পটুয়াখালীতে আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধের মেরামত কাজ শুরু
পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত পায়রা নদীর তীরবর্তী ৪১/৭ নং পোল্ডারের বেড়িবাঁধ মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে। উপজেলার দেউলী সুবিদখালী ইউনিয়নের গোলখালী স্লুইস গেট থেকে চার হাজার ফুট বাঁধ মেরামতের কাজ সোমবার থেকে শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঘূর্ণিঝড় আম্পানে বিধ্বস্ত বাঁধ মেরামতের জন্য পাইলিংয়ের কাজ করছে শ্রমিকরা। এরপরে বালু ও মাটির বস্তা দিয়ে ভরাট করাসহ উচুঁ করে মাটি দিয়ে ভরাটের কাজ আছে।
স্থানীয়রা জানান, ঘূর্ণিঝড়ের সময়ে গোলখালী স্লুইস গেট সংলগ্ন বাঁধ ভেঙে প্রায় পাঁচটি গ্রাম প্লাবিত হয়। অনেকে কৃষকের আউশের বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে। বাঁধ মেরামতের কাজ শেষ হলে এলাকার কৃষকসহ নদী তীরবর্তী পরিবারগুলোকে আর পানিতে ভাসতে হবে না।
এ ছাড়াও, উপজেলার পায়রা শ্রীমন্ত নদীর ও আয়লা কানকি বেড়িবাঁধের প্রায় ৫৭ টি পয়েন্টে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামত করা হবে।
গত ২০ মে বুধবার রাতে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের কারণে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে পায়রা নদীর পানি ৫-৭ ফুট উচ্চতায় বৃদ্ধি পায়। ফলে, তীব্র স্রোতের তোড়ে উপজেলার পায়রা নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে রামপুর সিদ্দিকীয়া মাদ্রাসা সংলগ্ন বেড়িবাঁধ, গোলখালী স্লুইস গেট বেড়িবাঁধ, পূর্ব সুবিদখালী দো-আনি খাল, চরখালী আকু দফাদার বাড়ি সামনে বেড়িবাঁধ, মির্জাগঞ্জ মাজার এলাকা, ভাজনা কদমতলা, পিঁপড়াখালী, রামপুরসহ পায়রা ও শ্রীমন্ত নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত হয়ে ওসব এলাকার ১৫ টি গ্রামসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয় এবং তলিয়ে যায় ফসলের মাঠ।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর উপজেলার ছয় ইউনিয়নে ১১ হাজার ১ শত ৫০ হেক্টর জমিতে ফসল চাষ করেছেন কৃষক। এরমধ্যে ঘূর্ণিঝড়ের পানিতে প্লাবিত রয়েছে ১ হাজর ৫০০ হেক্টর জমির ফসল। তার মধ্য ১০০ হেক্টর আউশধান, ১০০ হেক্টর চিনাবাদাম, ৩০০ হেক্টর মরিচ, ১০০ হেক্টর পান ও ৪৫০ হেক্টর জমির সবজি রয়েছে। এতে কৃষকের প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা ক্ষতি হতে পারে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার(ইউএনও) মো. সরোয়ার হোসেন বলেন, ‘মির্জাগঞ্জে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামত কাজ শুরু হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধগুলো পর্যায়ক্রমে মেরামত করা হবে।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান খান মো. আবু বকর সিদ্দিকী বলেন, ‘মির্জাগঞ্জ উপজেলাটি পায়রা নদী তীরবর্তী। পায়রা ও শ্রীমন্ত নদীর বেড়িবাধেঁর প্রায় ৫৭টি পয়েন্টে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের বিধ্বস্ত বাঁধগুলো মেরামতের কাজ শুরু করা হয়েছে। বাধঁগুলো মেরামত কাজ সম্পন্ন হলে জোয়ারের পানি আর সহজে প্রবেশ করতে পারবে না।
Comments