বিভাগে ফিপরেস্কি আন্তর্জাতিক সমালোচকদের পুরস্কার লাভ করেছিল।
৭৫তম একাডেমি পুরস্কার অনুষ্ঠানে এটি ছিল শ্রেষ্ঠ বিদেশি ভাষার চলচ্চিত্র বিভাগে বাংলাদেশের নিবেদিত প্রথম চলচ্চিত্র।
২০০৪ সালে চলচ্চিত্রটি শ্রেষ্ঠ শিশু শিল্পী ও শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেছিল।
২০০৬ সালে তারেক মাসুদ নির্মাণ করেছিলেন ‘অন্তর্যাত্রা’ এবং ২০১০ সালে নির্মাণ করেছিলেন ‘রানওয়ে’। তার শেষ ও অসম্পূর্ণ কাজ ছিল ‘কাগজের ফুল’।
বাংলাদেশের বিকল্পধারার চলচ্চিত্র নির্মাতাদের সংগঠন শর্ট ফিল্ম ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন তারেক মাসুদ। ১৯৮৮ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত প্রথম আন্তর্জাতিক স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র উৎসবের কো-অর্ডিনেটর হিসেবে কাজ করেছিলেন তিনি।
২০১১ সালে ১৩ আগস্ট ‘কাগজের ফুল’র শুটিং লোকেশন দেখে ঢাকায় ফেরার পথে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে দুর্ঘটনায় তারেক মাসুদ ও চিত্রগ্রাহক মিশুক মুনীর নিহত হন।
Comments