একই সময়ে পৃথিবীর দুই প্রান্তে টেস্ট খেলেছিল ইংল্যান্ড

 Frederick Calthorpe and Harold Gilligan
ফ্রেডি কার্লথর্প ও হ্যারল্ড গ্যালিসন। ১৯৩০ সালে তাদের নেতৃত্বেই একই সময়ে দুই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে টেস্ট খেলেছিল ইংল্যান্ড। ফাইল ছবি: সংগ্রহ

একই দল পৃথিবীর দুই প্রান্তে আলাদা দুই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে একই সময়ে টেস্ট খেলেছিল। শুনতে অবাক লাগছে? লাগবারই কথা। তবে এক্ষেত্রে একই দল বলা যাবে কিনা তর্কসাপেক্ষ ব্যাপার। কারণ স্কোয়াড তো ছিল স্বাভাবিক কারণেই ভিন্ন। ইংল্যান্ডই তাদের দুটি দল বানিয়ে একই সময়ে টেস্ট খেলেছিল নিউজিল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। সেই ১৯৩০ সালের ঘটনা।

করোনাভাইরাসের কারণে বর্তমানে গোটা পৃথিবী থমকে আছে। খেলাধুলা সব বন্ধ। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের অনেকগুলো সিরিজ বাতিল হওয়ায় ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড ভাবছে এই সংকট কাটলে তারা দুই ফরম্যাটে আলাদা দল বানিয়ে একই সময়ে দুই ম্যাচ খেলবে। তাতে সামলানো যাবে সূচি জট।  

অভিনব এই চিন্তা এরমধ্যেই হয়েছে আলোচিত। কিন্তু ইংল্যান্ড এই কাজ করেছে যে ৯০ বছর আগেও। তখন তো ক্রিকেটে একটাই ফরম্যাট- টেস্ট। তাতেও একই সময়ে দুই ম্যাচ খেলে ফেলেছিল তারা। তাও এমন ঘটনা একবার নয়। এক সিরিজে দুবার ঘটিয়েছে ইংলিশরা। 

১৯৩০ সালের জানুয়ারি মাসে ফ্রেডি কার্লথর্পের নেতৃত্বে ওয়েস্ট ইন্ডিজে টেস্ট খেলতে যায় ইংল্যান্ড। ১৩ হাজার কিলোমিটার দূরে হ্যারল্ড গ্যালিসনের নেতৃত্বে ইংল্যান্ডের আরেক দল টেস্ট খেলতে গিয়েছিল নিউজিল্যান্ডে। দুটো দলই খেলেছিল স্বীকৃত টেস্ট ম্যাচ এবং সবচেয়ে বড় কথা একই সময়ে। বিস্ময়কর এই ঘটনা ঘটে ইতিহাসে একবারই। 

জানুয়ারি মাসে ১১ তারিখ বার্বাডোসের ব্রিজটাউনে শুরু হয়েছিল ইংল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজের টেস্ট। সে টেস্ট হয় ড্র। টেস্টের দ্বিতীয় দিন ১২ জানুয়ারি ছিল বিরতি। ছয় দিনের মাথায় ম্যাচ তাই শেষ হয় ১৬ জানুয়ারি।   নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে ১০ জানুয়ারি শুরু হয়েছিল ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ডের অন্য টেস্ট। চারদিনে সে টেস্ট ইংল্যান্ড জিতে যায় ৮ উইকেটে। অর্থাৎ ১৯৩০ সালের ১১ ও ১৩ জানুয়ারি পৃথিবীর দুই প্রান্তে ইংল্যান্ডের জাতীয় পুরুষ ক্রিকেট দল আলাদা দুই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে মাঠে লড়ছিল। 

পরের মাসেই দেখা যায় একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। জর্জটাউনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ইংল্যান্ড সিরিজের তৃতীয় টেস্ট খেলতে নামে ফেব্রুয়ারির ২১ তারিখ। একই দিনে আবার অকল্যান্ডে নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি থ্রি লায়ন্সরা। জর্জটাউনে ক্যারিবিয়ানদের কাছে টেস্টে ২৮৯ রানে হেরেছিল ইংল্যান্ড। সে টেস্টের তৃতীয় দিন ছিল বিরতি। ম্যাচে ব্যাপ্তি তাই হয় ছয় দিন। 

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের চতুর্থ টেস্টের ব্যাপ্তি মাঝে একদিন বিরতি দিয়ে ছিল চারদিনের। সে টেস্ট হয় ড্র। অর্থাৎ ২১, ২২ ও ২৪ ফেব্রুয়ারি আবার ইংল্যান্ডের জাতীয় ক্রিকেট দলকে একই সময়ে পৃথিবীর দুই প্রান্তের দুই মাঠে ভিন্ন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে লড়তে দেখা যায়। 

একই সময়ে দুটো দেশে ট্যুর করার কারণও বেশ মজার। বর্তমানের পেশাদার ক্রিকেটে যা বেশ অচেনা। তখন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও নিউজিল্যান্ড নতুন টেস্ট মর্যাদা পেয়েছে। অভিজাত ক্রিকেটের নবাগত দুই সদস্যকে খেলার সুযোগ করে দিতেই ইংল্যান্ড নিয়েছিল এমন উদ্যোগ! হালের ক্রিকেটে এমন উদারতার কথা ভাবাই দুষ্কর।

 

Comments

The Daily Star  | English

BNP proposes term limit for PM, reinstating caretaker government

The party presented 62 proposals to the Constitution Reform Commission

2h ago