নীরবে চলে গেল সিনেমার নবাব আনোয়ার হোসেনের জন্মদিন!
নবাব সিরাজউদ্দৌলা বললে প্রথমেই যার মুখ মনের পর্দায় ভেসে ওঠে তিনি হলেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের কালজয়ী অভিনেতা আনোয়ার হোসেন।
‘বাংলা, বিহার, উড়িষ্যার মহান অধিপতি, তোমার শেষ উপদেশ আমি ভুলিনি জনাব।’ এই সংলাপটির কথা হয়তো মনে পড়ে অনেকের। আজ সেই নবাবের ৯০তম জন্মদিন। অনেকটা নীরবেই কেটে গেল দিনটা। কোথাও ছিলো না কোনো আয়োজন।
আনোয়ার হোসেনের জন্ম ১৯৩১ সালের ৬ নভেম্বর জামালপুর জেলার সারুলিয়া গ্রামে। স্কুল জীবনেই অভিনয়ে হাতেখড়ি। আসকার ইবনে শাইখের ‘পদক্ষেপ’ নাটকে প্রথম অভিনয় করেন তিনি। সিনেমায় অভিষেক ১৯৫৮ সালে ‘তোমার আমার’ ছবি দিয়ে। ১৯৬৪ সালের তার অভিনীত ‘দুই দিগন্ত’ ছবি দিয়ে ঢাকার ‘বলাকা’ সিনেমা হলের উদ্বোধন হয়েছিল।
১৯৬৭ সালে খান আতাউর রহমান পরিচালিত নবাব সিরাজউদ্দৌলা চলচ্চিত্রে নাম ভূমিকায় অভিনয়ের কারণেই মুকুটহীন সম্রাট উপাধি লাভ করেন এই বরেণ্য অভিনেতা।
৫২ বছরের অভিনয় জীবনে আনোয়ার হোসেন প্রায় পাঁচ শতাধিক ছবিতে অভিনয় । মুক্তিযোদ্ধা থেকে শুরু করে সংগ্রামী ছাত্রনেতা, ভাষা আন্দোলনের উদ্দীপ্ত যুবক, দুঃখী পিতা- এমন বহু বর্ণময় চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকের হৃদয়ে স্থায়ী আসন দখল করেছিলেন তিনি।
২০১৩ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেন আনোয়ার হোসেন।
১৯৬৭ সালে ‘নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা’ ছবিতে অভিনয় করে নিগার পুরস্কার পান তিনি। ১৯৭৮ সালে আমজাদ হোসেন পরিচালিত ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ ছবিতে সহ-অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। বাংলা চলচ্চিত্রে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৮৫ সালে তাকে একুশে পদকে ভূষিত করা হয়। অভিনেতাদের মধ্যে প্রথম একুশে পদক পান তিনি। ২০১০ সালে চলচ্চিত্রে সামগ্রিক অবদানের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার আজীবন সম্মাননা লাভ করেন এই বরেণ্য অভিনেতা।
Comments