বিষয়টি রহস্যজনক!
ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদে ষষ্ঠবারের মতো নিয়োগ পেতে যাচ্ছেন প্রকৌশলী তাকসিম এ খান। শনিবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত ওয়াসার বোর্ড সভায় এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শিগগিরই তাকে আবার তিন বছরের জন্য নিয়োগ দিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হবে।
ওয়াসার এমডি হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বার বার প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছেন তাকসিম এ খান। টানা পাঁচবার নিয়োগ পাওয়া এই কর্মকর্তার নিজের নিয়োগ, তার মাধ্যমে দেওয়া অন্যদের নিয়োগসহ নানা ক্ষেত্রে আছে বিতর্ক। দুর্নীতির অভিযোগ গেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) পর্যন্ত।
ওয়াসার বর্তমান এমডিকে পুনর্নিয়োগের উদ্যোগ অনৈতিক ও বিধিবহির্ভূত বলে গতকাল উল্লেখ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। আজ রোববার ক্রেতা-ভোক্তাদের জাতীয় প্রতিনিধিত্বকারী প্রতিষ্ঠান কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) ঢাকা ওয়াসায় তাকসিম এ খান ও চট্টগ্রাম ওয়াসায় এ কে এম ফজলুল্লাহকে আবারও এমডি হিসেবে নিয়োগ না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
এ বিষয়ে আজ সন্ধ্যায় বিশিষ্ট লেখক, গবেষক ও কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এবং তেল-গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদের সঙ্গে দ্য ডেইলি স্টারের কথা হয়।
সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, ‘বিষয়টি রহস্যজনক। ওয়াসা তো নগরবাসীকে ঠিকমতো সেবাই দিতে পারছে না। গত কয়েক বছরে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে অসংখ্য অভিযোগ উঠে এসেছে। আমরা দেখেছি, জুরাইনের মিজানুর রহমান এমডিকে ওয়াসার নোংরা পানি দিয়ে শরবত পর্যন্ত খাওয়াতে চলে এসেছিলেন। যে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ, তার পরিচালক পদে এক ব্যক্তিকে দীর্ঘদিন ধরে রাখা কোনো যৌক্তিকতার মধ্যে পড়ে না।’
‘আমার তো মনে হয়, ওয়াসার বিরুদ্ধে নগরবাসীর যেসব অভিযোগ, সরকারকে সবার আগে সেসব আমলে নেওয়া উচিত ছিল। এরকম একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান যাতে তার সেবার পরিধি আরও বাড়াতে পারে, সরকারকে সেসব নিশ্চিত করা দরকার ছিল। বার বার এক এমডিকে নিয়োগ দিলেই ওয়াসার কোনো উন্নতি হয়ে যাবে, এমন প্রত্যাশা মানুষের নেই। যেহেতু এই এমডির কর্মকাণ্ড নিয়ে এতো লেখালেখি হয়েছে, সেহেতু সরকারকে সেসব বিবেচনায় নেওয়া দরকার’, বলেন তিনি।
এই কলামিস্ট বলেন, ‘দুদিন আগেই সংবাদে দেখলাম, বিশ্বের ১০৯টি স্মার্ট সিটির তালিকায় নেই ঢাকা। একটি রাজধানী শহরের পানি সরবরাহ ও পয়োনিষ্কাশনে যদি চরম অব্যবস্থাপনা থাকে, তাহলে সেটি বিশ্ব তালিকায় ঠাঁই পাবে কী করে। ওয়াসার কর্মকাণ্ড ও এর বিরুদ্ধে অভিযোগ হিসাব করলে নাগরিক সেবা প্রদানে প্রতিষ্ঠানটির ব্যর্থতার দায় এর এমডি এড়িয়ে যেতে পারেন না, দায় তাকেই নিতে হবে।’
‘শুধু তাই নয়, এরকম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে এবং দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগ পাশ কাটিয়ে তিনি যে দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠানটির এমডি হিসেবে রয়েছেন, আমি মনে করি এটি সরকারি নীতিমালা পরিপন্থী। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে একই ব্যক্তি দীর্ঘদিন থাকলে এক ধরনের “প্র্যাকটিস অব ইন্টারেস্ট” তৈরি হয়। এখন আমার মনে হচ্ছে- এ বিষয়টিতে সরকারের ওপর মহলের প্রশ্রয় আছে’, যোগ করেন তিনি।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘বর্তমান এমডিকেই অনৈতিক ও বিধিবহির্ভূতভাবে পুনর্নিয়োগ দেওয়ার যে প্রস্তাব ঢাকা ওয়াসা বোর্ড তার বিশেষ বৈঠকে গ্রহণ করে সরকারের কাছে উত্থাপন করেছে, তা দুর্নীতির সুরক্ষামূলক। ধারাবাহিক ব্যর্থতা এবং অনিয়মের গুরুতর সব অভিযোগ থাকার পরও এই পদে প্রশ্নবিদ্ধ নিয়োগ ও অব্যাহত পুনর্নিয়োগ ওয়াসায় শুদ্ধাচার, তথা সার্বিকভাবে দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠার রাষ্ট্রীয় অঙ্গীকারকে প্রহসনে পরিণত করেছে।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকা ওয়াসার বোর্ডের বিশেষ সভায় শুধু বর্তমান এমডির নাম উল্লেখ করে তাকে আবারও তিন বছর মেয়াদে পুনর্নিয়োগের সুপারিশ চূড়ান্ত করার এজেন্ডা নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী এই পদে দরখাস্ত আহ্বান করা হয়েছিল কী না, কারা আবেদন করেছিলেন, কেন তারা যোগ্য বিবেচিত হলেন না, বা কেন বর্তমান এমডিই একমাত্র উপযুক্ত প্রার্থী, কেন সংশ্লিষ্ট বিধি অবমাননা করে মেয়াদের পর মেয়াদ একই ব্যক্তিকে নবায়ন দান অপরিহার্য, এসব প্রক্রিয়াগত প্রশ্নের উত্তর যাচাই করা হয়েছে কি না, তার কোনো তথ্য নেই।’
‘পক্ষান্তরে বর্তমান এমডির দায়িত্বকালে জনদুর্ভোগের বিষয়টি কারও অজানা নয়। টিআইবির গবেষণা ও নির্ভরযোগ্য সংশ্লিষ্ট সকল সূত্রে ওয়াসার ছোট-বড় অনেক প্রকল্প বাস্তবায়ন ও সেবা পর্যায়ে বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতির অভূতপূর্ব বিস্তারের অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে এবং তার কোনো কোনো বিষয় তদন্তাধীন রয়েছে। আমরা আশা করেছিলাম, সরকার প্রধান যেখানে বার বার দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতার কথা বলছেন, জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল বাস্তবায়ন করে সুশাসন প্রতিষ্ঠার কথা বলছেন, তখন এর একটি সুরাহা হবে। কিন্তু আমরা এখন আর ওয়াসায় শুদ্ধাচার বা সুশাসনের সম্ভাবনার কথা বলতেও লজ্জা পাচ্ছি এবং এই প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতি ও তার সুরক্ষাকারী এই পথ পরিহারের জন্য মন্ত্রণালয় ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি’, বলেন তিনি।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘২০০৯ সালে ঢাকা ওয়াসার বর্তমান এমডির বিতর্কিত নিয়োগের পর প্রশ্নবিদ্ধ প্রক্রিয়ায় টানা পাঁচ মেয়াদে ১১ বছর ধরে দায়িত্ব পালন করছেন। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে ও অন্যান্য নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, প্রতিবারই তার নিয়োগ নবায়নের ক্ষেত্রে কোনো না কোনোভাবে আইন ও নিয়মের ব্যত্যয় হয়েছে। এমনকি প্রথমবার নিয়োগের সময়ই পদের জন্য বিজ্ঞপ্তিতে ঘোষিত শর্তাবলি পূরণ হয়নি। এ কারণে অনিয়মের অভিযোগে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে পরবর্তী নিয়োগে সতর্কতা অবলম্বনের জন্য দালিলিক নির্দেশ দেওয়া হয় বলে জানা যায়। তারপরও কখনো বয়সসীমা বাড়িয়ে, আবার কখনো বোর্ডের সংশ্লিষ্ট সভার সুপারিশ পাশ কাটিয়ে পুরনো সভার তামাদি সুপারিশ ব্যবহার করে, এমনকি বোর্ডের মতামত গ্রহণেরই তোয়াক্কা না করে প্রভাবশালী মহলের যোগসাজশে, এমনকি একটি ক্ষেত্রে একজন বিতর্কের ঊর্ধ্বে মন্ত্রীর লিখিত নির্দেশ অমান্য করে দৈব প্রক্রিয়ায় পুনর্নিয়োগ নিশ্চিত করা হয়। যা শুধু আইনেরই সুস্পষ্ট ব্যত্যয় নয় বরং ক্ষমতার অপব্যবহার ও যোগসাজশের সংস্কৃতির নির্লজ্জ প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের দৃষ্টান্ত।’
তিনি বলেন, ‘ওয়াসার জন্য আত্মঘাতী এই পথ পরিহার করে যথানিয়মে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট খাতে যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা সম্পন্ন নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগ সম্পন্ন করতে হবে। একইসঙ্গে এই সংস্থার এবং এর সেবাগ্রহীতা জনগণের কল্যাণে বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালকের প্রশ্নবিদ্ধ নিয়োগ ও অব্যাহত পুনর্নিয়োগ বিষয়ে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ নিরীক্ষা সম্পন্ন করতে হবে। পাশাপাশি ওয়াসার সব পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীর বৈধ আয়ের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ সম্পদের সুষ্ঠু তদন্ত করে অনিয়ম ও দুর্নীতির জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।’
‘ঢাকা ওয়াসা বোর্ড তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালন করছে না বা করতে দেওয়া হচ্ছে না। প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন, বিশেষ করে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের মাধ্যমে দুর্নীতি প্রতিরোধে অপারগতার কারণে ঢাকা ওয়াসা বোর্ডেরও অপসারণের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা উচিত’, বলেন তিনি।
অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘আসলে নিয়োগ, পুনর্নিয়োগ ও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের যে একটা ধরন দেখছি, সেখানে যোগ্যতা খুব বড় শর্ত হিসেবে কাজ করে না। নিয়মকানুন যেগুলো আছে, সেগুলোও কাজ করে না। আমরা বাইরে থেকে ঘটনাগুলো দেখে বুঝতে পারি যে, কোনো একজন ব্যক্তি যখন কোনো প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে ভূমিকা পালন করতে গিয়ে সেখানে যেসব প্রকল্প বা কর্মকাণ্ড হয়, তার উপকারভোগী যারা এবং ক্ষমতাবান ব্যক্তি বা নীতিনির্ধারক যারা তাদেরকে যদি খুশি রাখতে পারেন, সেটিই তার যোগ্যতার প্রধান শর্ত হয়ে দাঁড়ায়।’
‘আমার কাছে মনে হয়, এখানে দুটি বিষয় কাজ করে। একটি হলো- কন্টাক্ট বা যোগাযোগ কীরকম আছে। আর একটি হলো- কন্ট্রাক্ট বা নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে তার চুক্তি বা বোঝাপড়া কেমন বা যা সে দিতে পারে, যা অন্য কেউ দিতে পারে না। যার কারণে নিয়ম ভঙ্গ করে কিংবা দক্ষতার বিষয়টি প্রমাণিত না হওয়ার পরও এবং ব্যর্থতার পাহাড় থাকা সত্ত্বেও তাকে আবার পুনর্নিয়োগ দেওয়া হয়। শুধু ওয়াসা নয়, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্য পদে, এমনকি রাষ্ট্রীয় যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন পদে অথবা বিদেশি অর্থায়নে পরিচালিত বড় বড় প্রকল্পের ক্ষেত্রে আমরা একই ঘটনা দেখতে পাচ্ছি’, যোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করা তো এখনকার দিনে যোগ্যতার চাইতেও একটি বড় শর্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু আমি মনে করি না এটিই পর্যাপ্ত শর্ত। এটি একটি প্রয়োজনীয় শর্ত, কিন্তু এক্ষেত্রে প্রার্থীর কন্টাক্ট এবং কন্ট্রাক্টের যোগ্যতা কতটুকু আছে সেটির ওপর নির্ভর করে। সে কারণে একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়ছে এবং সরকারি সেবার মান কমে যাচ্ছে। ওয়াসার ক্ষেত্রে আমরা দেখে আসছি যে, ঢাকাবাসী বিশুদ্ধ পানির অধিকার থেকে বছরের পর বছর বঞ্চিত হচ্ছেন। দিনে দিনে তাদের খরচও বেড়ে যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে এর দায় ওয়াসার এমডির ওপর পড়ে এবং যারা এমডিকে পুনর্নিয়োগ দেয় তাদের ওপর বর্তায়। প্রতিষ্ঠানের প্রদান যেমন প্রতিষ্ঠানের সাফল্যের কৃতিত্ব পান, ঠিক তেমনি প্রতিষ্ঠানের ব্যর্থতার দায়ও তাকে নিতে হবে।’
‘বিশুদ্ধ পানি পাওয়া যেকোনো দেশের নাগরিকদের জীবন-মরণ প্রশ্ন। সেই জায়গাটিতে ব্যর্থতার মানে হলো মানুষকে বড় ধরনের ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেওয়া। সেখানে ঢাকা ওয়াসা গত ১১ বছর ধরে প্রচুর টাকা খরচ করেছে, প্রচুর অপচয় ও প্রচুর দুর্নীতি হয়েছে এবং বিদেশি অর্থায়নে প্রকল্পের কাজ করার ফলে অনেক সুবিধাভোগী এবং ভাগীদার তৈরি হয়েছে। ওয়াসার এমডিকে যারা পুনর্নিয়োগের প্রস্তাব করেছেন, আমার মনে হচ্ছে যে তারা হয়তো ভাবছেন, এ পদে অন্য কেউ এলে তারা বোধহয় তাদের প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত হবেন। এ কারণেই এমডির যে ব্যর্থতা, সেটিই পুনর্নিয়োগের ক্ষেত্রে যোগ্যতা হিসেবে কাজ করছে’, যোগ করেন তিনি।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপক আরও বলেন, ‘সরকারের ওপর মহল থেকে যারা এই সিদ্ধান্তটি নিতে যাচ্ছেন, এটির যথার্থতা ব্যাখ্যা করা তাদেরই প্রধান দায়িত্ব। একজন ব্যর্থ লোক বার বার সুযোগ পেলে অধিক সুবিধা নিতে চাইবেন, এটিই স্বাভাবিক। দেশে অনেক যোগ্য ব্যক্তি থাকার পরও তাকে যারা বেআইনি ও দৃষ্টিকটুভাবে আবারও ওয়াসার দায়িত্বে রাখতে চাইছেন, তাদের দুরভিসন্ধিও এখানে চোখে পড়ার মতো।’
Comments