বংশী ও ধলেশ্বরী নদী থেকে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদের দাবি
সাভারের বংশী ও ধলেশ্বরী নদী দূষণের প্রতিবাদে ও অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদের দাবিতে নদীতে ট্রলারে মানববন্ধন ও র্যালি করেছেন স্থানীয়রা।
আজ শনিবার পরিবেশবাদী সংগঠন নদী ও পরিবেশ উন্নয়ন পরিষদের ব্যানারে সাভার পৌর এলাকার থানা বাসস্ট্যান্ড ও নামাবাজার সংলগ্ন বংশী নদীতে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
মানববন্ধনে নদী ও পরিবেশ উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি কৃষিবিদ ড. রফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক সামছুল হক, সহসভাপতি রোকেয়া হক, সাভার উপজেলা সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক স্বরন শাহাসহ অন্যান্য অধিকার সংগঠনের শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে অধিকাংশ প্ল্যাকার্ডই আসন্ন পৌর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে করা হয়। ‘নির্বাচন কমিশন সজাগ থাকো, নদী দখলকারীকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখো’, ‘নদী দখলকারী যেন মনোনয়ন না পায়, ভোটের মাঠে দখলদারদের বর্জন কর’ সম্বলিত বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড হাতে আন্দোলনকারীদের মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়।
বক্তারা বলেন, ‘নদী রক্ষা কমিশনের নির্দেশনা থাকা স্বত্বেও বংশী ও ধলেশ্বরী থেকে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদে তেমন কোনো অগ্রগতি নেই। এতে দখলদাররা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে, একের পর এক নদীর জমি দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করে চলেছে। দ্রুত এসব দখলদারদের উচ্ছেদ করে নদী রক্ষা করা হোক। পাশাপাশি কোনো দখলদার যেন আগামী পৌর নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না পান, সেদিকে খেয়াল রাখা হোক।’
নদী ও পরিবেশ উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি কৃষিবিদ ড. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সাভার পৌরসভার বর্তমান মেয়র হাজী আব্দুল গনি, তার ছেলেসহ বহু প্রভাবশালী ব্যক্তি সরকারের কড়া নির্দেশনা থাকা স্বত্বেও সাভারের নামাবাজার এলাকায় বংশী নদী দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করেছেন। প্রশাসনের তৈরিকৃত তালিকায় স্পষ্টভাবে তাদের নাম উল্লেখ থাকলেও, এখন পর্যন্ত অবৈধ এসব দখলদারদের উচ্ছেদে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।’
জানতে চাইলে সাভার পৌর মেয়র হাজী আব্দুল গনি বলেন, ‘এসব অভিযোগ উদ্দেশ্যমূলক, আমার ইমেজ নষ্ট করতে একটি কুচক্রী মহল এসব অপপ্রচার চালাচ্ছে। সাভার উপজেলা প্রশাসন একটি তালিকা তৈরি করেছে। সেখানে নদী দখলদারদের ৬৫ জনের নাম উল্লেখ থাকলেও, প্রকৃত দখলদারদের তালিকা হবে ৬৫০ জন। আমি নদীর জায়গা দখলের সঙ্গে জড়িত নই। ওই তালিকায় আমার নামও নেই। যে আব্দুল গনির নাম ওই তালিকায় আছে, সে আমি না। আপনারা বিষয়টি খতিয়ে দেখেন।’
তালিকায় আপনার ছেলের নাম আছে এমন প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, ‘নামাবাজারের বংশী নদীর তীরে আমার ছেলের ক্রয়কৃত একটি ঘর আছে। প্রশাসন যদি উচ্ছেদ অভিযান চালায়, তাহলে আমি সর্বপ্রথম আমার ছেলের ঘরটি ভেঙে দেব।’
সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম আরা নীপা দ্য ডেইলি স্টারকে মুঠোফোনে বলেন, ‘আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’
মানববন্ধনে বক্তাদের দাবি সম্পর্কে জানতে চাইলে স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান বলেন, ‘আমি বিষয়টি জানি না। সংশ্লিষ্ট দপ্তর এ বিষয়ে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেবে।’
Comments