ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর শারীরিক অবস্থার উন্নতি, ফুসফুসের সংক্রমণ কমেছে
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর ফুসফুসের নিউমোনিয়ার কিছুটা উন্নতি হয়েছে এবং তাকে দেওয়া অক্সিজেনের মাত্রা কমেছে।
গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের চিকিৎসক ব্রিগেডিয়ার অধ্যাপক ডা. মামুন মুস্তাফি দ্য ডেইলি স্টারকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী আগের চেয়ে ভালো বোধ করছেন। গত চারদিন ধরে তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল ছিল। আজই উন্নতি কিছুটা দৃশ্যমান হয়েছে।’
গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ও ‘জি র্যাপিড ডট ব্লট’ কিটের উদ্ভাবক ড. বিজন কুমার শীল বিকাল পৌনে ৪টার দিকে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস মানুষের ফুসফুসের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে। ফুসফুসে তীব্র মাত্রায় আক্রমণের কারণেই মানুষ সাধারণত মারা যায়। ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর ক্ষেত্রে চারদিন স্থিতিশীল থাকার পর আজ যখন ফুসফুসের কিছুটা উন্নতি হয়েছে, নিঃসন্দেহে এটি অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক একটি সংবাদ। যেহেতু তাকে দেওয়া অক্সিজেনের মাত্রাও কমে এসেছে, এটি খুবই ইতিবাচক একটি বিষয়।’
তিনি বলেন, ‘আমি পৃথিবীর বহু দেশের বড় বড় প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছি। কিন্তু গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ও ডা. জাফরুল্লাহর সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা একেবারেই ভিন্ন। বাংলাদেশের মানুষের জন্য তার এতো দরদ, তা বলে বোঝানো যাবে না। তার অসুস্থতায় সারাদেশের মানুষের মন খারাপ।’
‘আমরা ডা. জাফরুল্লাহর তত্ত্বাবধানে করোনা শনাক্তকারী এন্টিজেন ও এন্টিবডি এই দুটি কিট উদ্ভাবন করেছি। এ ছাড়াও, আরও কয়েকটি কিট নিয়ে গবেষণা করছি। এখানে ডা. জাফরুল্লাহর উপস্থিতি আমাদের জন্য অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। নিশ্চয়ই তিনি মানুষের দোয়ায় সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন। বাংলার মানুষের জন্য তার আরও অনেক কিছু করার বাকি আছে’, বলেন ড. বিজন কুমার শীল।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে জাফরুল্লাহ চৌধুরী গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তার কোভিড-১৯ এবং গুরুতর নিউমোনিয়ার সংক্রমণ নিয়ে একটি অনলাইন মেডিকেল বোর্ড গঠিত হয়। সেখানে দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন চিকিৎসকরা অংশগ্রহণ করেন।
এর আগে, গত ৪ জুন যখন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর কিডনি ডায়ালাইসিস শুরু হয়, সে সময় শারীরিক অবস্থার কারণে ডায়ালাইসিস সম্পন্ন করা যায়নি। যে কারণে তার শারীরিক অবস্থার ‘একটু অবনতি’ হয়। ওইদিন তার শারীরিক অবস্থা বেশ খারাপ ছিল।
৫ জুন সারাদিনই তাকে অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়েছিল। ওই দিন রাতে তৃতীয়বারের মতো তাকে প্লাজমা থেরাপি দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে তার কিডনি ডায়ালাইসিসও ভালোভাবে সম্পন্ন করা গেছে। ৫ জুনের তুলনায় পরের দিন (৬ জুন) ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর শারীরিক অবস্থা কিছুটা ভালো ছিল। ওই দিনও তার কিডনি ডায়ালাইসিস করা হয়েছে। ৭ জুন বিকালেও ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর কিডনি ডায়ালাইসিস করা হয়েছে।
একইসঙ্গে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র উদ্ভাবিত অ্যান্টিজেন কিট দিয়ে গত ৭ জুন আবারও তার করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। সেই পরীক্ষায় দেখা গেছে, তার শরীরে খুব অল্প পরিমাণ করোনাভাইরাসের উপস্থিতি আছে। ইতোপূর্বে তার অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করা হয়েছিল। পরীক্ষায় দেখা গিয়েছিল, তার শরীরে যথেষ্ট পরিমাণে অ্যাটিবডি তৈরি হয়েছে।
আরও পড়ুন:
‘অবনতি হয়নি অর্থে উন্নতি হয়েছে’
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর শারীরিক অবস্থার ‘কিছুটা উন্নতি’
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর শারীরিক অবস্থা ‘অপরিবর্তিত’
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর শারীরিক অবস্থা ‘স্থিতিশীল’
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে আবারও প্লাজমা থেরাপি দেওয়া হয়েছে
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর শারীরিক অবস্থার ‘একটু অবনতি’
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে সার্বক্ষণিক অক্সিজেন দিতে হচ্ছে
‘আমি সুস্থ হয়ে উঠবো, সুস্থ হয়ে উঠতেই হবে’
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর করোনা পজিটিভ
বিএসএমএমইউর পরীক্ষাতেও ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর করোনা পজিটিভ
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর পর শিরীন হক ও বারিশ চৌধুরীও করোনায় আক্রান্ত
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর এবারের উদ্যোগ ‘প্লাজমা ব্যাংক’
আমাদেরই সবার আগে এই কিট বিশ্ববাসীর সামনে আনার সুযোগ ছিল: ড. বিজন
Comments