জাপানে হিটাচির ডিভাইস চলছে বাংলাদেশের আইওটি সফটওয়্যারে

বাংলাদেশে তৈরি আইওটি (ইন্টারনেট অব থিংস) অ্যাপ্লিকেশন বেসড এয়ার ক্লাউড প্রো ডিভাইস উদ্বোধন করেছে জাপানি প্রতিষ্ঠান হিটাচি। এর মাধ্যমে বড় পরিসরে, দূর থেকেও যেকোনো জায়গার তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।

ইন্টারনেট সংযুক্ত যন্ত্রপাতি সাধারণত ইন্টারনেট অব থিংস (আইওটি) পণ্য হিসেবে পরিচিত। আইওটির মাধ্যমে বাড়ি কিংবা পুরো একটি এলাকার ডিভাইসগুলো আন্তঃনেটওয়ার্কের মাধ্যমে সংযুক্ত হয়। ডিভাইসের ডেটা সংগ্রহ ও আদান-প্রদানও করা যায়। স্মার্টফোনের মাধ্যমে এই ডিভাইসগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়ে থাকে।

ভিআরএফ (ভেরিয়েবল রেফ্রিজারেন্ট ফ্লো) প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এই আইওটি অ্যাপ্লিকেশনটি বৃহৎ জাপানি প্রতিষ্ঠান হিটাচিকে আরেক ধাপ এগিয়ে রাখবে। হিটাচি আইওটির এই প্রকল্পের মেরুদণ্ড হিসেবে কাজ করেছে ঢাকার ডেভেলপিং প্রতিষ্ঠান ডেটাসফট সিস্টেমস বাংলাদেশ লিমিটেড।

এয়ারক্লাউড প্রো’য়ের এই অ্যাপ্লিকেশনটির মাধ্যমে হাতে স্মার্টফোন রেখেই বিশ্বের যেকোনো জায়গায় বসে পুরো বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্স এমনকি বনানীর একটি পাড়ার তাপমাত্রাও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।

হিটাচির সম্পূর্ণ অপারেশনাল এই আইওটির প্ল্যাটফর্মে একটি নেটওয়ার্কে কয়েক লাখ ডিভাইস সংযুক্ত হতে পারে। অর্থাৎ নেটওয়ার্কে থাকলে একটি ডেটাসফট অ্যাপের মাধ্যমেই অ্যাপার্টমেন্ট কিংবা পাড়ার একাধিক ঘরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।

এর রক্ষণাবেক্ষণ ও কৌশলগত পরিকল্পনা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) মাধ্যমে পরিচালিত হবে। সংগৃহীত ডেটা প্রয়োগ করে মেশিন লার্নিংয়ের মাধ্যমে অপারেশনাল দক্ষতা আরও বাড়িয়ে তোলা যেতে পারে।

ডেটাসফট লিমিটেডের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) এম মনজুর মাহমুদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে দ্য ডেইলি স্টারকে তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের কোম্পানি ও বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়।’ বাংলাদেশের তথ্য প্রযুক্তি খাতের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

ডেটাসফট লিমিটেডের সিওও এম মনজুর মাহমুদ। ছবি: সৌজন্য

আনন্দের সঙ্গে তিনি বলেন, ‘এখানে (পণ্য উদ্বোধনীতে) প্রদর্শিত প্রতিটি আইটেম আমাদের দল ডেটাসফট তৈরি করেছে। দলের সকলের প্রচেষ্টার ফলেই আজ এই সাফল্য এসেছে।’

তিনি জানান, ২৭ জন সফটওয়ার প্রকৌশলীর একটি দল নয় মাস ধরে শীর্ষ জাপানি প্রতিষ্ঠানটির চাহিদা অনুযায়ী পণ্য সরবরাহের জন্য কাজ করেছে।

যেখানে জাপানের মতো উন্নত প্রযুক্তির দেশ থেকে বাংলাদেশে প্রযুক্তি আসাটাই স্বাভাবিক সেখানে বাংলাদেশ থেকেও যে জাপানের বাজারে প্রযুক্তি যাওয়া সম্ভব— তা প্রমাণ করে দেখিয়েছে ডেটাসফট।

জাপানের বাজারে প্রবেশের যোগ্যতা অর্জনের জন্য অত্যাধুনিক মানসম্পন্ন প্রযুক্তি তৈরির দৃষ্টান্ত রেখেছে ডেটাসফট।

ডেটাসফটের মূল কারিগর মনজুর বলেন, ‘এটা দৈবাৎ ঘটনা না। আমরা বছরের পর বছর ধরে নেক্সট জেনারেশন প্রযুক্তিতে ধারাবাহিকভাবে বিনিয়োগ করে আসছি।’

ডেটাসফট প্রথম বাংলাদেশি সফটওয়্যার কোম্পানি, যা ক্যাপাবিলিটি ম্যাচুরিটি মডেল ইন্টিগ্রেশন (সিএমএমআই) লেভেল-৫ স্বীকৃতি পেয়ে ২০১৭ সালে শিরোনামে আসে। পৃথিবীতে সিএমএমআই লেভেল-৫ স্বীকৃতি অর্জন করা কোম্পানির সংখ্যা ৩৭৭।

বর্তমানে করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে যখন দেশের প্রায় সব ব্যবসাই বন্ধ হতে চলেছে, তখন নতুন সম্ভাবনা নিয়ে সামনে এসেছে ডেটাসফট।

মঞ্জুর বলেন, ‘সৌভাগ্যক্রমে, আমরা একটি টেক কোম্পানি হওয়ায় আমাদের সহকর্মীরা সবাই বাড়িতে বসেই পূর্ণ দক্ষতার সঙ্গে কাজ করতে পারছে। এই সংকটের সময়েও, অনেকে আমাদের কাছে ডিজিটাল পদ্ধতিতে গ্রাহকদের সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে কীভাবে দক্ষতা বৃদ্ধি করা যায় সে ব্যাপারে জানতে চাইছেন।’

Comments

The Daily Star  | English

Managing expectations the challenge for EC

The EC was a rubber stamp to legalise AL's usurpation of power in last three elections

1h ago