করোনাভাইরাস: উহানের ভাইরোলজিস্টের পালানোর গুজব

উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজির ল্যাবে কর্মরত গবেষকরা। ছবি: সংগৃহীত

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর থেকেই উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি (ডব্লিউআইভি) আলোচনার কেন্দ্রে আসে। চীনের শীর্ষ ভাইরোলজিস্ট শি জেংলির গবেষণাকে ঘিরে নানা ষড়যন্ত্র-তত্ত্বের জন্ম হয়েছে।

সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট জানায়, ডব্লিউআইভিতে বাদুড় থেকে আসা করোনাভাইরাস নিয়ে গবেষণা করতেন শি জেংলি। ২০০২-০৩ সালে ছড়িয়ে পড়া সার্স ভাইরাস যে প্রাকৃতিকভাবে প্যাথোজেনের মাধ্যমে ছড়িয়েছে সেটি আবিস্কার করেছিলেন বিখ্যাত এই গবেষক।

তার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের গুজব ছড়িয়েছে। গুঞ্জন উঠেছে, ডব্লিউআইভির গোপন নথিপত্র দেশের বাইরে পাচার করেছেন শি। এরপর পরিবার নিয়ে প্যারিসে মার্কিন দূতাবাসে আশ্রয় চেয়েছেন।

গত শনিবার এসব গুজব উড়িয়ে দিয়েছেন শি। উইচ্যাটে তিনি লিখেন, তিনি ও তার পরিবার চীন থেকে পালিয়ে যাননি। তিনি বলেন, ‘যত কঠিন পরিস্থিতিই হোক না কেন দেশ থেকে পালানোর প্রশ্নই উঠে না। আমরা কোনো ভুল করিনি। বিজ্ঞানের উপর আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস আছে। এই দুঃসময়ের মেঘ এক সময় কেটে যাবে, সূর্যের আলো আসবেই।’

চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদপত্র গ্লোবাল টাইমস জানায়, শি তার ওই পোস্টের সত্যতা নিশ্চিত করেছে।

ডব্লিউআইভিতে তার গবেষণা ও কাজ নিয়ে ব্যাপক জল্পনা-কল্পনা তৈরি হয়েছে। গত বছর উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া নতুন করোনাভাইরাসের সঙ্গে বাদুড় নিয়ে গবেষণার সংযোগ থাকার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে গবেষণা সংস্থাটি।

ফেব্রুয়ারিতে শি ল্যাব থেকে ভাইরাসটি ছড়ানোর অভিযোগ অস্বীকার করেন। উইচ্যাটে তিনি বলেন, ‘আমি জীবন বাজি রেখে বলতে পারি এটা ল্যাব থেকে ছড়ায়নি।’

পশ্চিমের অনেক বিজ্ঞানীও বিশ্বাস করেন, প্রাণী থেকেই (সম্ভবত বাদুড়) মানবদেহে ভাইরাসটি ছড়িয়েছে। ল্যাব থেকে দুর্ঘটনাবশত ভাইরাসটি ছড়ানোর সম্ভাবনা কম এবং এটি জিনগত রূপান্তরের মাধ্যমে সৃষ্টি করা প্রায় অসম্ভব।

ভাইরাসটির প্রকৃত উৎস এখনও অজানা। চীন বলছে, এ নিয়ে তদন্ত চলছে।

এদিকে, করোনাভাইরাসের উৎপত্তি নিয়ে শুরু থেকেই পরষ্পরকে দুষছে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র। গত ফেব্রুয়ারিতে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, ‘উহানে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দেওয়া মার্কিন সেনারা ভাইরাসটি চীনে নিয়ে আসতে পারে।’

নতুন করোনাভাইরাস নিয়ে শুরু থেকেই চীনকে দোষারোপ করে আসছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত বৃহস্পতিবার তিনি আবারও মহামারির জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ও চীনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। চীনের ল্যাব থেকেই ভাইরাসটির উৎপত্তির ব্যাপারে তিনি অত্যন্ত আত্মবিশ্বাসী, এমন মত প্রকাশ করেছেন।

এদিকে, ভাইরাসটি উৎস খুঁজে বের করতে আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও অস্ট্রেলিয়া। গত শুক্রবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, কোন প্রাণী থেকে ভাইরাসটি ছড়িয়েছে তা খুঁজে পেতে সংস্থাটি আন্তর্জাতিক তদন্তে অংশ নেবে।

Comments

The Daily Star  | English
Binimoy platform suspended by Bangladesh Bank

BB suspends Binimoy over irregularities

During the previous AL govt, it was developed by the IDEA under the ICT Division at a cost of Tk 65 crore.

10h ago