নায়কের নামে ‘জাভেদ মহল্লা’, কেমন আছেন সেই জাভেদ?

ঢাকাই চলচ্চিত্রের সোনালী দিনের চিত্রনায়ক ইলিয়াস জাভেদ। শুধু অভিনয়েই নন, নৃত্যেও রয়েছে তার অসাধারণ দখল। নৃত্য পরিচালনার মধ্যদিয়েই তার দেশীয় সিনেমায় অভিষেক ঘটে।
Ilias Javed-1.jpg
চিত্রনায়ক ইলিয়াস জাভেদ। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকাই চলচ্চিত্রের সোনালী দিনের চিত্রনায়ক ইলিয়াস জাভেদ। শুধু অভিনয়েই নন, নৃত্যেও রয়েছে তার অসাধারণ দখল। নৃত্য পরিচালনার মধ্যদিয়েই তার দেশীয় সিনেমায় অভিষেক ঘটে।

উর্দু ছবি ‘নয়ি জিন্দেগি’ দিয়ে নায়ক হিসেবে অভিষেক। ছবিটি ১৯৬৪ সালে মুক্তি পায়। তবে চাহিদা বাড়তে থাকে ১৯৬৬ সালে মুক্তি পাওয়া ‘পায়েল’ ছবির মাধ্যমে। এই ছবিতে তার নায়িকা ছিলেন শাবানা। প্রায় ২০০ সিনেমায় অভিনয় করেছেন জাভেদ। নব্বই দশক পর্যন্ত সুবর্ণ সময় কাটিয়েছেন সিনেমায়।

আফগানিস্তানের পেশোয়ারে ১৯৪৪ সালে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। পরে সেখান থেকে পাঞ্জাবে আসে তার পরিবার। ১৯৬৩ সালে মাতৃভূমি ছেড়ে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে (বর্তমানে বাংলাদেশ) চলে আসেন। কিংবদন্তি এই অভিনেতা মুঠোফোনে কথা বলেছেন দ্য ডেইলি স্টার অনলাইনের সঙ্গে।

একসময় পুরান ঢাকায় বসবাস করতেন, এখন তো নতুন ঢাকায় থাকেন?

পুরান ঢাকায় (সিদ্দিক বাজার) আমার জীবনের অনেক স্মৃতি আছে। এইগুলো তো আর ভুলে যাবার কথা নয়। ওখানকার লোকজন আমাকে ভালোবেসেছে ও সম্মান জানিয়েছে। সেখানে একটি মহল্লার নাম আমার নামে করেছে। শারীরিকভাবে যতটা সময় পর্যন্ত পুরোপুরি ঠিকঠাক ছিলাম, সময় পেলেই ওই এলাকাতে যেতাম। সেখানকার মানুষ ও প্রিয়জনদের সঙ্গে সময় কাটাতাম। এখন আর যাওয়া হয় না। সেই মহল্লাটা ‘জাভেদ মহল্লা’ নামে পরিচিত। তবে বর্তমানে আমি বসবাস করছি নতুন ঢাকার উত্তরার ১৪ নম্বর সেক্টরে।

কিছুদিন আগে শারীরিক জটিলতার কারণে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। এখন কী অবস্থা শরীরের?

এখনো চিকিৎসা চলছে। বাসায় থেকেই চিকিৎসকের পরামর্শে চলছি। চিকিৎসক বলেছেন, মাঝে মাঝে চেকআপ করতে হবে। সমস্যাটিকে অবজারভেশনে রাখতে হবে, আলট্রাসনোগ্রাফি করাতে হবে। এই সমস্যার কারণে যে মেডিসিন নিয়েছি, তার ইফেক্টের কারণে এখন আবার কিডনিতে নতুন করে সমস্যা দেখা দিয়েছে। কথা বলতে সমস্যা হচ্ছে। টানা কথা বলতে পারি না।

চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করতে গিয়ে কি কোনো আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে?

এখন আমার হাতে কোনো ছবির কাজ নেই। সারাজীবন তো কাজ করে গেছি। নিজের কথা সেইভাবে ভাবিনি। নিজের কথা ভাবলে হয়তো পরিস্থিতি ভিন্ন হতো। এখনকার অবস্থায় পড়তে হতো না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আমি অনেক কৃতজ্ঞ। সবসময় তিনি আমার পাশে ছিলেন, সহযোগিতা করেছেন।

চলচ্চিত্রের মানুষেরা কি খবর রাখে আপনার?

অসুস্থ হওয়ার সময় চলচ্চিত্র প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরু, শিল্পী সমিতির মিশা সওদাগর, জায়েদ খান নিয়মিত খোঁজ-খবর নিয়েছেন। হাসপাতালে গেলেই তো খরচের শেষ নেই। আমার অনেক টাকা খরচ হয়েছে। এভাবেই চলছে।

আপনার নৃত্য পরিচালনা ও অভিনীত আলোচিত চলচ্চিত্রের কথা জানতে চাই।

অভিনেত্রী শাবানার বাবা ফয়েজ চৌধুরী পরিচালিত ‘মালকা বানু’ ছবির সুপারহিট গান ‘মালকা বানুর দেশেরে’, তারপর ‘মনের এ ছোট্ট ঘরে আগুন লেগেছে হায়রে’, ‘চাকভূম চাকভূম চাঁদনী রাতে’ গানগুলো আমার নৃত্য পরিচালনায় করা।

আমার অভিনীত আলোচিত ছবির মধ্যে রয়েছে ‘মালকা বানু’, ‘অনেক দিন আগে’, ‘শাহজাদী’, ‘নিশান’, ‘রাজকুমারী চন্দ্রভান’, ‘কাজল রেখা’, ‘সাহেব বিবি গোলাম’, ‘নরম গরম’, ‘তিন বাহাদুর’, ‘চন্দন দ্বীপের রাজকন্যা’, ‘আজো ভুলিনি’, ‘চোরের রাজা’ ও ‘জালিম রাজকন্যা। তবে ‘নিশান’ সিনেমার ‘কালু’ চরিত্রটি আমার অনেক ভালোলাগার।

সেসময় আপনি কোন কোন নায়িকার সঙ্গে কাজ করেছেন?

শাবানা, ববিতা, কবরী, অলিভিয়া, অঞ্জু ঘোষ, রোজিনা, নূতন ও সুচরিতার সঙ্গে সিনেমায় অভিনয় করেছি। তারা একেকজন উজ্বল অভিনেত্রী। তাদের একেকজন একেক দিক দিয়ে অতুলনীয় ছিলেন। অভিনয়ে, স্টাইলে ছিল নিজস্বতা। এখন তেমন দেখতে পাই না। এফডিসি আমাদের কাছে ছিল ঘর-বাড়ির মতো। খুব মিস করি সেই দিনগুলো।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladeshi-Americans eager to help build new Bangladesh

July uprising and some thoughts of Bangladeshi-Americans

NRBs gathered in New Jersey showed eagerness to assist in the journey of the new Bangladesh forward.

12h ago