মন্দা মোকাবিলায় ‘অন্ধকারে ঢিল ছোড়া’ নীতিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক
ঝামেলাটা তৈরি করেছেন রিসি সানক। দায়িত্ব পালন করছেন ব্রিটেনের অর্থমন্ত্রী হিসেবে। গত ১২ মে তিনি বলেন, মন্দা মোকাবিলার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে ব্রিটিশ সরকারের অধিক পরিমাণ ঋণ গ্রহণ স্বাভাবিক বিষয়। এখন তা নিয়ে দুশ্চিন্তা করার সময় নয়।
ব্রিটিশ সরকার এখন ব্যাংক অব ইংল্যান্ড (ব্রিটেনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক) থেকে ধার করার সবচেয়ে সহজ পদ্ধতিটি বেছে নিয়েছে। অর্থনীতির ভাষায় একে বলা হয় মনিটরি ফাইন্যান্সিং। কোনো দেশ যখন অর্থনৈতিক মন্দায় পতিত হয়, তখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ করার জন্য সরকারের অন্যতম সহজ পদ্ধতি এটি।
সাধারণত কোনো দেশের সরকার ট্রেজারি বিল বা বন্ড ইস্যু করার মাধ্যমে ব্যাংক থেকে ধার করে। এ ধরনের কাগজের মাধ্যমে আমাদের সরকারও একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ সুদ দিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে ঋণ নেয়। কিন্তু, মন্দার সময় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোও টাকার সঙ্কটে থাকে। ফলে তখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরাসরি টাকা ছাপিয়ে সরকারকে ঋণ দেয়। মন্দার সময় সরকারের আয়ের উৎসও বন্ধ হয়ে যায়। কারণ, সঙ্কটকালীন মুহূর্তে মানুষের কর দেওয়ার সামর্থ্য কমে যায়।
কিন্তু মনিটরি ফাইন্যান্সিং এসব বিল-বন্ডকে পাত্তা দেয় না। সরাসরি কেন্দ্রীয় ব্যাংক টাকা ছাপিয়ে সরবরাহ করে সরকারের কাছে। এই পদ্ধতি অবলম্বন করে ব্যাংক অব ইংল্যান্ড ২০০ বিলিয়ন পাউন্ড সরকারকে সরবরাহ করবে।
টাকা ছাপিয়ে সরকারকে অর্থ সরবরাহ করার জন্য বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন নানা রকম পদ্ধতির আশ্রয় নিচ্ছে। বিখ্যাত অর্থনীতিবিদরা ভবিষ্যতে এর ফলাফল কি হবে তা নিয়ে উৎকণ্ঠাও প্রকাশ করছেন। এসব ছাপানো টাকা দিয়ে বড় বড় কোম্পানিকে সরকারগুলো একদিকে যেমন বেইল আউট করছে, তেমনি সাধারণ মানুষকে ত্রাণ হিসেবে নগদ অর্থ দিচ্ছে।
বড় ব্যবসায়িক কোম্পানিগুলোর ভবিষ্যৎ কি হবে তা নিয়েও উৎকণ্ঠায় আছেন বিশেষজ্ঞরা। এসব কোম্পানি ব্যাপকহারে এখন ঋণ করছে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থে। ফলে আগামীতে তাদের আর্থিক অবস্থা আরও সঙ্কটাপন্ন হয়ে উঠতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান জেরোমি পাওয়েল তো গত সপ্তাহে ঘোষণা দিয়েই বলেছেন, ওই দেশটি তিন ট্রিলিয়ন ডলারের যে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে, সেটা হয়তো পর্যাপ্ত হবে না। আরও প্রণোদনা লাগতে পারে। ফলে ঋণের বোঝা আরও বাড়বে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের।
রিসি সানকের প্রসঙ্গে ফিরে আসা যাক। তার ‘দুশ্চিন্তা না করার মন্তব্য’ আমাদের উদ্বেগও কিছুটা কমিয়েছিল। কিন্তু তার মন্তব্যের জের ধরে একটি প্রশ্ন সামনে আসলো, কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে আমাদের সরকার এই দুর্দিনে কেমন ঋণ করছে?
বাংলাদেশ ব্যাংকে তথ্য সংগ্রহের উৎস থেকে জানা গেল, মার্চের তৃতীয় সপ্তাহের পর থেকে সরকার কি পরিমাণ ঋণ কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে নিয়েছে, তার পরিপূর্ণ কোনো হিসাব তাদের কাছে নেই। অথচ স্বাভাবিক সময়ে (মার্চের ২৬ তারিখের আগে যখন লকডাউন ছিল না) প্রতি সপ্তাহে বিষয়টি নিয়ে হালনাগাদ প্রতিবেদন তৈরি করতো কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
ধারণা করা হলো, সরকার বোধহয় কোনো ধার নেয়নি এই দিনগুলোতে। কিন্তু সাংবাদিকের অনুসন্ধিৎসু মন। এরপর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সম্ভাব্য সব বিভাগে যোগাযোগ করা হলো। ফলাফল হলো, কেঁচো খুঁড়তে সাপ বের হওয়ার মতো। কারণ, সরকারের ব্যাংক ঋণ এই কদিনে ব্যাপকহারে বেড়েছে। কিন্তু, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে ১২ মে পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে চূড়ান্ত কোনো হিসাব নেই। চলতি বছরে সরকার ৭৮ হাজার ৩০০ কোটি টাকার ঋণ ইতোমধ্যে নিয়ে ফেলেছে, যা স্বাধীনতার পর থেকে এক বছরের হিসাবে সর্বোচ্চ। ঋণের এই অবয়ব সরকারের বাৎসরিক সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রাকেও অতিক্রান্ত করেছে। ওই লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭২ হাজার ৯৫১ কোটি টাকা।
যে বিভাগ থেকে এই তথ্য নেওয়া হলো, তারা কিন্তু সরকারের ব্যাংক ঋণের প্রতিবেদন তৈরি করার দায়িত্বপ্রাপ্ত নয়। ফলে যে তথ্য পাওয়া গেলো তা চূড়ান্ত কিছু নয়। এটা খসড়া তথ্য।
জানা গেল, চলমান লকডাউনের কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই প্রতিবেদন তৈরি করা বন্ধ করে দিয়েছে। এরপর নিয়মিত মাসিক বা ত্রৈমাসিক যেসব প্রতিবেদন কেন্দ্রীয় ব্যাংক তৈরি করে তার খোঁজ নেওয়া শুরু হলো। এখানে পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর। কারণ, জানুয়ারির পর থেকে দেশে কতো আমদানি হয়েছে এর কোনো হিসাব কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে নেই। বেসরকারিখাতে ঋণপ্রবাহ কেমন তা জানার চেষ্টা করা হলো। সেখানেও একই অবস্থা। এরপর দেশের বাণিজ্য ঘাটতি ও লেনদেন ভারসাম্য কেমন, তার খোঁজ নেওয়া হলো। পরিস্থিতি একই।
আমরা গত এপ্রিলে দেখেছি, দেশের রপ্তানি ব্যাপকভাবে কমেছে। ফলে, এর সঙ্গে আমদানির কি অবস্থা তা বের করা খুবই দরকার। এর মাধ্যমে বোঝা যাবে, বৈদেশিক বাণিজ্যে আগামীতে সঙ্কটে পড়তে যাচ্ছে কিনা দেশ।
এসবের মানে দাঁড়ায়, বাংলাদেশ এখন জানে না তার আমদানি ও বাণিজ্য ঘাটতি কতো। আমাদের বেসরকারিখাত এই মন্দার সময় আদৌ কোনো ঋণ নিচ্ছে কিনা। এই দেশ এখন জানে না, প্রান্তিক কৃষক বা ছোট-মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো (এসএমই) কেমন ঋণ নিচ্ছে।
এর চেয়ে ভয়াবহ বিষয় হচ্ছে, বাজারে এখন কি পরিমাণ টাকা আছে এরও কোনো হিসাব নেই। অথচ, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান কাজ হচ্ছে বাজারে টাকা সরবরাহ করা এবং প্রয়োজন মতো এর নিয়ন্ত্রণ করা। যাতে মূল্যস্ফীতি কোনো সঙ্কট তৈরি করতে না পারে। খবর নিয়ে জানা গেলো, ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাজারে টাকা সরবরাহের একটা হিসাব আছে, কিন্তু তা চূড়ান্ত তথ্য নয়।
এখন সরকারকে ঋণ দিতে গিয়ে এবং প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়ন করার জন্য ব্যাপকহারে রিজার্ভ মানি (আরএম) বা হাই-পাওয়ার্ড মানি বাজারে সরবরাহ করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এই আরএম হচ্ছে ছাপানো টাকা। অর্থনৈতিক পরিস্থিতি যখন স্বাভাবিক থাকে, তখন এই টাকা প্রায় পাঁচগুণ নতুন অর্থ তৈরি করতে পারে আমাদের বাজারে। এটাকে অর্থনীতির ভাষায় বলা হয় মানি মাল্টিপ্লায়ার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানে না তার মুদ্রার হালচাল এখন কেমন। ফলে মন্দাকালীন পরিস্থিতিতে কীভাবে তার মুদ্রানীতি কাজ করছে তাও জানে না প্রতিষ্ঠানটি। স্বাভাবিক সময়ে এসব বিষয়ের হালনাগাদ তথ্য পাঁচ-দশদিন দেরি হলে খুব একটা সমস্যা হয় না।
এসব প্রতিবেদন তৈরি করতে না পারার পেছনে যুক্তি হচ্ছে দেশে লকডাউন চলছে। কারণ, এসব তথ্যের সিংহভাগ বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আসে। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য বাণিজ্যিক ব্যাংকের পাঁচজন ব্যবস্থাপনা পরিচালককে ফোন দেওয়া হলো। তারা জানালেন, এসব তথ্য তাদের কাছে প্রস্তুত করা আছে। ব্যবসায়িক স্বার্থে সবসময় হাতের কাছে তাদের রাখতে হয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যুক্তির কারণে তাদের কথার উপর আস্থা রাখা গেল না। খবর নেওয়া হলো, গ্রাম পর্যায়ে ব্যাংকের ব্রাঞ্চগুলোতে। ওইখানের কর্মকর্তারা জানালেন, তাদের স্ব স্ব ব্যাংকের চালু থাকা ব্রাঞ্চের সব তথ্য প্রস্তুত করা আছে এবং তা প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়।
দুনিয়ার সব মন্দায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোই মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেয়। বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন তা-ই করছে। কেননা, মন্দার সময় প্রচুর নতুন অর্থ বাজারে সরবরাহ করতে হয়।
দ্য ডেইলি স্টারে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কীভাবে মন্দা মোকাবিলা করবে তা নিয়ে একাধিক পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ইতোপূর্বে। এর মধ্যে একাধিক পরামর্শ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। যেমন, কোয়ানটিটেটিভ ইজিং, ডিভিডেন্ড না দেওয়া, দীর্ঘ মেয়াদে রেপো ব্যবস্থা চালু করার পাশাপাশি আরও বেশ কিছু। এর জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংককে আমরা ধন্যবাদ জানিয়েছি।
জরুরি একটি পরামর্শ ছিল, মন্দা মোকাবিলা করার জন্য বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের মেধাবী কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি কার্যকর টিম গঠন করা। কিন্তু, কেন্দ্রীয় ব্যাংক তা করেনি। ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার (আরবিআই) উদাহরণও দ্য ডেইলি স্টারের প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছিল। বিশ্বব্যাংকের মতে, এই অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে ভারত সবচেয়ে কার্যকরভাবে মন্দা মোকাবিলা করছে।
আরবিআই-এর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের ১৫০ কর্মকর্তাকে প্রথমেই আলাদা করে ফেলা হয়েছে। এরপর তাদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে একটা আবাসিক হোটেলে। তাদেরকে এমনভাবে নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে, যাতে কোনোভাবেই তারা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত না হন। ওই হোটেলে বসেই তারা আরবিআই-এর কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক যদি এই ধরনের একটা টিম গঠন করতো তাহলে ভয়াবহ সমন্বয়হীনতার বর্তমান চিত্র তৈরি হতো না। এর মানে হচ্ছে, চলমান মন্দায় কাজ চালানোর জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোনো বিজনেস কন্টিনিউটি প্ল্যান নেই। অথচ, এই প্রতিষ্ঠানটি গত ১৯ মার্চ বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে এই ধরনের প্ল্যান বাস্তবায়নের নির্দেশ দেয়।
প্রশ্ন হচ্ছে, মন্দার সময় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এসব প্রতিবেদন কি গুরুত্ব বহন করে? প্রতিষ্ঠানটি ও সরকার এখন একাধিক উদ্যোগ নিয়েছে মন্দা মোকাবিলা করার জন্য। এই উদ্যোগগুলো কার্যকরভাবে আদৌ বাস্তবায়ন হচ্ছে কিনা তার চিত্র পাওয়া যাবে এসব অর্থনৈতিক ডেটায়। লকডাউন শুরু হওয়ার পর কেন্দ্রীয় ব্যাংক শত শত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। প্রতিষ্ঠানটি কি জানে এর কার্যকারিতা কেমন? দুনিয়ার অধিকাংশ কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন দৈনিক ভিত্তিতে এসব বিষয়ের উপর কঠোর নজরদারি করছে। কিন্তু, বাংলাদেশ ব্যাংক? অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, অন্ধকারে ঢিল ছুড়ছে।
ইন্টারন্যাশনাল মনিটরি ফান্ডের (আইএমএফ) কাছে আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই বাংলাদেশ সরকার ৭০০ মিলিয়ন ডলার ঋণের জন্য আবেদন করবে। এই তহবিল বাণিজ্য ঘাটতি নিরসনের জন্য ব্যবহার হবে। এই ঋণের আবেদন বিবেচনা করার জন্য বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতির কি অবস্থা তা নিশ্চিতভাবে খতিয়ে দেখবে আইএমএফ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েবসাইটে এ সংক্রান্ত রিপোর্টটি প্রথমেই বের করবে সংস্থাটি। কিন্তু, সেখানে জানুয়ারির পর আর কোনো তথ্য হালনাগাদ করা হয়নি। এই প্রক্রিয়ায় আইএমএফের কাছ থেকে ঋণ পাওয়া দুরূহ।
আমাদের সরকার আগামী অর্থবছরের জন্য জিডিপির প্রবৃদ্ধি আট দশমিক পাঁচ শতাংশ নির্ধারণ করেছে। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল আশা প্রকাশ করছেন, অর্থনীতিতে ভি-শ্যাপড রিকোভারি হবে, অর্থাৎ দ্রুত পুনরুদ্ধার হবে। কিন্তু, এর জন্য রীতিমতো বিপ্লব দরকার।
দুনিয়ার নামকরা অর্থনীতিবিদরা বলছেন, করোনাভাইরাসের টিকা আবিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত স্বাভাবিক গতি ফিরে পাওয়া অর্থনীতির জন্য চ্যালেঞ্জ। অনেকে বলছেন, অর্থনীতির পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া ইউ-শ্যাপড-এর মতো হবে। এতে ১২ থেকে ২৪ মাস সময় লাগে। আবার কেউ বলছেন, ডব্লিউ-শ্যাপড হবে। কেননা, বিভিন্ন দেশ এখন লকডাউন শিথিল করছে। ফলে অর্থনীতি কিছুটা মাত্রায় পুনরুদ্ধার হবে। কিন্তু, ভাইরাস যদি আবার ছড়ায়, নতুন করে ব্যবসা-বাণিজ্যের পতন শুরু হবে। ওই পরিস্থিতি থেকে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়া আরও জটিল হবে। আবার অর্থনীতিতে এল-শ্যাপড পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়াও আছে। যেটা সবচেয়ে খারাপ। এতে অনেক বছর লাগে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড স্বাভাবিক পর্যায়ে ফিরিয়ে আনতে। ১৯২৯-এর মহামন্দায় এই সমস্যাটি তৈরি হয়েছিল।
রিসি সানকের কথায় ফিরে আসা যাক। মার্চে ব্রিটেনের অর্থনীতি পাঁচ দশমিক আট শতাংশ সংকুচিত হয়েছে, যা মাসভিত্তিক হিসাবে ১৯৯৭ সালের পর সবচেয়ে বড় সংকোচন। মন্দা মোকাবিলায় দেশটি সব রকমের পদ্ধতি এখন ব্যবহার করছে। কিন্তু, বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রকৃত অবস্থা কি আমরা জানি?
দুনিয়ার কেউ এখন নিশ্চিতভাবে বলতে পারবে না অর্থনীতির পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া কোন শ্যাপড-এ হবে। কিন্তু, আমাদের কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে প্রক্রিয়ায় কাজ করছে, তাতে আশান্বিত হওয়া শুধু কঠিন নয়, প্রায় অসম্ভব।
লেখক: সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার, দ্য ডেইলি স্টার
Comments