যুক্তরাষ্ট্রের ২১ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে যুক্তি দিলো চীন

চীনের মধ্য হুবেই প্রদেশের উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি ভবন। ছবি: এএফপি

করোনাভাইরাস নিয়ে চীনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সমস্ত অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে পাল্টা যুক্তি দিয়েছে চীন।

চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদসংস্থা সিনহুয়া এ নিয়ে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর করোনাভাইরাস সংক্রান্ত সমস্ত অভিযোগ অসত্য বলে দাবি করা হয়।

সাউথ চায়না মর্ণিং পোস্ট জানায়, মহামারি নিয়ন্ত্রণে ভুল ব্যবস্থা, তথ্য গোপন ও উহানের ভাইরোলজি ল্যাবের সুরক্ষা নিয়ে অন্তত ২১টি অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে চীন।

রোববার, চীনের সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ডেইলিতে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজির পরিচালক ইউয়ান ঝিমিং ল্যাবের সুরক্ষা পদ্ধতি সম্পর্কে জানান। ল্যাব থেকে যাতে রোগ জীবাণু ছড়াতে না পারে সেজন্য ঋণাত্মক বায়ুচাপসহ অন্যান্য ব্যবস্থার জানান তিনি।

সিনহুয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে বিজ্ঞানীরা ভাইরাসটির উৎস নিয়ে অনুসন্ধান করছেন। ভাইরাসটির উৎস ও ভবিষ্যতে প্রতিরোধের উপায় জানতে চীনা বিজ্ঞানীরাও এ সম্পর্কিত গবেষণা শুরু করেছেন।

উহান ল্যাবে নতুন করোনাভাইরাসটি তৈরির অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে প্রতিবেদনটি বলছে, বৈজ্ঞানিক যাচাই-বাছাইয়ের ভিত্তিতে বলা যায় এটি মানবসৃষ্ট নয়। দুর্ঘটনাক্রমে ল্যাব থেকে ছড়ানোর প্রশ্নই আসে না।

উহানের ভাইরোলজি ল্যাবটি ফ্রান্সের সঙ্গে যৌথ উদ্যেগে নির্মিত। সেখানকার কর্মীরা যুক্তরাষ্ট্রে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।

প্রতিবেদনটি বলছে, উহান ভাইরোলজি ল্যাবটিতে উন্নতমানের বায়ো-সিকিউরিটি আছে। শুরু থেকেই ল্যাবটি নিরাপদ ও অবিচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছে। গত ৩০ ডিসেম্বর নতুন ভাইরাসটির নমুনা পরীক্ষার জন্য সেটিকে উহান ল্যাবে আনা হয়েছিল। এর আগে ল্যাবের কেউ এ ভাইরাসের অস্তিত্ব সম্পর্কে জানতো না। তখন পর্যন্ত ল্যাবের কোনো কর্মী আক্রান্তও হননি।

করোনাভাইরাসের উৎস তদন্তের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন পক্ষ থেকে বেইজিংয়কে আহ্বান জানানো হয়েছে। অনেকে ক্ষতিপূরণও দাবি করেছেন।

এ প্রসঙ্গে সিনহুয়া জানায়, বিজ্ঞানীরা ভাইরাসটির উৎপত্তি নিয়ে এখনো অনুসন্ধান করছেন। উহানে প্রথম এই ভাইরাসে আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে তার অর্থ এই নয় যে, উহানই ভাইরাসটির উৎপত্তিস্থল। যুক্তরাষ্ট্রে শনাক্ত হওয়া এইচআইভি ভাইরাসের সঙ্গে এটির তুলনা করা হয়।

সিনহুয়ার প্রতিবেদনটিতে যুক্তরাষ্ট্রের ২১টি অভিযোগ নিয়ে পাল্টা যুক্তি দেওয়া হয়েছে। গত ২৩ জানুয়ারি চীনে লকডাউনের সিদ্ধান্ত ভাইরাসটির ভয়াবহতা সম্পর্কে বিশ্বের কাছে একটি জোরালো সর্তকবার্তা ছিল বলে দাবি করা হয়েছে।

অন্যদিকে, ক্ষতিপূরণ দাবির কোনো আইনগত ভিত্তি নেই উল্লেখ করে বলা হয়েছে, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে জনস্বাস্থ্য বিষয়ক কোনো চুক্তি কখনো হয়নি।

দুই দেশের মধ্যে চিরাচরিত দ্বন্দ্বের কারণেই চীনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র শুরু থেকেই অভিযোগ তুলছে বলে মনে করেন পর্যবেক্ষকরা। অভিযোগের বিপরীতে চীনও সবসময় পালটা যুক্তি দিয়েছে। এমনকী গণমাধ্যমে মার্কিন নেতাদের ব্যক্তিগত আক্রমণও করা হয়েছে। পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, চীনের এই ধরনের প্রবণতার কারণে দুই দেশের সম্পর্ক ভালোর দিকে এগুনোর সুযোগ হারাচ্ছে। ভবিষ্যতে এই দুই পরাশক্তির মধ্যকার সম্পর্কে আরও অবনতি ঘটবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

Comments

The Daily Star  | English
Exporters to get Tk 108.5 for a dollar from Aug 1

Taka gains against dollar after years

Taka gains ground as dollar influx rises, strengthening currency after years

54m ago