আজও সবার হৃদয়ে সালমান শাহ

প্রথম সিনেমা দিয়েই এদেশের কোটি দর্শকদের মন জয় করে নিয়েছিলেন সালমান শাহ। এরপর আর তাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। দুই যুগ পরও সেই সিনেমাগুলো দাগ কেটে রয়েছে দর্শকদের মনে।
সালমান শাহ। ছবি: সংগৃহীত

প্রথম সিনেমা দিয়েই এদেশের কোটি দর্শকদের মন জয় করে নিয়েছিলেন সালমান শাহ। এরপর আর তাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। দুই যুগ পরও সেই সিনেমাগুলো দাগ কেটে রয়েছে দর্শকদের মনে।

সেই চির সবুজ নায়ক নায়ক সালমান শাহের আজ প্রয়াণ দিবস।

এতগুলো বছর না থেকেও সত্যিই যেনো কোটি কোটি মানুষের ভালোবাসা নিয়ে আজও রয়ে গেছেন ঢাকাই সিনেমার এই জনপ্রিয় নায়ক। নতুন প্রজন্ম তাকে মনে রেখেছে। নতুন প্রজন্ম তার সিনেমা এখনো আগ্রহ নিয়ে দেখে। ছোট-বড় সবার হৃদয়ে তাই আজও সালমান শাহ আছেন প্রিয় নায়ক হিসেবে।

তার প্রথম অভিনীত সিনেমার নাম ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’। খ্যাতিমান পরিচালক সোহানুর রহমান সোহান নতুন এক জুটি উপহার দিয়েছিলেন এদেশের দর্শকদের। সালমান-মৌসুমীর সেই জুটি ছিল ঢাকাই সিনেমার নতুন চমক। সেই জুটি সফল হয়েছিল। কাজেই ব্যবসাসফল কিংবা দর্শক সাড়া জাগানো সিনেমার নাম নিলে ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ সিনেমার নাম আসবেই।

‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ সিনেমার নায়ক হিসেবেই সালমান শাহ আজও সবার কাছে সমান প্রিয়। বিশেষ করে, ভালোবাসার তরীতে ছুটে চলা তরুণ-তরুণীরা সিনেমাটিকে ভীষণ পছন্দ করেন।

১৯৯৩ সালে মুক্তি পায় সিনেমাটি। আজ পর্যন্তও এই সিনেমার আবেদন একটুও কমেনি।

একটি সিনেমার সফলতা দিয়ে পথচলা শুরু করার পর সালমান শাহ অল্প দিনে হয়ে যান ঢাকাই সিনেমার ব্যস্ত নায়ক। কেবল ব্যস্ত নায়ক নন, স্টাইলিশ নায়কও বলা হত তাকে। তার পোশাক ও চলাফেরার স্টাইল ছিল তার নিজেরই তৈরি। ফলে কারো সঙ্গে তা মিলত না। এদিক থেকেও তিনি ব্যতিক্রম ছিলেন। আজও অনেকে তার সেই স্টাইল অনুসরণ করেন।

সালমান শাহের ছিল অগণিত ভক্ত। এদেশে কোনো সিনেমার নায়কের মৃত্যুর পর ভক্তদের আত্মহত্যা করার রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে তার মৃত্যুর পরই। আজও তার ভক্তরা তাকে স্মরণ করেন গভীর ভালোবাসায় ও শ্রদ্ধায়।

তার ডাক নাম ছিল ইমন। ইমন থেকে সিনেমায় এসে হয়েছিলেন সালমান শাহ। ইমন নামটি অনেকের কাছে অজানা থাকলেও কিংবা সময়ের সঙ্গে ইমন নামটি হারিয়ে গেলেও সালমান শাহ নামটি হারিয়ে যায়নি। এদেশের সিনেমাপ্রেমীরা মনে রেখেছেন নামটি।

সালমান শাহ মৌসুমীর সঙ্গে ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ সিনেমাটি করার পর ‘দেনমোহর’ নামে আরও একটি সিনেমা করেন। যা ছিল আলোচিত একটি সিনেমা। এছাড়াও এই জুটির ‘অন্তরে অন্তরে’ সিনেমাটি ছিল বেশ আলোচিত।

একসময় শাবনূরের সঙ্গে জুটি গড়েন তিনি। এই জুটির অন্যতম ব্যবসাসফল সিনেমা ‘স্বপ্নের ঠিকানা’। শাবনূরের সঙ্গে ‘বিক্ষোভ’সহ আরও বেশ কিছু সিনেমা করে জুটি হিসেবে সফলতা পান তারা সালমান শাহ।

সালমান শাহ ও শাবনূরের প্রথম অভিনীত সিনেমার নাম ‘তুমি আমার’।

‘আঞ্জুমান’ সিনেমায় তিনি অভিনয় করেছিলেন নায়িকা শাবনাজের বিপরীতে। তার বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে মোট ১১ জন নায়িকার বিপরীতে তিনি অভিনয় করেছেন।

মাত্র চার বছরের সিনেমা ক্যারিয়ার ছিল সালমান শাহের। এত অল্প দিনের ক্যারিয়ারে এদেশের সিনেমায় এমন অভাবনীয় সাফল্য আর কোনো নায়ক পাননি। চার বছরে তিনি নায়ক হিসেবে অভিনয় করেছেন ২৭টি সিনেমায়।

সালমান শাহ সবচেয়ে বেশি সিনেমায় অভিনয় করেছেন শাবনূরের বিপরীতে। এই জুটির বেশিরভাগ সিনেমা হিট।

তার মৃত্যুর পর মুক্তি পায় ‘সত্যের মৃত্যু নেই’।

১৯৯৬ সালের আজকের দিনে মারা যান তিনি। কিন্তু তার অভিনীত সিনেমাগুলোর আবেদন আজও আছে।

Comments

The Daily Star  | English

Help Bangladesh in its quest for democracy

Chief Adviser Prof Muhammad Yunus has urged the international community to engage with a new Bangladesh that aims to ensure freedom and democracy for all.

9h ago